আমরা সকলেই জানি রমজানে রাতের ইবাদতগুলো অন্য যেকোনো মাসের তুলনায় সহজ ও গুরুত্বপুন। কেননা সাহরি ও তারাবির জন্য রাতে দীর্ঘক্ষণ জাগ্রত থাকা হয়। রমজানের রাতে সহজে পালন করা যায় সহিহ হাদিসে বর্ণিত এমন তিনটি আমল নিম্নে তুলে ধরা হলো—
১. সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত : বদরি সাহাবি আবু মাসউদ আনসারি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি রাতে সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত তিলাওয়াত করে, তবে তা তার জন্য যথেষ্ট হবে। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫০৪০)
‘তার জন্য যথেষ্ট হবে’ বাক্যটির ব্যাখ্যায় একদল আলেম বলেন, এই দুই আয়াত তাহাজ্জুদের বিপরীতে যথেষ্ট হবে।
অন্যরা বলেন, আয়াতদ্বয় রাতের বেলা শয়তান, জিন ও মানুষের ক্ষতি থেকে রক্ষায় যথেষ্ট হবে। (শরহুন নববী : ৬/৯১)
২. সুরা মুলক : আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, কোরআনে ৩০ আয়াতবিশিষ্ট একটি সুরা আছে। যে সুরাটি কারো পক্ষে সুপারিশ করলে তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়। সুরাটি হলো—তাবারাকাল্লাজি বিয়াদিহিল মুলক। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ২৮৯১)
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, যে ব্যক্তি প্রতি রাতে তাবারাকাল্লাজি পাঠ করবে আল্লাহ তার বিনিময়ে তাকে কবরের শাস্তি থেকে রক্ষা করবেন। আমরা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর যুগে এই সুরাকে ‘মানিআ’ (প্রতিহতকারী বা রক্ষাকারী) বলতাম। (সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ১০৫৪৭)
৩. সাইয়িদুল ইস্তিগফার : শাদ্দাদ ইবনুল আউস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি দিনে (সকালে) দৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে এ ইস্তিগফার পড়বে আর সন্ধ্যা হওয়ার আগেই সে মারা যাবে, সে জান্নাতি হবে। আর যে ব্যক্তি রাতে (প্রথম ভাগে) দৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে এই দোয়া পড়ে নেবে আর সে ভোর হওয়ার আগেই মারা যাবে, সে জান্নাতি হবে।
আর সাইয়িদুল ইস্তিগফার হলো বান্দার এই দোয়া পড়া—(উচ্চারণ) ‘আল্লা-হুম্মা আনতা রাব্বি লা ইলা-হা ইল্লা আনতা খালাকতানি, ওয়া আনা আবদুকা ওয়া আনা আলা আহদিকা ওয়া ওয়াদিকা মাসতাতাতু, আউজুবিকা মিন শাররি মা সানাতু। আবুউ লাকা বিনিমাতিকা আলাইয়া ওয়া আবুউ বিজাম্বি ফাগফিরলি ফাইন্নাহু লা ইয়াগফিরুজ জুনুবা ইল্লা আনতা। ’
অর্থ : হে আল্লাহ! তুমি আমার প্রতিপালক। তুমিই আমাকে সৃষ্টি করেছ। আমি তোমারই গোলাম। আমি যথাসাধ্য তোমার সঙ্গে কৃত প্রতিজ্ঞা ও অঙ্গীকারের ওপর আছি। আমি আমার সব কৃতকর্মের কুফল থেকে তোমার কাছে আশ্রয় চাচ্ছি। তুমি আমার প্রতি তোমার যে নিয়ামত দিয়েছ তা স্বীকার করছি। আর আমার কৃত গুনাহের কথাও স্বীকার করছি। তুমি আমাকে ক্ষমা কোরো। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬৩০৬)