বিয়ে একটি পারিবারিক বন্ধন। বিয়ের মাধ্যমেই একজন নর ও একজন নারী পূর্ণতা লাভ করে। বিয়ে হল সেই রীতিনীতি বা প্রথা বা চুক্তি, যার মধ্য দিয়ে সমাজ একজন পুরুষকে একজন নারীর সঙ্গে অতিঘনিষ্ঠভাবে বসবাস, সুখ-দুঃখ ও হাসি-কান্না, দৈহিক চাহিদা ভাগাভাগি করার বৈধ অনুমতি।
আমাদের সমাজে অনেক প্রেমিক-প্রেমিকা কোর্ট ম্যারেজ বা নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে বিয়ে করে থাকেন। আইনের দিক থেকে এই কোর্ট ম্যারেজ অধিকার আদায়ের ক্ষেত্রে কতটা নির্ভরশীল সে সম্পর্কে কোনো সঠিক ধারণা না রেখেই অনেকেই আবেগকে প্রশ্রয় দিয়ে এই কোর্ট ম্যারেজ করে থাকেন। কোর্ট ম্যারেজ বা আদালতের মাধ্যমে বিয়েকে পূর্ণাঙ্গ বিয়ে ভেবে থাকেন অনেকেই। কিন্তু এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল।
যদি বিয়ে নিবন্ধন করা না হয়, তা হলে আইনগত কোনো ভিত্তি থাকে না। নিবন্ধন বা কাবিননামা যদি না থাকে, তবে অ্যাফিডেভিটে আইনগত অধিকার আদায় করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। এ ছাড়া সাক্ষীর উপস্থিতি ছাড়া কখনই বিয়ে সম্পন্ন হবে না। বিয়েতে সাক্ষীর উপস্থিতি আবশ্যক।
মুসলিম বিবাহ ও তালাক (নিবন্ধন) আইন ১৯৭৪ অনুযায়ী, মুসলিম বিয়ের ক্ষেত্রে অনেক শর্ত রয়েছে। এগুলো না মানলে বিবাহ সম্পন্ন হবে না। অনেকেই জানেন না যে কোর্ট ম্যারেজের পর বিয়ের নিবন্ধনের প্রয়োজন আছে। এ ছাড়া কোর্ট ম্যারেজের পর কোন বিষয়গুলো বিবাহ সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে অবশ্যই পালনীয়। কোর্ট ম্যারেজ নিয়ে পাঠকের জন্য থাকছে গুরুত্বপূর্ণ অনেক বিষয়-
বিয়ে নিবন্ধন কী?
কার সঙ্গে কার কত তারিখে কোথায়, কত দেনমোহর ধার্য, কী কী শর্তে বিয়ে সম্পন্ন হল, সাক্ষী ও উকিলের নাম প্রভৃতির একটি হিসাব সরকারি নথিতে লিখে রাখাই হল নিবন্ধন। ধারা ৫(২) অনুযায়ী, বিয়ে নিবন্ধন করার দায়িত্ব মূলত বরের। বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে বিয়ে নিবন্ধন করা বাধ্যতামূলক। অন্যথায় এই আইনের ধারা ৫(৪) অনুযায়ী, কাজী ও পাত্রের দুই বছর পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদণ্ড অথবা তিন হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয় ধরনের সাজার বিধান রাখা হয়েছে।
বিয়ে নিবন্ধন
অনেকের ছেলেমেয়ে পারিবারিক কোনো অনুমতি ছাড়াই নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী কোর্টে গিয়ে বিয়ে করে থাকেন। এক্ষেত্রে বিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। মুসলিম বিবাহ ও তালাক (নিবন্ধন) আইন-১৯৭৪ অনুযায়ী, মুসলিম বিয়ের ক্ষেত্রে নিবন্ধন আবশ্যক।
উপযুক্ত সাক্ষীর উপস্থিতি
মুসলিম বিবাহ ও তালাক (নিবন্ধন) আইন-১৯৭৪ অনুযায়ী, মুসলিম বিয়ের ক্ষেত্রে উপযুক্ত সাক্ষীর উপস্থিতিতে ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে বিয়ে সম্পন্ন করতে হবে।
প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া
ছেলে ও মেয়েকে অবশ্যই প্রাপ্তবয়স্ক হতে হবে। এ ছাড়া প্রতিটি বিয়ে অবশ্যই নিবন্ধন করতে হবে।