প্রোফাইলঃ ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো

প্রোফাইলঃ ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো

ব্যক্তিগত তথ্য :

 

পূর্ণ নাম :ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো দস স্যান্তোস এভেইরো

 

জন্ম : ৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৫ (বয়স ২৯)

 

জন্ম স্থান : ফুঞ্চাল, মাদেইরা, পর্তুগাল

 

উচ্চতা :১৮৬ সেমি (৬ ফু ১ ইঞ্চি)

 

পজিশন : উইংগার, ফরোয়ার্ড

 

ক্লাবের তথ্য :

 

বর্তমান ক্লাব : রিয়াল মাদ্রিদ

জার্সি নম্বর :৭

 

জুুনিয়র লেভেল ক্লাব :

 

১৯৯৩–১৯৯৫এডরিনহা

 

১৯৯৫–১৯৯৭ন্যাশিওনাল

 

১৯৯৭–২০০২স্পোর্টিং সিপি

 

সিনিয়র লেভেল ক্লাব :

 

স্পোর্টিং সিপি- ২০০২–২০০৩

ম্যাচ :২৫

গোল : ৩

 

ম্যানচেষ্টার ইউনাইটেড- ২০০৩-২০০৯

ম্যচ : ১৯৬

গোল : ৮৪

 

রিয়াল মাদ্রিদ- ২০০৯- চলমান

ম্যাচ : ২৭৪

গোল : ২৮৫

 

পর্তুগাল অনুর্ধ্ধ লেভেল :

অনুর্ধ্ধ-১৭ : (২০০১-২০০২)

ম্যাচ : ৯

গোল : ৬

 

অনুর্ধ্ধ-২০ : (২০০২-২০০৩)

ম্যাচ : ৫

গোল : ৩

 

অনুর্ধ্ধ-২১ : (২০০৩)

ম্যাচ : ৬

গোল : ১

 

অনুর্ধ্ধ-২৩ : (২০০৪)

ম্যাচ : ৬

গোল : ১

 

পর্তুগাল জাতীয় দল : ২০০৩- চলমান

ম্যাচ : ১১৮

গোল : ৫২

 

জীবনী

তিনি পর্তুগালের মাদেইরাতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা জোসে দিনিস আভেইরো ও মা মারিয়া ডোলোরেস দস সান্তোস আভেইরো। বড় ভাই হুগো এবং বড় দুই বোন এলমা ও কাতিয়ার সাথে তিনি বেড়ে উঠেছেন। কাতিয়া পর্তুগালের একজন গায়িকা। মঞ্চে তিনি "রোনাল্ডা" নামে গান করেন। তার মার পরিবারের নাম দস্ সান্তোস এবং বাবার পরিবারের নাম আভেইরো।

রোনালদোর নামটি পর্তুগালে সচরাচর দেখা যায় না। তার বাবা-মা আমেরিকান রাষ্ট্রপতি রোনাল্ড রেগানের সাথে মিলিয়ে এ নাম রাখেন।

 

ব্যক্তিগত জীবন:

 

২০০৫ সালের অক্টোবরে রোনালদো ও আরেকজনকে পুলিশ যৌন নিপীড়নের দায়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। রোনালদো অভিযোগ অস্বীকার করেন। পুলিশ পরে যথেষ্ট প্রমাণের অভাবে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেনি।

 

রোনালদো অনেক দাতব্য কর্মকান্ডের সাথে সম্পৃক্ত থেকেছেন। ২০০৫ সালের জুনে তিনি মার্তুনিস নামে এক ১১ বছর বয়সী সুনামি থেকে বেঁচে যাওয়া ইন্দোনেশিয়ান ও তার বাবাকে বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব দেখার সুযোগ করে দেন, যার সম্পূর্ণ খরচ তিনি নিজে বহন করেন। পরে সব খেলোয়াড়েরা মিলে তার জন্য ইন্দোনেশিয়ায় একটি বাড়ি কিনতে সাহায্য করেন।

