যে কারণে দোয়া কবুল হয় না, নামাজ আদায় করলেও

যে কারণে দোয়া কবুল হয় না, নামাজ আদায় করলেও

নামাজ মুসলিমদের ইবাদত-বন্দেগীর অন্যতম একটি অংশ। ইসলাম ধর্মে পাঁচটি স্তম্ভের প্রথমটিই হলো নামাজ। আমরা অনেকেই নিয়মিত নামাজ আদায় করি। আল্লাহ তায়ালার কাছে নিজের পাপ কাজের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করি এবং সাহায্য চাই। কিন্তু আমাদের দোয়া কি কবুল হচ্ছে?

 

আমরা রোজা রাখা ও নামাজ পড়ার পরও যদি মিথ্যা কথা বলার বা নানা পাপের অভ্যাস ছাড়তে না পারি, তাহলে বুঝতে হবে যে আমাদের নামাজ-রোজা কবুল হচ্ছে না। আর নামাজ-রোজা কবুল হচ্ছে না বলে আমাদের অন্য কোনো দিকেও অগ্রগতি হচ্ছে না।

 

মানবপ্রকৃতির অনিবার্য চাহিদা হলো- অর্থ-সম্পদের প্রতি টান ও ভালোবাসা। এটা মানুষের স্বভাবজাত প্রবণতা। এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে কারিমে ইরশাদ করেন, ‘এবং তোমরা ধন-সম্পদকে প্রাণভরে ভালোবাস।’ -সূরা আল ফজর : ২০

 

ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিতে হালাল উপার্জন ও সৎপথে রোজগার একটি প্রশংসনীয় কাজ। আল্লাহতায়ালা কোরআনে কারিমে এর নির্দেশ প্রদান করেছেন। এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, হে মানবমন্ডলী, পৃথিবীর হালাল ও পবিত্র বস্তুসামগ্রী ভক্ষণ করো। আর শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না; সে নিঃসন্দেহে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। -সূরা আল বাকারা : ১৬৮

 

অন্যদিকে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘নিজ হাতের উপার্জিত খাবারই হচ্ছে সর্বোৎকৃষ্ট। আল্লাহর নবী দাউদ (আ.) নিজ হাতের কামাই খেতেন।’ –সহিহ বোখারি

 

ইসলামি শরিয়তের বিধান হলো, হারাম উপার্জনকারীর কোনো আমল আল্লাহতায়ালার কাছে কবুল হয় না। তার দোয়া কবুল হয় না। কোনো বরকত থাকে না তার সম্পদে। এক হাদিসে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘হে সাদ! পবিত্র খাবার গ্রহণ করো, তাহলে তোমার দোয়া কবুল হবে। সেই সত্তার কসম, যার হাতে মুহাম্মদের প্রাণ; বান্দা যখন তার মুখে হারাম উপায়ে কোনো খাবার গ্রহণ করে, আল্লাহ ৪০ দিন তার কোনো আমল কবুল করেন না। আর যে ব্যক্তি বেড়ে ওঠে অবৈধ সম্পদ আর হারাম উপার্জিত অর্থে, তার জন্য জাহান্নামের আগুনই উত্তম।’

 

অসৎ ও অবৈধ উপায়ে অর্জিত সম্পদের দান-সদকাও কবুল হয় না। সুদ-ঘুষ, চুরি-ডাকাতি আর হারাম ব্যবসা-বাণিজ্যের অর্থ-সম্পদের দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য প্রত্যাশা করা যায় না। হাদিসে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘পবিত্রতা ছাড়া নামাজ আর চুরি ও আত্মসাতের সম্পদের সদকা কবুল হয় না।’ –সহিহ মুসলিম

 

এদিকে, তওবা করলে মহান দয়াময় আল্লাহ তার অধিকার সংক্রান্ত যে কোনো পাপ ক্ষমা করবেন, এমনকি তা যদি শির্কের মত কঠিন গোনাহও হয়ে থাকে। কিন্তু কেউ যদি কোনো বান্দাহ’র অধিকার লঙ্ঘন করে থাকে তাহলে ওই ব্যক্তির অধিকার ফিরিয়ে দেয়া বা তার সন্তুষ্টি অর্জন না করা পর্যন্ত মহান আল্লাহ নিজেও এমন ব্যক্তিকে ক্ষমা করবেন না।