স্বাভাবিক যৌন জীবন কী?

স্বাভাবিক যৌন জীবন কী?

মানুষের যৌনতার বিষয়টি খুবই জটিল। খাবারের রুচির মতো মানুষের যৌন চাহিদার মধ্যেও রয়েছে নানা ভিন্নতা। এই চাহিদা দেশ থেকে দেশে, ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে এবং দিন থেকে দিনে ভিন্ন রকম হয়।

এ কারণে মানুষের যৌনতার কোনো একটি বিষয়কে প্রমাণ হিসেবে ধরে এটিই স্বাভাবিক যৌন জীবন এমন সংজ্ঞা দেয়া বোকামি। মানুষের যৌনতার পার্থক্যটা এমন যে শুধুমাত্র একটি জরিপ দ্বারা বেশিরভাগ মানুষের যৌনতাকে বর্ননা করা যায় না। এজন্যই মানুষের যৌনতার ধরণকে বর্ননা করতে কয়েকটি তথ্য উপাত্তের সাহায্য নিয়েছে বিবিসি।

তবে এটাও যে বেশি মানুষের চাহিদার প্রতিফলন কিংবা এর মাধ্যমে বেশিরভাগের যৌনতা সম্পর্কে ধারণা করা যাবে সেটা বলা যাবে না। কারণ, যৌনতা নিয়ে করা কোনো জরিপই খুব একটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। যৌনতা মানুষের মধ্যে এখনও একটি ট্যাবু থাকার কারণে জরিপে অংশগ্রহণকারীরা কখনোই তাদের সত্যকে প্রকাশ করতে চান না। সুতরাং এই জরিপ তথ্যগুলো অকাট্য সত্য নয়। তবে এগুলোকে দিয়ে ২১ শতকের মানুষের যৌনতা সম্পর্কে কিছু ধারণা নেয়া সম্ভব।

মানুষের যৌনতার ধরণকে উপস্থাপন করা খুবই কঠিন। যেমন বিভিন্ন জরিপের তথ্যানুযায়ী, সমকামী মানুষের পরিমাণ এক থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত। এট নির্ভর করে আপনি কাকে জিজ্ঞেস করছেন, কীভাবে জিজ্ঞেস করছেন এবং যাদের জিজ্ঞেস করছেন তাদের চাহিদা, ব্যবহার এবং পরিচয় পরীক্ষা করে দেখছেন কিনা? এসব কথা সত্বেও বিশ্বব্যাপী সম্প্রতি করা কিছু জরিপে দেখা গেছে, কিছু মানুষ আসলে কোনো লিঙ্গের প্রতিই যৌন চাহিদা অনুভব করেন না। আর এই যৌন চাহিদাহীন মানুষের সংখ্যা দিনান্তরে বাড়ছে। জরিপ তথ্যগুলো অনুযায়ী, পুরুষ এবং নারীদের মধ্যে যৌন চাহিদাহীন মানুষের সংখ্যা ০.৪ থেকে ৩ শতাংশ।

সকলের মধ্যেই একটি ধারণা প্রচলন আছে যে মানুষের বেশিরভাগ যৌনসঙ্গীই থাকেন তাদের অপরিচিত। তবে ধারণাটির বেশিরভাগটাই ভুল। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের এক জরিপ অনুযায়ী, অপরিচিত মানুষের সাথে রাত কাটানো মানুষের সংখ্যা খুবই কম।

১৮ ঊর্ধ্ব ৫০ হাজার মানুষের উপর জরিপ পরিচালনা করে গ্লোবাল সেক্স সার্ভের তথ্যানুযায়ী ৭০ ঊর্ধ্ব মানুষদের ৫০ শতাংশই এখনও সপ্তাহে একবার কিংবা দুইবার যৌন মিলন করেন এবং ১১ শতাংশ অন্যান্যদের মতোই স্বাভাবিক যৌন জীবন যাপন করেন।

উপরোক্ত জরিপটি করা হয়েছে দুই মানুষকে নিয়ে যাদের জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল ‍যে সর্বশেষ যৌন মিলনের সময় আপনি কী ধরণের মিলন করেছেন। প্রশ্নের উত্তরে ৮৬ শতাংশ নারী এবং ৮০ শতাংশ পুরুষ বলেছেন ভ্যাজাইনাল মিলনের কথা, ৬৭ শতাংশ নারী এবং ৮০ শতাংশ পুরুষ বলেছেন ওরাল সেক্সের কথা এবং সাড়ে তিন শতাংশ নারী ও ৯ শতাংশ পুরুষ বলেছেন অ্যানাল সেক্সের কথা।

কানাডার এক অনলাইন জরিপের তথ্যানুযায়ী, সমকামি নারীদের যৌনমিলনের সময়কাল সবচাইতে বেশি এবং তা ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট পর্যন্ত, বিষমকামী দম্পত্তিদের ক্ষেত্রে ১৫ থেকে ৩০ মিনিট এবং সমকামি পুরুষদের ক্ষেত্রে ১৫ থেকে ৩০ মিনিট।

ধারণা করা হয় যে বীর্যপাত নিয়ে শুধুমাত্র নারীরাই মিথ্যাচার করেন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের এক জরিপ তথ্যানুযায়ী ২৫ শতাংশ পুরুষ এবং ৫০ শতাংশ নারী বীর্যপাত নিয়ে মিথ্যাচার করেন।