 

২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে ক্রিস্টিয়ানো তার নিজ শহরে "সিআর৭" নামে একটি ফ্যাশন স্টোর স্থাপন করেন। তার বোনেরা এটির দেখাশোনা করেন

 

দুটি বিশ্বকাপ বাছাই খেলার পর রোনালদো ইন্দোনেশিয়ায় যান। তিনি সেখানকার সুনামিদুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেন এবং অর্থ-সাহায্য তুলতে অংশ নেন। তিনি ইন্দোনেশিয়ার উপ-রাষ্ট্রপতি জুসুফ কাল্লা ও পূর্ব টিমোরের রাষ্ট্রপতি জানানা গুসমাওর সাথে দেখা করেন এবং তার নিজস্ব খেলার সরঞ্জামাদির নিলাম করে ৬৬,০০০ পাউন্ড সংগ্রহ করেন।

 

ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো দস স্যান্তোস এভেইরো, (পর্তুগিজ উচ্চারণ: [kɾɨʃtiˈɐnu ʁuˈnaɫdu]) (জন্ম ৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৫), যিনি ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো নামে পরিচিত, একজন পর্তুগিজ ফুটবলার যিনি স্পেনীয় ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ এবং পর্তুগাল জাতীয় দলে একজন ফরোয়ার্ড হিসেবে খেলে থাকেন। ২০০৯ সালে রিয়াল মাদ্রিদ তাঁকে £৮০ মিলিয়ন (€৯৪ মিলিয়ন/$১৩১.৬ মিলিয়ন) এর বিনিময়ে ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে তাদের দলে নিয়ে আসে যার ফলে রোনালদো ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে দামী খেলোয়াড়ের সম্মান পান।

 

রোনালদো, রিয়াল মাদ্রিদের সাথে চুক্তি অনুসারে প্রতি বছর €২১ মিলিয়ন বেতন পান (কর ব্যতীত), যার ফলে তিনি সারা বিশ্বে সর্বোচ্চ বেতনভুক্ত খেলোয়াড়। তার বাইআউট ক্লসের মূল্য €১ বিলিয়ন। অনেক ধারাভাষ্যকার , কোচ,সাবেক খেলোয়াড় ও সাংবাদিকদের মতে তিনি বতর্মান বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় ও সর্বকালের সেরা ফুটবলারদের একজন |

 

রোনালদো এডরিনহার হয়ে তার যুব ক্যারিয়ার শুরু করেন এবং ন্যাশিওনালে যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত সেখানে তিনি ২ বছর খেলেন। ১৯৯৭ সালে রোনালদো স্প্যানিশ জায়ান্ট স্পোর্টিং সিপিতে আসেন। স্পোর্টিং সিপির হয়ে খেলার সময় রোনালদো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ম্যানেজার স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সমর্থ হন, যিনি তাঁকে ২০০৩ সালে £১২.২৪ মিলিয়ন (€১৫ মিলিওন) এর বিনিময়ে ইউনাইটেডে নিয়ে আসে। ২০০৪ সালে রোনালদো ইউনাইটেডের হয়ে প্রথম ট্রফি, এফএ কাপ জেতেন।

