বেশ কয়েক বছর আগেও উৎসবের আগের দিন বাড়ির তরুণীরা মেহেদি পাতা পাটায় বেটে হাতে লাগাতো। সেই পাটায় বাটা মেহেদি দিয়ে হাতের মাঝখানে গোল নকশা অথবা পাতার নকশা করে মেহেদি পরার প্রচলন ছিল। সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে পরিবর্তন এসেছে মেহেদি দেয়ার নকশায়। তবে ঈদ এলেই হাত রাঙানো চাই মেহেদিতে।
সময়ের সঙ্গে সব কিছুতে লেগে পরিবর্তনের ছোঁয়া। এ কারণে বাজারে এসেছে নানা রকম নকশা সমৃদ্ধ টিউব মেহেদি। এখন সবাই হাতে মেহেদি লাগায় বাহারি সব নকশা দিয়ে। এগুলো দিয়ে আপনি খুব সহজেই মনের মতো করে ডিজাইন করতে পারেন। টিউবজাত মেহেদি সাধারণত তৈরি হয় কাঁচা মেহেদি পাতা ও বিভিন্ন হারবাল উপাদানের সংমিশ্রণে। তাই খুব সহজেই এ মেহেদিতে হাত রঙিন করা যায়।
ঈদের মাত্র কয়েক দিন বাকি। ঈদ উৎসবকে কেন্দ্র করে সবাই নিজের সাধ্যমত কেনাকাটার চেষ্টা করছেন। ঈদের নতুন পোশাক আর পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে অনুষঙ্গ। আর সবশেষে কেনাকাটার তালিকা থেকে মেহেদিটা বাদ পড়ে না কিছুতেই। ঈদের সাজে নতুন প্রাণ আনে মেহেদি। ঈদের আগের দিন তরুণীরা চাঁদ দেখার পর সবাই প্রস্তুতি নেয় হাতে মেহেদি দেয়ার। ঈদের সকালে মেহেদির সদ্য রঙে সাজানো হাত দেখলে পরিবেশটায় বদলে যায়। তাইতো মেহেদি রাঙা হাত ছাড়া ঈদ যেন অকল্পনীয়।
সাধারণত বাড়ির এক সদস্য অন্য সদস্যের হাতে মেহেদি লাগিয়ে দেয়। মেহেদি লাগাতে গিয়ে কখন যে রাত শেষ হয়ে যায়, বোঝাই যায় না। এ থেকে বাদ যায় গৃহবধুরা। তারাও মেহেদিপাতা বেটে মেহেদি লাগায় নিজেদের হাতে। এই মেহেদি উৎসবের আনন্দ থেকে বাদ যায় না ছেলেরাও। তারাও হাতে মেহেদি লাগায়।
প্রতিবারের মতো এবারও নগরীর বিভিন্ন বিউটি পার্লারের পাশাপাশি বিভিন্ন বিপণি কেন্দ্র এমনকি ফ্যাশন হাউসেও আয়োজন করা হয়েছে মেহেদি উৎসবের। টিউব মেহেদির পাশাপাশি অনেক বিউটি পার্লারে ভেষজ মেহেদিও ব্যবহার করা হয়। কেউ কেউ কনুই পর্যন্ত মেহেদি লাগাতে পছন্দ করেন। তবে জমকালো ডিজাইনের চেয়ে হালকা ও সহজ ডিজাইনে এখনকার তরুণীদের আকর্ষণ বেশি। বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মেহেদি পাওয়া যাচ্ছে ৪০টাকা থেকে ২০০ টাকার মধ্যে।
মেহেদি কেনার বা পড়ার সময় কিছু বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি। যেমন, বাজারে এখন অনেক ধরণের আকর্ষণীয় গোল্ড মেহেদি পাওয়া যাচ্ছে। যেগুলো হাতে লাগালে পাঁচ মিনিটেই রঙ হয়ে যায়। এ ধরনের মেহেদি হাতের ক্ষতি করতে পারে। এসব মেহেদির রঙও স্থায়ী হয় না। তাই বিজ্ঞাপন দেখে এ ধরনের মেহেদি না কেনাই ভালো। মেহেদি কেনার সময় ভালোভাবে মেয়াদ উত্তীর্ণ দেখে নেবেন। হাতে মেহেদি লাগানোর আগে ভালোভাবে হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে শুকিয়ে নেবেন। হাতের মেহেদি শুকিয়ে গেলে শুকনো মেহেদি তুলে হাতে ভালোভাবে তেল লাগাবেন। এতে মেহেদির রঙ গাঢ় হবে। এছাড়া শিশুদের কোমল হাতে মেহেদি ব্যবহারে ক্ষেত্রে সর্তকতা অবলম্বন করা উচিৎ। তাই বড়দের উচিৎ ছোটদের যতটা সম্ভব কেমিক্যালমুক্ত মেহেদি হাতে দিয়ে দিতে। কারণ, শিশুর ত্বক কোমল ও নাজুক। কেমিক্যালযুক্ত মেহেদি শিশুর ত্বকের জন্য সহায়ক নয়, চর্মরোগ বা অ্যালার্জি দেখা দিতে পারে। সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।