রিহ্যাব ফেয়ারঃ ২০১৭, চাহিদা বেশি ছিল মাঝারি ফ্ল্যাটের

রিহ্যাব ফেয়ারঃ ২০১৭, চাহিদা বেশি ছিল মাঝারি ফ্ল্যাটের

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে চলছে পাঁচ দিনের দেশের আবাসন শিল্পখাতের সবচেয়ে বড় আয়োজন ‘রিহ্যাব ফেয়ার-২০১৭’। দর্শনার্থীদের জন্য মেলা প্রাঙ্গণ উন্মুক্ত থাকে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত।

আবাসন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এবার মাঝারি আকারের ফ্ল্যাটের চাহিদা অনেক বেশি। তারা বলেন, অধিকাংশ ক্রেতাই মাঝারি আকারের ফ্ল্যাট খুঁজছেন। মাঝারি মানে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ বর্গফুট আয়তনের ফ্ল্যাট। ছোট আকারের ফ্ল্যাটের চাহিদাও আছে। তবে আবাসন প্রতিষ্ঠানের কাছে মাঝারি আকারের ফ্ল্যাটের সংখ্যাই বেশি।

এবারের আবাসন মেলায় কমপ্রিহেনসিভ হোল্ডিংস ২৭টি প্রকল্পের ১৬০টি ফ্ল্যাট বিক্রির জন্য প্রদর্শন করছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রকল্পগুলো রাজধানীর লালমাটিয়া, ধানমন্ডি, সেন্ট্রাল রোড, মিরপুর, জিগাতলা, নাজিম উদ্দিন রোড, উত্তরা ও বনানী এলাকায়। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপক (উদ্ভাবন ও পরিকল্পনা) কাজী সামসুল আলম বলেন, ‘ক্রেতাদের অর্ধেকই ১২০০-১৫০০ বর্গফুট আয়তনের ফ্ল্যাট খুঁজছেন। মাঝারি আকারের পর্যাপ্ত ফ্ল্যাট থাকায় আমরা চাহিদা মেটাতে পারছি।’

অ্যাসুরেন্স ডেভেলপমেন্টস ২১টি প্রকল্পে এক হাজারের বেশি ফ্ল্যাট বিক্রির জন্য এনেছে। প্রতি বর্গফুটের দাম সাড়ে ৭ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত। অ্যাসুরেন্সের ফ্ল্যাটগুলো উত্তরা, বারিধারা, গুলশান, বনানী, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি ও বংশাল এলাকায়। প্রতিষ্ঠানটির জ্যেষ্ঠ নির্বাহী (বিক্রয়) কাজী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ক্রেতারা এক থেকে দেড় কোটি টাকার মধ্যে ফ্ল্যাট কিনতে চান। একই সঙ্গে তারা রেডি ফ্ল্যাট চাইছেন। আমরা সেই চাহিদা পূরণ করতে পারছি। মেলায় এখন পর্যন্ত ভালো সাড়া পাওয়া গেছে।’

খেলার মাঠ, বিদ্যালয়, ব্যায়ামের জায়গা, ক্লাব হাউসসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিয়ে মিরপুরের পুলিশ কনভেনশন হলের পেছনে ৫০ বিঘা জায়গার ওপর গড়ে উঠছে বিজয় রাকিন সিটি। সেখানে ১৫টি ভবনে আছে ১ হাজার ৯০০ ফ্ল্যাট। এসব ফ্ল্যাটের আয়তন ১ হাজার ৫৫৩ ও ১ হাজার ৮৭২ বর্গফুট। প্রতি বর্গফুটের দাম ৬ হাজার ২০০ থেকে সাড়ে ৭ হাজার টাকা পর্যন্ত।

বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন ঢাকা ও চট্টগ্রাম এলাকায় ফ্ল্যাট কেনার জন্য ১০ শতাংশ সুদে সর্বোচ্চ ৮০ লাখ টাকা ঋণ দেয়। ঢাকা ও চট্টগ্রামের বাইরে জেলা পর্যায়ে ১০ শতাংশ সুদে সর্বোচ্চ ৬০ লাখ ও উপজেলা পর্যায়ে ৯ শতাংশ সুদে সর্বোচ্চ ৪০ লাখ টাকা ঋণ দেয় সরকারের এই আর্থিক প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া বাড়ি নির্মাণের জন্য ঋণ দেয় তারা।

জানতে চাইলে হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনের কর্মকর্তা জোবায়েদা খাতুন বলেন, ফ্ল্যাট ও বাড়ি তৈরির জন্য ঋণ নিতে হলে প্রয়োজনীয় নথিপত্রসহ একটি প্রাথমিক আবেদন করতে হয়। সেটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সাত দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়া হয়। তারপরই চূড়ান্ত আবেদন করতে হয়।

তিনি বলেন, আগের চেয়ে সহজ ও দ্রুত সময়ে ঋণ দেয়ার প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করছে হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন।

মেলা উপলক্ষে ক্রেতা আকর্ষণে অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন অফারের ব্যবস্থা করেছে।

পূর্বাচল এনআরবি হোমস তাদের প্লটে মেলা উপলক্ষে ২৫ শতাংশ ছাড় দিচ্ছে। এককালীন নগদ মূল্যে যারা প্লট ক্রয় করবেন তারা এ সুবিধা পাবেন।

ইমপেরিয়াল রিয়েল এস্টেট কোম্পানি তাদের ৯টি প্রকল্পের মধ্যে ২টি প্রকল্পের রেডি ফ্লাটে ১৭ শতাংশ ছাড় দিচ্ছে।

পূর্বাচল মালুম সিটি মেলা উপলক্ষে এককালীন প্লট ক্রয়ে ৩০ শতাংশ ছাড় দিচ্ছে। রাজউক পূর্বাচলের ৪ ও ২১ নম্বর সেক্টর সংলগ্ন শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে আধুনিক সুপরিকল্পিত আবাসন পূর্বাচল মালুম সিটি।

রিহ্যাবের জনসংযোগ কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ জানান, এবারের মেলায় দর্শনার্থীদের দুই ধরনের টিকিট দেয়া হচ্ছে। একটি সিঙ্গেল এন্ট্রি, অপরটি মাল্টিপল। সিঙ্গেল টিকিটের প্রবেশ মূল্য ৫০ টাকা, মাল্টিপল ১০০ টাকা। মাল্টিপল এন্ট্রি টিকিট দিয়ে একজন দর্শনার্থী মেলার সময় ৫ বার প্রবেশ করতে পারবেন। এন্ট্রি টিকিটের প্রাপ্ত অর্থ দুঃস্থদের সাহায্যে ব্যয় করা হবে।

এছাড়া এন্ট্রি টিকিটের র‌্যাফেল ড্রতে থাকবে আকর্ষণীয় পুরস্কার। মেলার শেষ দিন ২৫ ডিসেম্বর রাত ৯টায় র‌্যাফেল ড্র অনুষ্ঠিত হবে। ১ম পুরস্কার- একটি প্রাইভেট কার, ২য় পুরস্কার-একটি মোটরসাইকেল, ৩য় পুরস্কার-একটি ফ্রিজ, ৪র্থ পুরস্কার-একটি ৪২ ইঞ্চি এলইডি টেলিভিশন, ৫ম পুরস্কার-একটি ওয়াশিং মেশিন এবং ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম পুরস্কার থাকবে মোবাইল ফোন।