রোনালদো ইংল্যান্ডে খেলা প্রথম খেলোয়াড় যিনি প্রধান ৪টি পিএফএ এবং এফডব্লিউএ পুরস্কার জিতেছেন, যা তিনি ২০০৭ সালে করেছেন। রোনালদো ২০০৮,২০১৩ ও ২০১৪ সালে সারা বিশ্বে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার ব্যালন ডি'অর জিতেছেন। তিনিই একমাত্র পর্তুগিজ যিনি এই পুরস্কার ৩ বার জিতেছেন। তিনি ২০০৭ ও ২০০৯ সালে বালোঁ দ’অর এবং ২০১১ ও ২০১২ সালে ফিফা ব্যালন ডি'অর ২য় স্থান লাভ করেন। তিনি ২০০৮ ও ২০১১ সালে ইউরোপিয়ান গোল্ডেন শু পুরস্কার লাভ করেন।২০০৮ সালে তিনি ৪টি প্রধান পিএফএ এবং এফডব্লিউএ ট্রফির মধ্যে ৩টি জেতেন এবং ফিফা ওয়ার্ল্ড প্লেয়ার অফ দ্যা ইয়ার, ফিফপ্রো প্লেয়ার অফ দ্যা ইয়ার, ওয়ার্ল্ড সকার প্লেয়ার অফ দ্যা ইয়ার এবং ওনজে দ’অর অ্যাওয়ার্ড জেতেন। ২০০৭ ও ২০০৮ সালে রোনালদোকে এফডব্লিউএ প্লেয়ার অফ দ্যা ইয়ার ঘোষণা দেয়া হয়। রোনালদো ২০০৯ সালে সেরা গোলের জন্য প্রথম পুস্কাস অ্যাওয়ার্ড জেতেন।

 

রোনালদো শীর্ষ ইউরোপিয়ান লীগগুলোর মধ্যে প্রথম খেলোয়াড় যিনি পর পর দুই মৌসুমে ৪০ গোল করেছেন, রিয়াল মাদ্রিদের খেলোয়াড়দের মধ্যে সবচেয়ে কম সময়ে ১০০ লীগ গোল করেছেন এবং তিনিই প্রথম খেলোয়াড় যিনি লা লিগায় প্রত্যেক দলের বিরুদ্ধে গোল করেছেন। এছাড়াও তিনি রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে এক মৌসুমে সর্বোচ্চ গোল ও লা লিগায় মিনিট প্রতি সর্বোচ্চ গোল করার রেকর্ডের অধিকারী। ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসে তিনি তার ৩০০তম ক্লাব গোল পূর্ণ করেন। ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসে তিনি তার ক্যারিয়ারের ৪০০তম গোল করেন।[১২] রোনালদোই একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে ১ থেকে ৯০ প্রত্যেক মিনিটেই গোল করার কৃতিত্ব অর্জন করেন।

 

রোনালদো পর্তুগাল জাতীয় দলের হয়ে খেলেন, যাদের হয়ে ২০০৩ সালের আগস্ট মাসে কাজাকিস্তানের বিরুদ্ধে তার অভিষেক ঘটে। তিনি জাতীয় দলের হয়ে ১০০ এর অধিক ম্যাচ খেলেছেন এবং তিনি পর্তুগালের হয়ে সর্বোচ্চ গোলের অধিকারী। তিনি পর্তুগালের হয়ে প্রধান ৫টি টুর্নামেন্ট; ২০০৪ উয়েফা ইউরো, ২০০৬ ফিফা বিশ্বকাপ, ২০০৮ উয়েফা ইউরো, ২০১০ ফিফা বিশ্বকাপ এবং ২০১২ উয়েফা ইউরোতে অংশগ্রহণ করেছেন। ২০০৪ সালের উয়েফা ইউরোর প্রথম খেলায়, গ্রিসের বিরুদ্ধে তিনি তার প্রথম আন্তর্জাতিক গোল করেন। ২০০৮ সালের জুলাই মাসে পর্তুগালের অধিনায়ক হন এবং ২০১২ সালের উয়েফা ইউরোতে অধিনায়ক হিসেবে দলকে সেমি-ফাইনালে নিয়ে যান এবং প্রতিযোগিতায় সর্বোচ্চ গোল করেন।

 

