খেলোয়াড় প্রোফাইলঃ তামিম ইকবাল

খেলোয়াড় প্রোফাইলঃ তামিম ইকবাল

বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের ওপেনিং ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল। শুধু ওপেনার বলা হয়ত ভুল? প্রমিলা পাঠকরা একটু রেগে যেতে পারেন। ড্যাশিং ওপেনার। এবার ঠিক হলো। আসলেও ড্যাশিং ওপেনার। নিজের দিনে পারেন সব কিছু করতে।  না হলে কি  পর পর দুই ম্যাচে ইংল্যান্ডের মাটিতে  ইংলিশ বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে ১০৩ ও ১০৮ মত  ইনিংস করতে পারত? এতো গেল টেষ্ট খেলার খবর। মনে করে দেখুন  শেষ এশিয়া কাপে কি ব্যাটিং টাই না করল। যেখানে তার খেলা নিয়েই সন্দেহ ছিল সেখানে পর পর চার চারটি অর্ধশত। তাও আবারো পাকিস্তানী,ভারতীয় ও শ্রীলংকার বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে। খেলার জগৎ এর আজকের খেলোয়াড় প্রোফাইলে দেয়া হল ওপেনার তামিম ইকবালের প্রোফাইল।

তামিম ইকবাল খান। জন্ম ২০ মার্চ ১৯৮৯ চট্টগ্রামে। বেড়েও উঠেছেন চট্টগ্রামের শহরেই। খেলাধুলার আগ্রহটা মূলত তৈরি হয় তার চাচা বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক  আকরাম খানের মাধ্যমে। আর বড় ভাই নাফিস ইকবাল তো রয়েছেনই।

তামিম চট্টগ্রামের বিভাগীয় দলের হয়ে প্রথমে খেলা শুরু করেন । এরপর ২০০৭ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হারারে মাঠে একদিনের খেলায় তার অভিষেক হয়। সে ম্যাচে রান করেন ৫। তার পরের বছরই টেষ্ট ক্রিকেটে অভিষেক হয়। নিউজিল্যান্ড এর বিপক্ষে ওভালের মাঠে প্রথম ইনিংসে ৫৩ আর দ্বিতীয় ইনিংসে ৮৪ রান করেন। ২০১০ ডিসেম্বর থেকে সেপ্টেম্বর ২০১১ পর্যন্ত সাকিব আল হাসানের সাথে সহ অধিনায়কের ভূমিকা পালন  করেন। এরই মধ্যে ২০১১ সালে ক্রিকেটের বাইবেল বলে খ্যাত “উইজডেন” এর সেরা ক্রিকেটার নির্বাচত হন।

ক্যারিয়ার শুরুর ঘটনা

২০০৬ সালের শ্রীলংকার অনুর্ধ-১৯ বিশ্বকাপের পর ২০০৭ সালের বিশ্বকাপের জন্য তামিমকে দলে নেয়া হয়। গ্রুপ ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে তার ৫৩ বলে ৫১ রানের ইনিংসটির কারণে ভারতকে হারাতে সক্ষম হয়। সেবছরই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সাথে সি গ্রেডের ছয় মাসের চুক্তি করেন। ২০০৯ সালে আইপিএলে তামিমকে প্রাথমিক দলে রাখা হলেও তাকে কোন দল না কেনার কারণে তার আর খেলা হয়নি। অবশ্য সর্বশেষ আইপিএলে পুনে ওয়ারিওর্স তাকে কিনে নিলেও তাকে কোন ম্যাচে মাঠে নামায়নি।

উইজডেন ক্রিকেটার অব দ্যা ইয়ার

২০১০ সালে মার্চ মাসে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে তামিম ১২০ বলে ৮৬ রানের অনবদ্য এক ইনিংস খেলেন। বাংলাদেশী প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে মাত্র ১৯ টি ইনিংস খেলে ১০০০ রানে পৈৗছান। সেবছরই ইংল্যান্ডের মাটিতে দুই টেস্টই শতকের কারণে তামিম ক্রিকেটের বাইবেল বলে পরিচিত বর্ষপঞ্জিকা উইজডেন এ বছরের সেরা টেস্ট খেলোয়াড় নির্বাচিত হন। গ্রায়েম সোয়ান ও ভিরেনদর সেভাগ হন দ্বিতীয় ও তৃতীয়। তামিম সাত টেস্টে ৫৯.৭৮ গড়ে ৮৩৭ রান করেছিলেন। ২০০৯ সালে সাকিবের পর তামিম দ্বিতীয় বারের মতো কোন বাংলাদেশী ক্রিকেটার হিসেবে দুর্লভ সম্মান অর্জন করেন।

ব্যক্তিগত তথ্য

পুরো নাম – তামিম ইকবাল খান

জন্ম – ২০ মার্চ ১৯৮৯ চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ

ব্যাটিং স্টাইল – বাম হাতি(ওপেনার)

আন্তর্জাতিক তথ্য

টেস্ট অভিষেক – ৪ জানুয়ারী ২০০৮ প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড

টেস্ট খেলোয়াড় – ৫০তম

ওডিআই অভিষেক – ৯ ফেব্রুয়ারী প্রকিপক্ষ জিম্বাবুয়ে

ওডিআই খেলোয়াড় – ৮৩ তম

 

টেস্ট , ওডিআই ও টি-২০ পরিসংখ্যান

ধরণ ম্যাচ ইনিংস রান সর্বোচ্চ গড় শতক অর্ধ-শতক ক্যাচ
টেস্ট ২৪ ৪৬ ১৭৪৮ ১৫১ ৩৮.০০ ১০
ওডিআই ১১৩ ১১৩ ৩৩৬৮ ১৫৪ ৩০.০৭ ২৩ ২৯
টি-২০ ২৩ ২৩ ৪৪৩ ৬৯ ২০.১৩  –

বর্তমান সময়টাও বেশ ভালো কাটছে তামিমের। ৫ বছর পর প্রথম শ্রেণীর চারদিনের ম্যাচ খেলতে নামেন আর নেমেই প্রথম ব্যাটস ম্যান হিসেবে জাতীয় ক্রিকেট লীগে টানা তিন শতক করার কৃতিত্ব তারই। এ মৌসুমে প্রথম বারের মতোই চট্টগ্রামের অধিনায়কত্ব পেলেন। প্রথম রাউন্ডে ঢাকা মেট্রোর বিপক্ষে ১৯২ ও ১১৩ রানের অপরাজিত ইনিংস আর দ্বিতীয় রাউন্ডে সিলেটের বিপক্ষে ১৮৩ রানের ইনিংস। তবে নিজের প্রতি বেশ আক্ষেপ থাকতে পারে নিজেরই। একটি ইনিংস ও তিনি দ্বিশতকে নিয়ে যেতে পারলেন না।

তামিম ইকবাল একটি প্রতিভার নাম। সে তার নিজের নামের প্রতি সুবিচার করে আরও এগিয়ে যাক সেই শুভ কামনা রইল।