এক ডলারে বিশ্বে কোথায় কী খেতে পারবেন

এক ডলারে বিশ্বে কোথায় কী খেতে পারবেন

এক ডলার, আজ ভারতীয় মুদ্রায় 64.90 টাকা। হিসেবের সুবিধার জন্য ধরে নিচ্ছি 65 টাকা। এখন এই এক ডলার বা ভারতীয় মুদ্রায় 65 টাকাতে গোটা বিশ্বে আপনি কী কী খাবার পেতে পারেন।

আপনি উত্তর, দক্ষিণ বা মধ্যভারত যেখানেই থাকুন একবেলা পেট ভরে খাওয়ার জন্য আপনাকে 65 টাকাও খরচ করতে হবে না। তার থেকে কমেও আপনার উদরপুর্তি হয়ে যেতে পারে। কিন্তু বিশ্বের বাকি অংশে ছবিটা কেমন একবার দেখে নিন।

ইন্দোনেশিয়া: ইন্দোনেশিয়ায় আপনি এক ডলারে পেতে পারেন বুবুর আয়াম। চাল ও মুরগির মাংস দিয়ে তৈরি এই পদ ইন্দোনেশিয়ার প্রথাগত খাবার। এই পদ ইন্দোনেশিয়ানরা সকাল, রাত্রি বা দুপুরের খাবার হিসেবে খান।

জাপান: জাপান বিশ্বের ব্যায়বহুল দেশগুলির মধ্যে একটি। তাই জাপানে এক ডলারে আপনি বিশেষ কিছু আশা করবেন না। এক ডলারে টোকিও বা জাপানের অন্যত্র একটি স্নিকার্স বার ছাড়া বিশেষ কিছু পাবেন না। এতে খিদে না মিটলে আপনাকে গুনতে হবে আরও বেশি কিছু অর্থ।

তানজানিয়া:  চিপসি মায়াই, তানজানিয়ায় আপনি এক ডলারে পেয়ে যাবেন এই সুস্বাদু খাবার। চিপসি মায়াই হল আলু ও ডিমের মিশ্রনে তৈরি ওমলেট। তানজানিয়ার মানুষ একে জেগে (Zege)-ও বলেন। কেউ কেউ চিপসি মায়াই পেঁয়াজ অন্যান্য উপকরণ মেশান স্বাদ বাড়ানোর জন্য। গরম গরম পরিবেশন করা হয় কাচুম্বারির (পূর্ব আফ্রিকার সালাড)-এর সঙ্গে।

আমেরিকা: বিশ্বের ব্যায়বহুল দেশগুলির মধ্যে অন্যতম আমেরিকা। সেখানেও আপনাকে পেট ভরাতে একটু বেশি খরচ করতে হবে। তবে একটা মাঝারি সাইজের পিত্সার স্লাইস আপনি পেতে পারেন এক ডলারে। এতে যদি চালিয়ে নিতে পারেন তবে ঠিক আছে, না হলে পকেট আর একটু খুলতে হবে।

ইজিপ্ট: চাল, মটরশুঁটি, টমেটো সস, উদ্ভিজ্জ তেল, পেঁয়াজ, জিরা দিয়ে তৈরি এক ধরনের মিশ্র পদ কুশারি। এই মিশরের এই প্রথাগত খাবারের মাঝারি একটা প্লেট আপনি পেয়ে যেতে পারেন এক ডলারে। তবে মাঝারি প্লেট হলেও যেহেতু তুলনায় ভারি খাবার তাই পেট ভরতে অসুবিধা হবে না। কেউ কেউ এটিকে মুরগির মাংস, গরম সস, রসুন রস, ভিনেগার, ছোট স্প্যাগেটি দিয়েও তৈরি করেন স্বাদ বাড়ানোর জন্য।

পেরু: পেরুতে আপনি এক ডলারে পেয়ে যাবেন আজি দে গালিনা। মূলত এটি মুরগির মাংসের স্ট্যু। তৈরি করতে ব্যবহার করা হয় ক্রিম, পনির ও মরিচ গুঁড়ো(আজি), চিনা বাদাম দিয়ে।