তিনি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে ঐতিহ্যবাহী ৭নং জার্সি পড়ে খেলতেন, যা পুর্বে জর্জ বেস্ট, এরিক ক্যান্তনা এবং ডেভিড বেকহ্যামের মত তারকারা পড়তেন। রিয়াল মাদ্রিদে প্রথম বছর তিনি ৯ নং জার্সি নিয়ে খেলেন। রিয়াল মাদ্রিদ লিজেন্ড রাউলের ক্লাব ছাড়ার পর রোনালদো ৭ নং জার্সি লাভ করেন এবং এখন পর্যন্ত সেটি পড়েই খেলছেন।

 

অর্জন ক্লাব:

 

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড

প্রিমিয়ার লীগ (৩): ২০০৬-০৭, ২০০৭-০৮, ২০০৮-০৯

এফএ কাপ (১): ২০০৩-০৪; রানার-আপ (২): ২০০৪-০৫, ২০০৬-০৭

ফুটবল লীগ কাপ (২): ২০০৫-০৬, ২০০৮-০৯

এফএ কমিউনিটি শিল্ড (১): ২০০৭

উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ (১):২০০৭-০৮; রানার-আপ (১): ২০০৮-০৯

ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ (১): ২০০৮

রিয়াল মাদ্রিদ

লা লিগা (১): ২০১১-১২

কোপা দেল রে (২): ২০১০-১১, ২০১৩-১৪; রানার-আপ (১): ২০১২-১৩

সুপারকাপ দে স্পানা (১): ২০১২; রানার আপ (১): ২০১১

উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ (১):২০১৩-১৪

উয়েফা সুপার কাপ (১):২০১৪

ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ (১): ২০১৪

অর্জন পর্তুগাল :

ফিফা বিশ্বকাপ:

চতুর্থ স্থান (১): ২০০৬

উয়েফা ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ:

রানার-আপ (১): ২০০৪ব্রোঞ্জ (১): ২০১২

 

অর্জন ব্যাক্তিগত :

উয়েফা চ্যাম্পিয়নশিপ টুর্নামেন্টের সেরা দল (২): ২০০৪, ২০১২

ব্রাভো অ্যাওয়ার্ড (১): ২০০৪

উয়েফা বর্ষসেরা দল (৮): ২০০৪, ২০০৭, ২০০৮, ২০০৯, ২০১০, ২০১১, ২০১২, ২০১৩

স্যার ম্যাট বাসবি বর্ষসেরা খেলোয়াড় (৩): ২০০৩-০৪, ২০০৬-০৭, ২০০৭-০৮

ফিফপ্রো সেরা তরুণ খেলোয়াড়( দর্শক ভোটে) (২): ২০০৫,[২৩২] ২০০৬[২৩৩]

পিএফএ প্রিমিয়ার লীগ সেরা একাদশ (৪): ২০০৫-০৬, ২০০৬-০৭, ২০০৭-০৮, ২০০৮-০৯

পিএফএ বর্ষসেরা তরুণ খেলোয়াড় (১): ২০০৬-০৭

পিএফএ বর্ষসেরা খেলোয়াড়( খেলোয়াড়দের ভোটে) (২): ২০০৬-০৭, ২০০৭-০৮

পিএফএ বর্ষসেরা খেলোয়াড়( দর্শকদের ভোটে) (২): ২০০৬-০৭, ২০০৭-০৮

এফডব্লিউএ বর্ষসেরা খেলোয়াড় (২): ২০০৬-০৭, ২০০৭-০৮

বার্কলেস বর্ষসেরা খেলোয়াড় (২): ২০০৬-০৭, ২০০৭-০৮

প্রিমিয়ার লীগ মাসের সেরা খেলোয়াড় (৪): নভেম্বর ২০০৬, ডিসেম্বর ২০০৬, জানুয়ারি ২০০৮, মার্চ ২০০৮

