আজকাল ব্যবসায় প্রশাসনে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর একটি ডিগ্রী থাকলে পেশাগত জীবনে নিজেকে নিরাপদ ভাবেন অনেকে।
সেকারণে প্রাচ্য কিংবা পাশ্চাত্যের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ বিষয়টি নিয়ে পড়াশোনার ব্যাপক আগ্রহ লক্ষ্য করা যায়।
এমনকি বাংলাদেশেও পরিস্থিতি ভিন্ন নয়।
কিন্তু ভবিষ্যতে উদ্যোক্তা কিংবা বড় কোন কর্পোরেশনের নামী চাকুরে হবার জন্য একটি দামী এমবিএ কতটা জরুরী?
ভালো একটি প্রতিষ্ঠান থেকে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রী পেতে আজকাল হাজার হাজার ডলার খরচ হয়ে যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের নামী বিশ্ববিদ্যালয় কলাম্বিয়া বিজনেস স্কুলে মাষ্টার্স অব বিজনেস এ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা এমবিএ ডিগ্রীর জন্য আপনাকে খরচ করতে হবে প্রায় দেড় লাখ ডলার। আর সেটি বইপত্র বা থাকা-খাওয়ার খরচ বাদেই।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এত দামী এমবিএ ডিগ্রীধারী ছেলেমেয়েরা পেশাজীবনে কতটা সফল?
কলাম্বিয়া বিজনেস স্কুলের এসোসিয়েট ডিন মাইকেল মেলন বলছেন এখানকার শিক্ষার্থীরা বিশ্বের অন্য যেকোন প্রতিষ্ঠানের ছেলেমেয়েদের চেয়ে বেশি সফল।
“আমরা কলাম্বিয়া বিজনেস স্কুলের সফলতা বছরের পর বছর ধরে পর্যবেক্ষণ করছি। আমরা দেখেছি যে, তারা চাকরি বা নিজস্ব ব্যবসায়িক উদ্যোগ-যেখানেই যাচ্ছে সফল হচ্ছে। যা কেবল রোজগারের হিসাবেই নয়, আমার বিচারে তাদের ক্যারিয়ারে এই ডিগ্রী এক অমূল্য অবদান রাখছে”।
ভালো চাকরীর জন্য দামী এমবিএ কতটা জরুরী?
কলাম্বিয়া বিজনেস স্কুল থেকে পাশ করা গ্রাজুয়েটদের বেতন শুরু এক হাজার ডলার থেকে।
এই প্রতিষ্ঠানের এমবিএ ডিগ্রীর বাজারমূল্য বেশ উঁচু। গত বছর এখান থেকে গ্রাজুয়েট হয়ে যারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি শুরু করেছেন, তাদের মাসিক বেতনের অংকটি শুরু হয়েছিল এক হাজার ডলারের ওপরে।
কিন্তু সমালোচকেরা বলছেন, পেশাগত জীবনে সফল হবার জন্য নামী প্রতিষ্ঠানের এমবিএ ডিগ্রীর কোন দরকার নেই। সে তো বিল গেটস, স্টিভ জবস কিংবা মার্ক জাকারবার্গের দিকে তাকালেই বোঝা যায়।
তাছাড়া বহু বিজনেস স্কুলের পাঠ্যসূচীকেই যুগোপযোগী নয় বলে সোজাসুজি খারিজ করে দেন অনেক সমালোচক। তাদের বক্তব্য জীবনে সফল হবার জন্য অত্যাবশ্যকীয় ব্যপার যে নেতৃত্বের গুনাবলী, সেটি কি ক্লাশরুমে শেখানো যায়?
কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিএ’র ছাত্র কেন উইন সম্প্রতি এক বন্ধুর সঙ্গে মিলে নিজেই শুরু করেছেন খাবারের ব্যবসা।
নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রীটি এক্ষেত্রে তাকে কতটা সাহায্য করবে সেটি ঠিক নিশ্চিত নন কেন।
কেন উইন বলছেন, “আমি আসলে এক ধরনের চ্যালেঞ্জ নিয়েছি। একদম ছোট্ট একটু বিনিয়োগ দিয়ে শুরু করেছি। নতুনভাবে কিছু করার চেষ্টা করছি। আশা করি এটিকে এক সময় অনেকদূর এগিয়ে নিতে পারব”।
“এজন্য কেবল দরকার অদম্য মনোবল। আর সেটি আপনাকে কোন এমবিএ ডিগ্রী দিতে পারবেনা। উদ্যোক্তা হবার জন্য এমবিএ ডিগ্রীর দরকার পড়েনা”।
সম্প্রতি নিজের প্রতিষ্ঠান ‘সসি সসে’ বেশি সময় দেবার জন্য আপাতত পড়াশোনায় সাময়িক বিরতি টেনেছেন কেন।
যদিও জানিয়েছেন, এখনো এমবিএ শেষ করার ইচ্ছে রয়েছে তার.
তবে তা যদি নাই হয়, তাহলে তিনি অন্তত প্রথম উদ্যোক্তা হবেননা যিনি নিজের স্বপ্নের উদ্যোগকে সফল করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের করিডর ছেড়ে বাস্তবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে নেমেছেন।