নেপাল: নেপালে আপনি এক ডলার মূল্যে পেয়ে যাবেন এক প্লেট মোমো। সেই প্লেটে পাবেন 10টি চিকেন বা ভেজ মোমো। তাই মোমো খেতে আপত্তি না থাকলে নেপালে এক ডলার খরচে আপনার পেটে ভরে যাবে।

হংকং:  হংকংয়ে আপনি এক ডলারে বিশেষ কিছু খাবার পাবেন না। পেতে পারেন মাত্র একটি কোল্ড ড্রিংক্সের ক্যান।

ইউনাইটেড কিংডম: লন্ডন বা ব্রিটেনে আপনি এক ডলারে একটি রুটির বেশি কিছু পাবেন না। তাই আরও বেশি কিছু খেতে চাইলে খরচ করতে হবে আরও একটু বেশি।

হাঙ্গেরি:  হাঙ্গেরিতে আপনি এক ডলারে পেয়ে যাবেন কুর্টোসকালাক বা কুর্টোস কালাচ নামের পেস্ট্রি। ময়দা, চিনি, দুধ, মাখন, ডিম, খামির, লবণ দিয়ে তৈরি এই পেস্ট্রি আপনার স্বল্প খিদে মেটাতে সক্ষম।

দক্ষিণ কোরিয়া: এখানে ভেজিটেবল কিম্বাপ রোল পেয়ে যাবেন আপনি এক ডলারে। কিম্বাপ রোল তৈরি হয় মূলত এক ধরনের সামুদ্রিক শেওলা, চাল, ডাল, কিছু কোরিয়ান মশলা, গাজর, ডিম, তিলের তেল, সামুদ্রিক লবন দিয়ে।

উত্তর কোরিয়া: উত্তর কোরিয়ায় আপনি এক ডলারে পেতে পারেন এক বোতল দুধ।

দুবাই: দুবাইয়ে আপনি এক ডলারে পাবেন শাওয়ার্মা রোল। এই রোল তৈরি হয় মুরগি, টার্কি, গরু বা ভেড়ার মাংস দিয়ে। তার সঙ্গে থাকে মেশানো থাকে সবজি ও মশলা। এই শাওয়ার্মাকে আপনি রোল বা স্যান্ড্যুইচের আকারে পেতে পারেন।

ফ্রান্স: ফ্রান্সে এক ডলারে আপনি পেতে পারেন মাত্র একটি বুগেট। ময়দার তৈরি এক প্রকার লম্বা-পাতলা ধরনের রুটি।

চেক রিপাবলিক: এখানে এক ডলারে আপনি একটি ছোট পাব থেকে এক গ্লাস বিয়ার পেতে পারেন। তার বেশি কিছু চাইলে খরচ করতে হবে আরও একটু বেশি।

ইতালি: এক ডলারে ইতালিতে আপনি পেতে পারেন এক কাপ এসপ্রেসো। এসপ্রেসো এক ধরনের কফি।

ভারত: এক ডলার বা প্রয়া 65 টাকায় ভারতে কী খাবার পাওয়া যেতে পারে তা নিয়ে বড়সড় গবেষণাপত্র তৈরি হতে পারে। যে কোনও বড় শহরে এই পরিমান টাকায় আপনি ছোট দোকানে পেটপুরে খেয়ে আসতে পারেন ভারতীয়, চাইনিজ বা মোগলাই, রোল ইত্যাদি। এমনকি আপনার দুপুর বা রাত্রের খাওয়ারও হয়ে যাবে এই এক ডলার মূল্যের টাকায়। কলকাতায় এমনও জায়গা আছে যেখানে আপনি 35 টাকায় মাছ-ভাত, তার পর 20 টাকার ফ্রুট সালাড ও 10 টাকায় শেষপাতে মিষ্টি মুখও করে নিতে পারেন।

ভারতের বাকি অংশেও 65 টাকায় আপনি দুপুর বা রাত্রের খাবারের থালি পেয়ে যেতে পারেন অনায়াসে।