স্যালাড হবে, অথচ সেই স্যালাডে শশা থাকবেনা তা সম্ভব নয়। খাওয়ার পাতে স্যালাড না হলেও শুধু শশা পেঁয়াজ অনেকেই খান।
সবজির দিক দিয়ে শশা, সহজলভ্য এবং সুলভ। এই সবজিটির ব্যবহার কিন্তু শুধু স্যালাডের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখা উচিৎ নয়। স্বাস্থ্যরক্ষার পাশাপাশি শশা আমাদের ত্বক এবং চুলের জন্যও সমানভাবে উপকারী। লো ক্যালরি এবং ডায়েট্রি ফাইবারে সমৃদ্ধ এই সবজিটি তাই স্থান করে নিয়েছে, রূপ সচেতন নারীদের ডায়েট চার্টে। এবার আসুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক শশার বিভিন্ন গুণাগুন এবং ব্যবহার সম্পর্কে।
তৈলাক্ত ত্বকের জন্য শশা খুব ভাল টোনার হিসেবে কাজ করে। মুখ ধোয়ার পর শুধু শশার রস টোনার হিসেবে মুখে লাগাতে পারেন অথবা একে আরো কার্যকরী করতে শশার রসের সাথে আপেল সাইডার ভিনেগার, টমেটোর রস এবং অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে নিতে পারেন।
শশাতে থাকা ব্লিচিং প্রপার্টিজ ত্বকের রোদে পোড়া ভাব দূর করে ত্বক উজ্জ্বল এবং স্কিন টোন সমান করে। বাইরে থেকে এসে মুখ ধুয়ে শশার রস লাগান। এটি সান বার্ন দূর করবে।
একটি শশা ব্লেন্ডারে ভাল মতো ব্লেন্ড করে পেস্ট তৈরী করে দু’চামচ লেবুর রস এবং এক চা চামচ মধু মিশিয়ে মুখে এবং ঘাড়ে লাগান। ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাকটি ত্বকের রুক্ষভাব দূর করে চেহারা উজ্জ্বল করে।
শশার ৯৫% উপাদানই হচ্ছে জল।এর ফলে শশা খাওয়ার মাধ্যমে ত্বক হাইড্রেটেড এবং ময়েশ্চারাইজড থাকে। শশার দানাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই এবং পটাশিয়াম। যা, ফাইন লাইন্স, রিংকেল সহ বার্ধক্যের বিভিন্ন ছাপ দূর করে ত্বককে উজ্জ্বল এবং যৌবনদ্বীপ্ত রাখে।
ডার্ক সার্কেল কমাতে শশা বেশ কার্যকর। শশাতে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এবং সিলিকা চোখের ডার্ক সার্কেল কমিয়ে চোখের চারপাশের স্কিন ভাল রাখে। শশা স্লাইস করে কেটে অথবা তুলোর মধ্যে শশার রস লাগিয়ে তুলো চোখের উপর ২০ মিনিট রাখুন। নিয়মিত ব্যবহারে ডার্ক সার্কেল কমবে। এছাড়াও শশাতে থাকা এসকরবিক অ্যাসিড এবং ক্যাফেইক অ্যাসিড চোখের ফোলাভাব দূর করতেও বেশ কার্যকরী।
তৈলাক্ত ত্বকের ক্ষেত্রে কাঁচা হলুদ, লেবুর রস এবং শশা পেস্ট একসাথে মিশিয়ে প্যাক তৈরী করুন। মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রাখুন। শুকিয়ে গেলে মুখ ভাল করে ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাকটি স্কিনের অতিরিক্ত তেল নিয়ন্ত্রণ করে।
শুষ্ক ত্বকের ক্ষেত্রে এক চা চামচ ওটমিল এবং পরিমাণ মত শশা পেস্ট একসাথে মিশিয়ে আধা ঘণ্টা রেখে দিন। মুখে এবং ঘাড়ে মিশ্রণটি ভালো মত মেখে ২০ মিনিট রাখুন। চাইলে এর সাথে মধুও যোগ করতে পারেন। মধু ত্বক ময়েশ্চারাইজড রাখবে।
বয়সের ছাপ লুকাতে দুই টেবিল চামচ টক দই, আধা চামচ মধু এবং লেবুর রসের সাথে দুই চামচ গ্রেট করা শশা এবং দুটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল ভাল মতো মেশান। এবার এটি মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রেখে জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাকটি ফাইন লাইন্স, রিংকেল দূর করে ত্বক টানটান এবং সুন্দর করে।
শশাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে সিলিকা যা নখ শক্ত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। তাই নিয়মিত শশা খাওয়ার মাধ্যমে নখ ভাঙ্গা কমে গিয়ে নখ শক্ত হয়।
ব্রোনর সমস্যা দূর করতে দুই চা চামচ শশার রসের সাথে গোলাপ জল এবং মুলতানি মাটি মিশিয়ে প্যাক তৈরী করুন। এটি মুখে ভাল মতো লাগিয়ে ১৫ মিনিট রেখে হালকা গরম জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে ব্রন কমে যাবে।
চুলের বৃদ্ধিতে শশার ভুমিকা অতুলনীয়। সালফার সোডিয়াম, সিলিকন, ফসফরাস এবং ক্যালসিয়াম এই সবগুলো উপাদানই শশাতে রয়েছে।যেগুলো চুলের বৃদ্ধির জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় কিছু নিউট্রিয়েনটস। এছাড়াও, এটি চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে। শশা, টমেটো ইত্যাদি ব্লেন্ডারে মিক্স করে জুস বানিয়ে খেতে পারেন।