স্ত্রীর সাথে কোন ধরনের- ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ দ্বীন বা জীবনব্যবস্থা। আধ্যাত্মিক নীতি, স্বরাষ্ট্র নীতি, পররাষ্ট্র নীতি, সমরনীতি, বাণিজ্য নীতি, সাংস্কৃতিক নীতি ইত্যাদির মতো মুসলমানদের যৌনজীবনের নির্দেশনাও দেয় ইসলাম।
ইসলামী যৌনশিক্ষা হচ্ছে মুসলমানদের প্রধান ধর্মগ্রন্থ কুরআন, ইসলামের সর্বশেষ নবী মুহাম্মাদ (দ.) এর হাদিস, ইসলামিক নেতৃবৃন্দ কর্তৃক প্রদত্ত ফতোয়া দ্বারা জায়েজ গণ্য হয় এমন যৌন আচরণ।
ইসলামী ফিকাহশাস্ত্র যৌনকর্মের সময় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পূর্বরাগের (পারস্পারিক উত্তেজনায় অংশ নেয়া) কোনও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে না। কিন্তু যৌনসঙ্গমের একটি ক্ষেত্র যা সাধারণত নিষিদ্ধ, তা হলো পায়ুসঙ্গম।
অথচ আমাদের দেশের স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামী যৌনশিক্ষা সম্পর্কে আলোচনা করা হয় না বলে এবং পাশ্চাত্যের বিভিন্ন পর্ন ভিডিও দেখে অনেক মূর্খ ব্যক্তি স্ত্রীর সাথে নাজায়েজ এই যৌনসঙ্গমে লিপ্ত হন।
শিয়া-সুন্নি নির্বিশেষে সকল মুসলিম মুজতাহিদ এই বিষয়ে একমত যে, নিজ স্ত্রীর সাথেই একমাত্র সঙ্গম বৈধ এবং পায়ুকাম নিষিদ্ধ। তবে কুরআনের একটি আয়াতের (বাক্বারা-২২৩ ) অপব্যাখ্যার কারণে কিংবা হাদিসশাস্ত্রে জ্ঞান না থাকায় এই বিষয়ে অনেকে ভুল ধারণা পোষণ করে থাকে।
তাই এই বিষয়ের সাথে সম্পর্কিত যে সকল হাদিস রয়েছে, তা তুলে ধরছি।তাফসিরে বর্ণিত আছে যে, মদিনার ইহুদিরা বলতো যে, ‘কেউ যদি তার স্ত্রীর সাথে পেছন দিক থেকে জরায়ুপথে সঙ্গম করে, তবে তার সন্তান ট্যাড়া চোখ নিয়ে জন্মাবে।’
সে সময় একদিন ওমর ইবনুল খাত্তাব নবী মুহাম্মাদ (দ) এর কাছে এসে বললেন, “হে আল্লাহর রাসুল! আমি ধ্বংস হয়ে গিয়েছি!” মুহাম্মাদ (সা) প্রশ্ন করলেন, “কি তোমাকে ধ্বংস করেছে?”
তিনি উত্তরে বললেন, “গত রাতে আমি আমার স্ত্রীকে পেছন দিকে ঘুরিয়ে ফেলেছিলাম।” (অর্থাৎ তিনি পেছন দিক থেকে তার স্ত্রীর সাথে জরায়ুপথে সহবাস করেছিলেন)। নবীজি (দ) তাকে কিছু বললেন না। এরপর এ প্রসঙ্গে নিম্নোক্ত আয়াত অবতীর্ণ হলো-
“তোমাদের স্ত্রীরা তোমাদের শস্যক্ষেত্র, অতএব তোমরা তোমাদের শস্যক্ষেত্রে যেভাবে ইচ্ছা যেতে পারো।” কুরআন , বাক্বারা, ২২৩
উক্ত আয়াতে স্ত্রীর সাথে জরায়ুপথে সঙ্গমকে শস্যক্ষেত্রে বীজ বপনের সাথে তুলনা করে এটি নির্দেশ করা হয়েছে যে, ইসলামে ইচ্ছেমতো যেকোন পন্থায় শুধুমাত্র জরায়ুপথেই সঙ্গম করাকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে, কারণ শস্যক্ষেত্রে বীজ বপনের ফলে যেমন ফসল উৎপন্ন হয় ঠিক সেভাবে জরায়ুপথে সঙ্গমের ফলেই সন্তানের জন্ম হয়।
এ আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পর নবী মুহাম্মাদ (দ) ওমর বিন খাত্তাবকে ডেকে উত্তর দেন, “সামনে বা পেছনে যে কোন দিক থেকে (নিজের স্ত্রীর সাথে জরায়ুপথে সংগম কর), কিন্তু পায়ুপথকে পরিহার কর এবং রজস্রাবকালে সঙ্গম থেকে বিরত থাকো।” (আহমাদ এবং তিরমিজী হতে বর্ণিত)
সুতরাং কুরআন ও হাদিসের বিচারে পায়ুপথে স্ত্রীসঙ্গম ইসলামে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।