পর্তুগিজ ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব: ২০০৬

পর্তুগিজ বর্ষসেরা ফুটবলার: ২০০৭

ইএসএম বর্ষসেরা একাদশ (৪): ২০০৬-০৭, ২০০৭–০৮, ২০১০–১১, ২০১১–১২

প্রিমিয়ার লীগ গোল্ডেন বুট (১): ২০০৭-০৮

ইউরোপিয়ান গোল্ডেন শু (২): ২০০৭-০৮, ২০১০-১১

ফিফাপ্রো বিশ্ব একাদশ (৭): ২০০৭, ২০০৮, ২০০৯, ২০১০, ২০১১, ২০১২, ২০১৩

উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ সর্বোচ্চ গোলদাতা (২): ২০০৭-০৮, ২০১২-১৩

উয়েফা ক্লাব সেরা ফরওয়ার্ড (১): ২০০৭–০৮

উয়েফা ক্লাব বিশ্বসেরা খেলোয়াড় (১): ২০০৭-০৮

ফিফা বিশ্বকাপ সিলভার বল (১): ২০০৮

ফিফা ব্যালন ডি'অর (১): ২০০৮

ফিফা বিশ্বসেরা খেলোয়াড় (১): ২০০৮

ফিফপ্রো বিশ্বসেরা খেলোয়াড় (১): ২০০৮

ওনজে দ’অর (১): ২০০৮

ওয়ার্ল্ড সকার ম্যাগাজিন বিশ্বসেরা খেলোয়াড় (২): ২০০৮, ২০১৩

ফিফা পুস্কাস অ্যাওয়ার্ড (১): ২০০৯

লা লীগা সর্বোচ্চ গোলদাতা (১): ২০১০-১১

কোপা দেল রে সর্বোচ্চ গোলদাতা (১): ২০১০-১১

গ্লোব সেরা খেলোয়াড় (২): ২০১১, ২০১৩

ট্রফেও আলফেদ্রো দে স্তেফানো (২): ২০১১-১২, ২০১২-১৩

এলএফপি মূল্যবান খেলোয়াড় (১): ২০১২–১৩

আইএফএফএইসএস বিশ্বসেরা সর্বোচ্চ গোলদাতা : ২০১৩

ফিফা ব্যালন ডি'অর (১): ২০১৩

ফিফা ব্যালন ডি'অর (১): ২০১৪

 

রেকর্ডসমূহ :

[আরো কিছু বাকি রয়েছে]

 

বিশ্বের সবচেয়ে দামী খেলোয়াড়

ইউরোপ

একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে ২টি ভিন্ন লীগে খেলে ইউরোপিয়ান ইবনি শু পুরস্কার অর্জন(ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগ ও স্প্যানিশ লা লীগা)

প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে প্রধান ইউরোপিয়ান লীগগুলোতে এক মৌসুমে ৪০ বা তার অধিক গোল করা।

উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগে সবচেয়ে বেশি টানা ম্যাচে গোল করা: ৬ ম্যাচ (মারুয়ান চামাক ও বুরাক ইয়ালমাজ এর সাথে মিলিতভাবে)

উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগের গ্রুপ পর্বে সবচেয়ে বেশি গোল: ৯ গোল

উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ১ বছরে সবচেয়ে বেশি গোল: ১৫ গোল, ২০১৩ সালে

ইংল্যান্ড

১ মৌসুমে সর্বোচ্চ গোলের জন্য প্রিমিয়ার লীগ গোল্ডেন বুট অর্জন (৩৮ খেলায়): ৩১ গোল ( অ্যালান শিয়ারারের সাথে যৌথভাবে)

স্পেন

লা লীগা ২০ দলে সম্প্রসারণের পর একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে সব দলের বিরুদ্ধে গোল করা

প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে টানা ৬ এল ক্লাসিকোতে গোল

লা লীগায় প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ১ মৌসুমে বিপক্ষের মাঠে ২০ গোল করা।

লা লীগায় ১৫০ গোল করা দ্রুততম খেলোয়াড়।

পর্তুগাল

পর্তুগালের হয়ে সবচেয়ে বেশি গোল করা খেলোয়াড়: ৫০ গোল

পর্তুগালের হয়ে উয়েফা ইউরোতে সবচেয়ে বেশি গোল করা খেলোয়াড়: ৬ গোল (নুনো গোমেজের সাথে যৌথভাবে)

ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন্সশীপে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলা পর্তুগিজ খেলোয়াড়: ( লুইজ ফিগো ও নুনো গোমেজের সাথে যৌথভাবে)

বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলা পর্তুগিজ খেলোয়াড়: ১১ ম্যাচ (সিমো সাবরোসার সাথে যৌথভাবে)

সবচেয়ে কমবয়সী খেলোয়াড় হিসেবে ১০০ ম্যাচ খেলা পর্তুগিজ: ২৭ বছর ৮ মাস ১১ দিন

রিয়াল মাদ্রিদ

১ মৌসুমে সবচেয়ে বেশি গোল: ৬০ গোল

লা লীগার ১ মৌসুমে সবচেয়ে বেশি গোল: ৪৬ গোল

উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ১ মৌসুমে সবচেয়ে বেশি গোল: ১২ গোল

১ মৌসুমে সবচেয়ে বেশি হ্যাট্রিক: ৭টি

দ্রুততম সময়ে ৫০ লীগ গোল অর্জন

দ্রুততম সময়ে ১০০ লীগ গোল অর্জন

দ্রুততম সময়ে ১৫০ লীগ গোল অর্জন

দ্রুততম সময়ে ২০০ গোল অর্জন

 

ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর সংক্ষিপ্ত জীবনী

 

 

ফুটবল বিশ্বে সবচেয়ে আলোচিত খেলোয়াড় কে?

সম্ভবত বিভিন্ন কারণে উত্তরটি হবে পর্তুগালের কিংবদন্তী ফুটবলার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো । মেসি ভক্তরা এটা শুনে ক্ষেপে যেতে পারেন । তাই তাদের জন্য আমাদের বিশেষ উপহার মেসিকে নিয়ে আরও একটি লেখা , যা নিচের লিঙ্কে গিয়ে পড়ে আসতে পারেন । আপনার রাগ থাকবে না নিশ্চিত ।

ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো রিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাবের হয়ে খেলেন এবং পাশাপাশি তিনি পর্তুগাল জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক । ছোট একটি শহরের এক মালির ছেলে ছিলেন রোনালদো- যিনি কঠোর অধ্যবসায় ও পরিশ্রমের মাধ্যমে আজ নিজেকে এমন এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে এসেছেন- যেখানে আরোহণ করা যেকোনো খেলোয়াড়ের সারা জীবনের স্বপ্ন থাকে ।

 

ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো বর্তমান সময়ে সবচেয়ে পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত খেলোয়াড় । আজ তার আলিসান বাড়ি, কোটি টাকা দামের গাড়ি আছে । কিন্তু এই মানুষটি একটা সময়ে থাকতেন টিনের তৈরি একটি ছোট্ট বাড়িতে । খুব কম মানুষই জানে, এমনকি তার ভক্তদের মধ্যে অনেকেই হয়ত জানেন না, একটা সময়ে কতটা কষ্টের মধ্যে দিয়ে তিনি গেছেন ।

 

ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ৫ই ফেব্রুয়ারি ১৯৮৫ সালে পর্তুগালের মাদেইরাতে জন্মগ্রহণ করেন । পুরো নাম ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো দস স্যান্তোস এভেইরো । তার বাবা জোসে দিনিস আভেইরো ছিলেন মালি, যিনি পার্ক ও মাঠের পরিচর্যা করে পরিবার চালাতেন । রোনালদোর পরিবারে সে ছাড়া বড় এক ভাই ও দুই বোন আছে । রোনালদোর পুরো পরিবার ছোট একটা টিনের ঘরে থাকতো । খুব অল্প বয়স থেকে ফুটবল শুরু তার । মাত্র আট বছর বয়সে প্রথমে “আন্দোরিনহা” নামে একটি অপেশাদার দলে তার ক্রীড়াজীবন শুরু হয়, যেখানে তার বাবা কাজ করতেন । রোনালদোর মা মারিয়া ডোলোরেস ছোটবেলায় তাকে ক্রাই বেবি বলে ডাকতেন, কারণ কোন ম্যাচ ভাল না খেললেই তিনি মাঠে বসে কান্নাকাটি করতেন । এখনো অবশ্য এই প্রচলনটি রয়ে গেছে, তার দলের অন্য খেলোয়াড়রা তাকে মজা করে এই নামে ডাকেন ।

