মনোযোগের সাথে নামাজ আদায়ের চারটি পরামর্শ

মনোযোগের সাথে নামাজ আদায়ের চারটি পরামর্শ

নামায, নামাজ বা সালাত হল ইসলাম ধর্মের প্রধান উপাসনাকর্ম। প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত (নির্দিষ্ট নামাযের নির্দিষ্ট সময়) নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলিমের জন্য আবশ্যক বা ফরজ। নামায ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের একটি। শাহাদাহ্‌ বা বিশ্বাসের পর নামাযই ইসলামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ।

নামায শব্দটি ফার্সি ভাষা থেকে উদ্ভূত এবং বাংলা ভাষায় পরিগৃহীত একটি শব্দ যা আরবি ভাষার সালাত শব্দের প্রতিশব্দ। বাংলা ভাষায় ‘সালাত’-এর পরিবর্তে সচরাচর ‘নামাজ’ শব্দটিই ব্যবহৃত হয়। ফার্সি, উর্দু, হিন্দি, তুর্কী এবং বাংলা ভাষায় একে নামায (ফার্সি ভাষা থেকে উদ্ভূত) বলা হয়। কিন্তু এর মূল আরবি নাম সালাত (একবচন) বা সালাহ্‌ (বহুবচন)।

“সালাত” -এর আভিধানিক অর্থ দোয়া, রহমত, ক্ষমা প্রার্থনা করা ইত্যাদি। পারিভাষিক অর্থ: ‘শরী‘আত নির্দেশিত ক্রিয়া-পদ্ধতির মাধ্যমে আল্লাহর নিকটে বান্দার ক্ষমা ভিক্ষা ও প্রার্থনা নিবেদনের শ্রেষ্ঠতম ইবাদতকে ‘সালাত’ বলা হয়, যা তাকবীরে তাহরীমা দ্বারা শুরু হয় ও সালাম দ্বারা শেষ হয়’

নামাজ আল্লাহর সাথে বান্দার যোগাযোগ ও নিবিড়তম সম্পর্ক তৈরির অন্যতম মাধ্যম। বান্দা যখন নামাজ আদায় করে, তখন তার সাথে আল্লাহর একান্ত আলাপন হয়। এই নিভৃত আলাপন বা যোগাযোগ উপলব্ধির জন্য গভীর মনোযোগের সাথে নামাজ আদায় করা গুরুত্বপূর্ণ।

মনোযোগের সাথে নামাজ আদায়ের চারটি পরামর্শ সংক্ষেপে আলোচনা করা হল-

 

সচেতন থাকা

আপনি যখন নামাজের জন্য দাঁড়াবেন, তখন আপনি পূর্ণমাত্রায় সচেতন থেকে নামাজ আদায় করুন। নামাজের মধ্যে প্রতিটি পদক্ষেপে আপনি স্মরণ করুন যে কী কারণে, কোন উদ্দেশ্যে এক সর্বশক্তিমান সত্ত্বার সম্মুখে আপনি দাঁড়িয়েছেন।

নামাজের মধ্যে আপনার এমন ধ্যানের সহিত সচেতন থাকা প্রয়োজন, যেনো আপনি দেখছেন সেই মহান ক্ষমতাশালী স্বত্তাকে, যার সম্মুখে আপনি দাঁড়িয়েছেন, নতুবা অন্তত তিনি আপনাকে দেখছেন এবং আপনার প্রতিটি পদক্ষেপ লক্ষ্য করছেন।

 

অর্থ জেনে বুঝে পড়া

নামাজে যা কিছু পড়া হয়, তার অর্থসমূহ যদি শিখে নিয়ে জেনে বুঝে অর্থের প্রতি খেয়াল রেখে পড়া যায়, তাহলে নামাজে মনোযোগ বাড়ার সাথে সাথে আল্লাহর সাথে সম্পর্কও সুদৃঢ় ও সুনিবিড় হবে।

 

ধীরস্থিরভাবে আদায়

নামাজের সব কাজগুলো সময় নিয়ে ধীরে ধীরে স্থিরতার সাথে সম্পন্ন করলে তা নামাজের মনোযোগ বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। সময় নিয়ে রুকু করা, সময় নিয়ে সিজদাহ করা, দুই সেজদাহর মাঝখানে সময় নিয়ে বসা- ইত্যাদি রোকনগুলো ধীরস্থিরভাবে সময় নিয়ে সম্পন্ন করলে নামাজের ভেতর মনকে স্থির রাখা সহজ হবে।

 

দোয়ায় বিভিন্নতা

নামাজের দোয়া সমূহের বিভিন্নতা নামাজে মনোযোগ ও আকর্ষণ বৃদ্ধির জন্য সহায়ক একটি উপায়। নামাজের যে সকল স্থানে আবশ্যকতা নেই যে এই দোয়াটিই পড়তে হবে বা এটিই নির্দিষ্ট, সে সকল স্থানে রাসুলুল্লাহ (সা.) বিভিন্ন সময়ে যে দোয়াসমূহ পাঠ করেছিলেন, সেগুলো শিখে নিয়ে যদি পরিবর্তন করে করে পাঠ করা যায়, তবে নামাজের মধ্যে মন সম্পূর্ণভাবে স্থির থাকবে এবং নামাজ একঘেয়েমিপূর্ণ রুটিন ওয়ার্ক না হয়ে বরং যথার্থই ইবাদতে পরিণত হবে। এবং এই নামাজ হবে আল্লাহর সাথে নিবিড়তম সম্পর্ক তৈরির মাধ্যম।