...নুসরাতের আর কোনো বাধা নেই

...নুসরাতের আর কোনো বাধা নেই

‘পটাকা’ শিরোনামে একটি গান লেখার পর অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়া যেন পুরোদস্তুর প্রযোজক বনে গেছেন। গানটির ভিডিওতে পারফর্মতো করেছেনই, সঙ্গে পুরো আয়োজনটিই নিজ হাতে সামলেছেন। চলতি মাসের ১৮-১৯ তারিখ মুম্বাইয়ে এর শুটিং শেষ হয়েছে। আসছে এপ্রিলের শেষ দিকে এটি প্রকাশ পাবে। এদিকে নুসরাত টকিজকে জানিয়েছেন, এখন থেকে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়ার বাইরে কাজ করতে তার আর কোনো বাধা নেই। কথাপ্রসঙ্গে টকিজের সামনে আরো নানা বিষয়ের পসরা সাজালেন এ অভিনেত্রী—

শুরুটা করতে চাই আপনার লেখা পটাকা শিরোনামের গানের প্রসঙ্গ দিয়ে। মুম্বাইয়ে এর দৃশ্য ধারণ হয়েছে। পুরো অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

এর আগে কলকাতা, হায়দরাবাদসহ ভারতের বেশকিছু জায়গায় শুটিংয়ে অংশ নিয়েছি। এই প্রথমবারের মতো মুম্বাইয়ে শুটিং করেছি। অবশ্য আমি বেশ উদ্বিগ্ন ছিলাম যে, ওখানে শুটিংটা কেমন হবে। তবে সত্যি বলতে উদ্বিগ্ন তো হইনি, বরং বেশ ভালো অনুভূতিই সঙ্গে করে নিয়ে এসেছি।

সবচেয়ে ভালো লেগেছে, ওখানে ১২ ঘণ্টার বেশি ১ মিনিটও শুটিং হয় না। সকাল ৮টায় ঘুম থেকে উঠে ১০টা সময় শুটিং শুরু করে রাত ১০টার মধ্যে তা শেষ করেছি। একজন শিল্পী হিসেবে এটা যে কী পরিমাণ আরাম ও স্বস্তির, তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।

ওখানকার আর কী কী আপনাকে মুগ্ধ করেছে?

আমার প্রডাকশন টিমের প্রত্যেক সদস্যই অসাধারণ। ওরা আমাকে সম্মানের সঙ্গে বিমানবন্দর থেকে রিসিভ করেছে। মোটকথা আমার কোনো অসুবিধা যাতে না হয়, সেজন্য সবসময় সতর্ক ছিল তারা। আরেকটা মজার ব্যাপার ছিল, আমি ভেবেছিলাম, মুম্বাই পৌঁছেই বোধহয় শুটিং করতে হবে। কিন্তু ভিডিওটির পরিচালক বাবা যাদব অভয় দিয়ে বলেন, পুরো দিন বিশ্রাম নিতে ও সিনেমা দেখতে। এরপর আমরা কয়েকজন প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে ‘পদ্মাবত’ ছবিটি দেখেছি।

 শুটিং অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

মুম্বাই পৌঁছানোর পরের দিন সকালে আমার কস্টিউম ট্রায়াল ছিল। ওখানকার কস্টিউম ডিজাইনারের সঙ্গে এটাই ছিল আমার প্রথম কাজ। যাহোক, শুরুতেই আমাকে একটি সাত কেজি ওজনের প্যান্ট পরতে হয়েছিল। এবং তিন-তিনবার ওটা পরে ট্রায়াল দিতে হয়েছিল। তবে যত কষ্টই হোক, শুটিংটা দারুণভাবে শেষ করতে পেরেছি।

এবার একটু ভিন্ন প্রসঙ্গ, বহু বছর আগে থেকেই এ দেশের অনেক নায়িকাই প্রযোজক হিসেবে কাজ করছেন। আপনাকেও কি অদূর ভবিষ্যতে সিনেমার প্রযোজক হিসেবে দেখা যাবে?

এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছি না। আমাকে তো প্রথমে অনেক টাকা রোজগার করতে হবে। প্রযোজনার জন্য এটা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আমি অন্য কারো কাছ থেকে টাকা নিয়ে প্রযোজক হিসেবে নিজেকে পরিচিত করতে চাই না। যদি প্রযোজনায় নামি, তাহলে নিজের টাকা নিয়েই নামব। আরেকটা কথা, আমি যদি ছবিতে বিনিয়োগ করি, তাহলে নির্মাতাকে অবশ্যই স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেব।

 এ যাবৎ যত ছবিতে অভিনয় করেছেন, সেগুলোর বেশির ভাগই রোমান্টিক ঘরানার গল্প। এতে প্রেমিকার চরিত্রে অভিনয় করেছেন। এর বাইরে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বা অন্য গল্পের ছবিতে কোনো কাজ করেছেন নাকি সে ধরনের কাজের প্রস্তাব আপনার কাছে আসছে না? 

আমার কাছে বেশকিছু অসাধারণ কাজের প্রস্তাব এসেছে। এমনকি এ বছরের শুরুতেও ভালো একটি কাজের প্রস্তাব পেয়েছিলাম, চরিত্রও ছিল দারুণ। কিন্তু আমার কাছে মনে হয়, ভারী চরিত্রে অভিনয় করতে আমাকে অভিনেত্রী হিসেবে আরো পরিপক্বতা অর্জন করতে হবে। কারণ বয়স এবং লুক একটু বেশি পরিপক্ব না হলে দর্শকের কাছে নিজের চরিত্রকে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলে ধরা সম্ভব নয়। তাছাড়া আমি এমন কিছু করতে চাই না, যাতে মানুষের কাছে হাসির পাত্র হই।

 প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়ার সঙ্গে তো বেশ কয়েক বছর কাজ করছেন। এর বাইরে কাজ করা নিয়ে কী ভাবছেন? 

হ্যাঁ, আমি তো এরই মধ্যে বাইরে কাজ করা শুরু করে দিয়েছি। বাইরে কাজ করা নিয়ে জাজের পক্ষ থেকেও কোনো বাধা নেই। তাদের শর্ত শুধু একটাই, ভালো কাজ করতে হবে। ভালো কাজ পেলে অবশ্যই করব। বলতে পারেন, এখন থেকে জাজের বাইরে আমি আমার ইচ্ছেমতো কাজ করতে পারব। আমার কাজে এখন আর কোনো বাধা নেই।