 

১৯৯৫ সালে, দশ বছর বয়সের মধ্যেই পর্তুগালে তার সুনাম ছড়াতে থাকে । মাদিয়েরার শীর্ষ দুটি দল “সিএস মারিতিমো” ও “সিডি ন্যাশিওনাল” তাকে পেতে উম্মুখ ছিল । অপেক্ষাকৃত বড় দল মারিতিমো আন্দোরিনহার ব্যবস্থাপকের সাথে একটি মিটিং-এ অংশ নিতে পারেননি । ফলে সিডি ন্যাশিওনাল রোনালদোকে হস্তগত করে । ন্যাশিওনালের হয়ে সে মৌসুমে শিরোপা জেতার পর স্পোর্টিং দলের সাথে তিনি চুক্তিবদ্ধ হন । কিন্তু রোনালদোর ১৫ বছর বয়সে পরীক্ষায় ধরা পড়ে, তার হার্টে সমস্যা আছে । তাকে বাঁচতে হলে ফুটবল খেলা ছেড়ে দিতে হবে বলে ডাক্তার পরামর্ষ দেন । তখন তার সামনে মাত্র দুইটি পথ খোলা ছিল- হয় ফুটবল ছেড়ে দাও, নাহয় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হার্টের সার্জারি করাও । তার জন্য ফুটবল ছাড়াটাই বেশি কঠিন ছিল বলে সে মৃত্যুর কথা না ভেবে হার্টের সার্জারি করালেন এবং সৌভাগ্যক্রমে সার্জারি সফল হয় । তিনি আবার খেলায় ফিরে আসেন । এবার এক নতুন শক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন নিজের স্বপ্নকে সফল করতে । কিন্তু এরপরই আরও এক কঠিন বিপর্যয়ের মুখোমুখি হলেন তিনি । তার সবচেয়ে কাছের মানুষ, সবচেয়ে প্রিয়, বাবা অতিরিক্ত মদ খাওয়ার কারণে মারা যান । বাবার মৃত্যু রোনালদোকে অনেক বেশি ভেঙ্গে দেয় । কারণ, তার জীবনে বাবা এমন একজন বন্ধু ছিলেন যার সাথে সে সব কথা শেয়ার করতে পারত । সেই থেকে রোনালদোকে প্রতিজ্ঞা করেন যে তিনি নিজে কখনো মদ ছুঁয়ে দেখবেন না । এবং তিনি প্রতিজ্ঞা রেখেছেন ।

 

বাবা হঠাৎ মারা যাবার পর তাদের আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ হতে লাগল । তখন তার মা অন্যদের বাসায় কাজ করে সংসার চালাতেন । তার একসাথে যে এতোগুলো সঙ্কট যাচ্ছে, রোনালদো তাতে বিন্দুমাত্র আশা হারাননি । সব সঙ্কটকে একপাশে সরিয়ে রেখে, নিজেকে সে কেবলমাত্র একটা জায়গাতেই কেন্দ্রিভুত করেন । একজন দক্ষ ফুটবলার হিসেবে নিজেকে তৈরি করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে থাকেন । রোনালদো ১৭ বছর বয়সে পর্তুগাল স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে প্রথম ম্যাচ খেলেন । ম্যাচটি ছিল লিবান ক্লাবের সাথে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ক্লাবের ।

 

