শ্রীদেবী খাঁচায় বন্দি পাখির জীবন কাটিয়েছেন, জানুন বিস্তারিত

শ্রীদেবী খাঁচায় বন্দি পাখির জীবন কাটিয়েছেন, জানুন বিস্তারিত

খাঁচায় বন্দি পাখির জীবন কাটিয়েছেন প্রয়াত ভারতীয় অভিনেত্রী শ্রীদেবী। এমনই বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন বলিউড পরিচালক রাম গোপাল ভর্মা।

মঙ্গলবার ফেসবুকে শ্রীদেবীর ভক্তদের উদ্দেশে লেখা একটি খোলা চিঠিতে তিনি দাবি করেছেন ছোটবেলা থেকেই জীবনে নানা কষ্ট এবং পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছিল শ্রীদেবীকে। শেষেরদিকে, ইংলিশ ভিংলিশের সাফল্য তাঁর জীবনে সাময়িক আনন্দের মুহূর্ত নিয়ে আসলেও শ্রীদেবী আদতে খুবই দুঃখী ছিলেন। ভবিষ্যত্‍ নিয়ে তাঁর মধ্যে সব সময়ে উৎকন্ঠা থাকত। ব্যক্তিগত জীবনেও তিনি এতবার ক্ষতবিক্ষত হয়েছেন যে মানসিকভাবে কোনোদিন শান্তি পাননি।

আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বলে, জীবনে শুধুমাত্র ক্যামেরার সামনে কাটানো সময়টুকুই ছিল তাঁর কাছে সবচেয়ে সুখের। ওই সময়টুকুর জন্যে তিনি কঠিন বাস্তব থেকে সরে নিজের স্বপ্নের দুনিয়ায় বিচরণ করতেন।

তাঁর পোস্টে রাম গোপাল ভর্মা বলেছেন, সারা পৃথিবী হয়তো মনে করে প্রত্যেক তারকার জীবন পিকচার পারফেক্ট। কিন্তু শ্রীদেবীর জীবনই হল সেই আদর্শ উদাহরণ, যেখানে চাকচিক্যে ভরা জীবনের আড়ালে থেকে যায় অনেকখানি অন্ধকার।

‘অনেকের কাছেই শ্রীদেবীর জীবন পারফেক্ট ছিল। তিনি সুন্দরী, অসম্ভব প্রতিভাবান, দুই সুন্দরী মেয়ের মা, সুখের সংসার। বাইরে থেকে দেখলে হিংসে হতেই পারে। কিন্তু সত্যিই কি তিনি এতটাই সুখী ছিলেন। না, ছিলেন না। আমার নিজের চোখে দেখা তাঁর জীবন। সেই থেকেই বলছি। বাবার মৃত্যুর আগে পর্যন্ত তিনি স্বাধীন হয়ে আকাশে উড়ে বেড়াতেন। কিন্তু বাবার মৃত্যুর পরেই সব বদলে যায়। যেন খাঁচার মধ্যে বন্দি হয়ে যায় তাঁর জীবন।’

রাম গোপাল বলেন সেসময় অভিনেতাদেরকে বেশিরভাগই কালো টাকায় বেতন দেওয়া হত। ফলে শ্রীদেবীর বাবা ‘ট্যাক্স রেইড’ এর ভয়ে তার বন্ধুদের কাছে শ্রীদেবীর টাকা জমা রাখতেন। কিন্তু তার বাবা মারা যাওয়ার পর বাবার বন্ধুরা শ্রীদেবীর সঙ্গে প্রতারণা করে।

আর তার দায়িত্বজ্ঞানহীন মা লিটিগেটেড প্রপার্টি-তে প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ করে লোকসানের শিকার হন। যা শ্রীদেবীকে ফতুর করে দিয়েছিল। আর এই কপর্দকশুন্য অবস্থায়ই তার জীবনে বনি কাপুরের আগমণ ঘটে।

রামগোপালের দাবি বনি কাপুরের সঙ্গে তাঁর যখন আলাপ হয় তখন আর্থিক দিক থেকে তিনি প্রায় নিঃস্ব। বনি কাপুরের নিজের অবস্থাও ভালো ছিল না। শ্রীদেবীকে দেওয়ার মতো তাঁর কাছেও বিশেষ কিছুই ছিল না।

বোনের সঙ্গেও তৈরি হয়েছিল তিক্ততা। শ্রীদেবীর মাকে মস্তিষ্কের টিউমারের চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে নেওয়া হলে ভুল চিকিৎসায় পরে তিনি মানসিক রোগী হয়ে যান। এসময় তার বোন শ্রীলতা পাশের বাড়ির ছেলের সঙ্গে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে। মৃত্যুর আগে তার মা তাকে সব সম্পদ লিখে দিয়ে যান। কিন্তু এতে তার বোন ক্ষুব্ধ হয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দেন।

 

তার শাশুড়িও তাকে পছন্দ করতেন না। একবারতো তার শাশুড়ি জনসম্মুখেই তার ওপর চড়াও হয়। এবং তার পেটে কিল-ঘুষি মারতে থাকে।

এখানেই শেষ নয়। নিজের সৌন্দর্য ধরে রাখার অদম্য বাসনা থেকে বার বার কসমেটিক সার্জারি করিয়েছেন তিনি।

নিজের চারপাশে এক অদৃশ্য দেওয়াল তুলে রেখেছিলেন শ্রীদেবী। একাকীত্বকে কারও সামনে প্রকাশ করতেও চাইতেন না প্রয়াত এই অভিনেত্রী।

‘নারীর শরীরে বন্দি ছিল এক শিশুর মন।’