শীতজনিত রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা

শীতজনিত রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা

পৌষের শেষ দিকে এসে শীতের প্রকোপ বেড়ে গেছে। শিশুরা ব্যাপকহারে আক্রান্ত হচ্ছে শীতজনিত রোগে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল এবং আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে পাঁচ শতাধিক শিশু নিউমোনিয়া, রক্তের সংক্রমণ, এলার্জি ও ডায়ারিয়াসহ বিভিন্ন শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে।

এছাড়া প্রাইভেট শিশু হাসপাতালগুলির সিটও খালি নেই। তবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ হল, শিশুর ঠা-া যাতে না লাগে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. মাহমুদ এ চৌধুরী আরজু পূর্বকোণকে বলেন, শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। বিশেষ করে ডায়ারিয়া এবং নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে শিশুরা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। মা ও শিশু হাসপাতালে বর্তমানে ২০০ এর কাছাকাছি শিশু রোগী ভর্তি আছে। যা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ। তিনি বলেন, একটু সচেতন হলে শিশুদের এসব রোগ এড়ানোর সুযোগ আছে। বিশেষ করে শিশুর ঠা-া যাতে না লাগে সেদিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।

একইসাথে শিশুদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। যদি কোন শিশুর ডায়ারিয়া হয়ে যায় তবে মায়ের বুকের দুধের পাশাপাশি স্যালাইন খাওয়াতে হবে। ডিহাইড্রেশন বেড়ে গেলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। নিউমোনিয়া রোগীর ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে শ্বাস-প্রশ্বাস দ্রুত উঠা-নামা করছে কিনা। যদি এই লক্ষণ দেখা যায় দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। তিনি বলেন, রোগীর সংখ্যা বাড়লেও সবাই চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি যাচ্ছে। কারণ মানুষ এখন অনেক সচেতন। তবে এই ধরনের মৌসুমী রোগ হতে বাঁচার জন্য আরো বেশি সচেতনতা জরুরি।

এদিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খবর নিয়ে জানা গেছে, শীতকালীন রোগে বাচ্চারা নিউমোনিয়া, রক্তের সংক্রমণ, এলার্জি ও ডায়ারিয়ায় আক্রান্ত হয়ে এখানেও প্রচুর শিশু ভর্তি হয়েছে। নবজাতক ওয়ার্ডসহ মোট ১০৪টি শয্যা থাকলেও রোগী ভর্তি আছে তিন শতাধিক।

কোনো কোনো শয্যায় একাধিক নবজাতকও রাখা হয়েছে। চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী পূর্বকোণকে বলেন, গ্রামে শীতজনিত রোগীর পরিমাণ কিছু বেড়েছে। এবিষয়ে জরুরি ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেয়া আছে। পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ আবদুল হান্নান পূর্বকোণকে বলেন, গতকাল মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম মহানগরীতে তাপমাত্রা ছিল ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

সীতাকু-ে ছিল ৬ দশমিক ৮, সন্দ্বীপে ৮ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, রাঙামাটিতে ১১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, কক্সবাজারে ১২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, কুতুবদিয়ায় ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, টেকনাফে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তিনি জানান, গতকাল সারাদিন উত্তর দিক থেকে যে ঠা-া বাতাস বইছিল তা ছিল হিমালয়ের হিমশীতল বাতাস। তবে আজ বুধবার থেকে তাপমাত্রা বাড়বে।