এই ম্যাচে অ্যালেক্স ফার্গুসনের রোনালদোর খেলা দেখেই সাথে সাথে তাকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে খেলার চুক্তি করেন । তখন রোনালদোকে নেওয়ার জন্য এই ক্লাবটি ১৭ মিলিয়ন ডলার খরচ করে । এটা ইংলিশ ফুটবল ক্লাবের ইতিহাসে কোন নতুন সম্ভাবনাময় খেলোয়াড়কে দেওয়া সবচেয়ে বড় পারিশ্রমিক । রোনালদো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে আগস্ট ২০০৩ থেকে মে ২০০৯ পর্যন্ত খেলেন । এই সময়ে তিনি ১৯৬ ম্যাচে ৮৪টি গোল করেন । তারপর ২০০৯ সালে রিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব ১৩২ মিলিয়ন ডলারের চুক্তিতে রোনালদোকে দোলে নেয় । রিয়াল মাদ্রিদের এই চুক্তি ছিল ২০১৫ সাল পর্যন্ত । তাই নতুন চুক্তিতে রিয়াল মাদ্রিদের সাথে ২০২১ সাল পর্যন্ত ২২৫ মিলিয়ন ডলারে আরেকটি চুক্তি হয় । নতুন এই চুক্তির মাধ্যমে পৃথিবীর সবচেয়ে দামী খেলোয়াড় হিসেবে রোনালদোর নাম উঠে গেছে । শুধু এমন না যে এই টাকা দিয়ে রোনালদো নিজের ব্যাংক ব্যাল্যান্স করছেন, সম্পদ বাড়াচ্ছেন । ররং তিনি এই টাকা থেকে একটা বড় অংশ খরচ করছেন সামাজিক উন্নয়নে । একবার তিনি ১০ মাসের এক শিশুকে বাঁচানোর জন্য প্রায় ৭৯ হাজার ডলার খরচ করেন । রোনালদো প্রতিবছর দুইবার রক্তদান করেন, তাই সে তার শরীরে কোন ট্যাটু করান না । ফুটবল খেলা ছাড়াও তিনি একজন ভালো বাস্কেট বল খেলোয়াড় ।

 

কী শিখলেন রোনালদোর জীবন থেকে?

 

অনেকেই ভাবছেন ওর এতো এতো টাকা! কিন্তু একটিবার মূল্যায়ন করে দেখুন- একজন মানুষ রোনালদোকে । নিজের স্বপ্ন পূরণে কতটা মরিয়া ছিলেন তিনি, কতটা পরিশ্রমী রোনালদো? কি দুঃসহ কঠিন সময় তারও ছিল? সবার আগে অন্য একটি ব্যাপারে একটু লক্ষ্য করুন । একজন মানুষ এমনি এমনি বড় হয় না । সবার আগে যেটা প্রয়োজন, তাকে মানবিক হতে হবে । সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন মনের মানুষ । এটা কেন্দ্র । এখান থেকেই তৈরি হয়, স্বপ্ন, ইচ্ছাশক্তি, ভালোবাসা, সংকল্পের দৃঢ়টা, কঠোর পরিশ্রম করার মানসিকতা । বড় হতে হলে, সবার আগে একজন মানুষ হওয়ার চেষ্টা করুন ।

 

আপনার আশে পাশে যদি এমন কোন মানুষ থাকে যার এই লেখাটি পড়া উচিত বলে মনে করেন , তার সাথে অবশ্যই শেয়ার করবেন । অনুপ্রেরণামূলক গল্প, সফল ব্যক্তিদের জীবনী, সফলতার সূত্র এবং জীবনের নানান সমস্যা আপনাদের পাশে আছে পাই ফিঙ্গার্স মোটিভেশন । আর আগামী পর্বে আপনি কোন বিষয়ে লেখা চান কমেন্ট করে জানান । ভাল থাকুন ।

 

সফলতা কেবল আপনার জন্যই ।