ফেসবুকে ভয়ঙ্কর ক্ষতি, আনা হচ্ছে প্রতিকার

ফেসবুকে ভয়ঙ্কর ক্ষতি, আনা হচ্ছে প্রতিকার

কখনো ডিপ্রেশন, কখনো মানসিক অস্থিরতা, কখনো লোক দেখানোর দৌড়ে পিছিয়ে পড়ার ভয়! নিয়মিত ফেসবুকের মতো সোশ্যাল সাইটে যাদের অবাধ আনাগোনা, তাদের মধ্যে এই ধরনের প্রবণতা প্রায়ই দেখা যায়। এছাড়াও ফেসবুকে আসক্তদের মধ্যে মনঃসংযোগের অভাব, মিথ্যা কথা লিখে নিজেকে জাহির করার মতো প্রবণতাও নতুন নয়। কিন্তু সবচেয়ে বড় কথা হলো, এতদিন এসব নিয়ে মুখ না খুললেও এবার খোদ ফেসবুক কর্তৃপক্ষই স্বীকার করে নিলো, বেশিক্ষণ ফেসবুকে থাকলে একজন পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তি মানসিক অবসাদে ভুগতে পারেন।

একটি ব্লগে গত শুক্রবার ফেসবুকের গবেষকরা জানতে চান, সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশিক্ষণ সময় কাটানো কি খারাপ? এই প্রশ্নের কোনো সুনির্দিষ্ট উত্তর না দিলেও শীর্ষস্থানীয় সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সংস্থাটি হাবেভাবে বুঝিয়ে দিচ্ছে যে তারাও বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত।

সংস্থার সহ-প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গের ইঙ্গিত, তিনি আরো খানিকটা সময় চান এই নিয়ে গবেষণার জন্য। আর এরপরই বোমাটি ফাটিয়েছে ফেসবুক। তারা এখন একটি ‘মিউট’ বোতাম নিয়ে দীর্ঘ গবেষণা চালাচ্ছেন। কী কাজ এই বোতামের? এই বোতাম একবার টিপলে আগামী ৩০ দিনের জন্য আপনার ফেসবুক অচল হয়ে যাবে। সাইলেন্ট হয়ে যাবে। ফলে কোনো নোটিফিকেশন বা মেসেজ আসবে না।

কেন এরকম পদক্ষেপ করল ফেসবুক? এতে তো আখেরে তাদের ব্যবসারই ক্ষতি।

আসলে সম্প্রতি একগুচ্ছ বিশিষ্ট মানুষ ও ফেসবুকের সাবেক কর্মীরা অভিযোগ তুলেছেন, অপরিচিতদের কাছাকাছি আনতে গিয়ে পরিচিতদের দূরে ঠেলে দিচ্ছে ফেসবুক। মানুষ এখন লোক দেখানো সম্পর্কে বিশ্বাসী হয়ে পড়েছেন। ভেঙে যাচ্ছে সমাজের বুনোট। ছিঁড়ে যাচ্ছে আত্মীয়তা। ‘লাইক’ পাওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা মানুষকে ক্রমশ মেকি করে তুলছে। ফেসবুকে তাৎক্ষণিক জনপ্রিয়তা পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা সাধারণ মানুষের রাতের ঘুম কেড়ে নিচ্ছে। বদলে যাচ্ছে মানুষের সাইকোলজি, বলছেন সাবেক ফেসবুকের শীর্ষ কর্তা কামাথ পালিহাপতিয়া। আর এক সাবেক কর্তা শন পার্কার বলছেন, লাইক পাওয়ার জন্য শারীরিক সৌন্দর্যকে ব্যবহার করা হচ্ছে, যৌন উসকানি দেয়া হচ্ছে। এভাবে চলতে পারে না। ফেসবুক কারো ব্যক্তিগত সম্পর্ককেও প্রভাবিত করতে বলে মতপ্রকাশ করেছেন তিনি।

প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েই কি অবশেষে আত্মসমালোচনায় ফেসবুক? ইঙ্গিত কিন্তু তেমনটাই। মিউট বোতাম এনে একটানা ৩০ দিন ফেসবুক থেকে দূরে থাকার সুযোগ আনছেন খোদ সংস্থার কর্তারাই। তাহলে এবার আপনিও নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিন। সচেতনভাবে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট ব্যবহার করুন ও সুস্থ থাকুন।