আমজাদ খান চৌধুরী

আমজাদ খান চৌধুরী

আমজাদ খান চৌধুরী একজন বাংলাদেশী ব্যবসায়ী, শিল্প উদ্যোক্তা এবং প্রাক্তন সেনা কর্মকর্তা। তিনি দেশের অন্যতম বৃহত্তম শিল্প প্রতিষ্ঠান প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ছিলেন।

জন্ম ও শিক্ষাজীবন :

আমজাদ খান চৌধুরী ১৯৩৯ সালের ১০ নভেম্বর উত্তরবঙ্গের নাটোর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম আলী কাশেম খান চৌধুরী ও মাতার নাম আমাতুর রহমান। তিনি ঢাকার নবকুমার ইন্সস্টিটিউট থেকে তার শিক্ষা জীবন শুরু করেন। পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমি ও অস্ট্রেলিয়ান স্টাফ কলেজ থেকে স্নাতক লাভ করেন।

কর্মজীবন :

১৯৫৬ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। মেজর জেনারেল হিসেবে আমজাদ খান চৌধুরী ১৯৮১ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে বাধ্যতামূলক অবসরে যান।

১৯৮১ সালে তিনি রংপুরে টিউবওয়েল তৈরির কারখানা হিসেবে রংপুর ফাউন্ড্রি লিমিটেড (আরএফএল) প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৮৫ সালে গড়ে তোলেন এগ্রিকালচারাল মার্কেটিং কম্পানি, যার ব্র্যান্ড নাম প্রাণ।

আমজাদ খান চৌধুরী মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই), ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসসি), ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড, বাংলাদেশ ডেইরি অ্যাসোসিয়েশনসহ বিভিন্ন সংগঠনের সভাপতি, পরিচালকসহ বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ছাড়া তিনি রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব), বাংলাদেশ এগ্রো প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশন (বাপা), আন্ডারপ্রিভিলেজড চিলড্রেনস এডুকেশন প্রোগ্রাম (ইউসেপ) প্রভৃতি সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।

মুক্তিযুদ্ধে বিতর্কিত ভূমিকা :

তৎকালীন মেজর আমজাদ খান চৌধুরী বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় রংপুর সেনানিবাসের বিএম-২৩ ব্রিগেডে পাকিস্তানি বাহিনীর হয়ে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। রংপুর এবং দিনাজপুর এলাকায় তাকে মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে সম্মুখ সমরে আবির্ভূত হতে দেখা যায়। রংপুরের হিন্দু বাড়িঘর লুটপাটেও তিনি অংশ নেন বলে জানা যায়।  পরবর্তীতে বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর তিনি মেজর জেনারেল হিসাবে পদোন্নতি পান।

বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার দিন, ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্ট আমজাদ খান চৌধুরী কুমিল্লা সেনানিবাসে ব্রিগেড কমান্ডার ছিলেন এবং তার নিয়োজিত দল বঙ্গবন্ধুর বাসভবন প্রতিরক্ষার দায়িত্বে ছিল, যেটা পালন করতে তারা ব্যর্থ হয়।

মৃত্যু :

৮ জুলাই ২০১৫ বুধবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭ টা ১৫ মিনিটে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলিনায় ডিউক মেডিকেল হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।এর আগে শারীরিক অসুস্থতার জন্যে একমাস যাবৎ তিনি যুক্তরাষ্ট্রের এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমান,শোক প্রকাশ করেন।