এতদিন ধরে ‘পদ্মাবত’ নিয়ে গোটা দেশ জুড়ে চলছিল বিবাদের ঝড়। যদিও সেই ঝড় এখনও থামেনি, কারণ কর্ণি সেনা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে “যতদিন না প্রত্যেকটা সিনেমা হলে ‘পদ্মাবত’ দেখানো বন্ধ হবে ততদিন আমরা আমাদের প্রতিবাদ চালিয়ে যাব। ” তবুও বিশেষজ্ঞ থেকে শুরু করে সাধারণ দর্শক যাঁরাই এখনও পর্যন্ত ‘পদ্মাবত’ দেখেছেন তাঁরা প্রত্যেকেই বলেছেন এ ছবি প্রকৃতই রাজপুতদের বীরগাথা। তাই ‘পদ্মাবত’ নিয়ে বিবাদ করার মতো কোনও কারণ এই ছবিতে নেই।
তবে এত ঝামেলা সত্ত্বেও এই ছবির যে বিষয়টা লোকের চোখ এড়িয়ে যায়নি সেটা হল আলাউদ্দিন খিলজির ভূমিকায় রণবীর সিং-এর অভিনয়। অনেক দর্শক তথা বিশেষজ্ঞ বলেছেন, এ ছবি রণবীর সিং-এর ছবি। গোটা সিনেমা জুড়ে তিনি যতক্ষণ স্ক্রিনে থেকেছেন, ততক্ষণ এক মুহূর্তের জন্য নজর অন্য কোনও দিকে ঘোরানো যায়নি।
এবার নিজের এই পারফরমেন্স নিয়ে মুখ খুললেন স্বয়ং রণবীর সিং। তিনি জানিয়েছেন, এই ছবির জন্য সঞ্জয় লীলা বনশালি যখন তাঁর কাছে এসেছিলেন, তখন তাঁর সমস্ত কাছের মানুষেরা তাঁকে আলাউদ্দিন খিলজির এই চরিত্রটা করতে বারণ করেছিলেন। এমনকি ইন্ডাস্ট্রির অনেকেই তাঁকে বলেছিলেন হিরো যদি একবার নেগেটিভ চরিত্র করতে শুরু করে তবে সে আর কোনওদিন হিরোর চরিত্রে ফিরে আসতে পারে না। কিন্ত তিনি তখন কারোর কথা শোনেননি। তাঁর সেই মুহূর্তে মনে হয়েছিল আলাউদ্দিন খিলজির চরিত্রে যে ডার্ক শেডটা রয়েছে, সেটা তাঁর মতো করে আর কেউ ফুটিয়ে তুলতে পারবে না। তাই দ্বিতীয়বার না ভেবেই তিনি সঞ্জয় লীলা বনশালিকে হ্যাঁ বলে দিয়েছিলেন।
এরপর শুরু হয়েছিল তাঁর পরিশ্রম। আলাউদ্দিন খিলজির চরিত্র পর্দায় ফুটিয়ে তোলার জন্য তিনি নিজেকে সকলের থেকে আলাদা করে ২১ দিন গৃহবন্দি রেখেছিলেন। এইসময় তিনি খিলজিকে নিয়ে লেখা বই পড়তেন, তথ্যচিত্র দেখতেন এবং চেষ্টা করতেন খিলজির উচ্চাকাঙ্ক্ষা, লোভ, ধান্দাবাজিগুলোকে নিজের মধ্যে ফুটিয়ে তুলতে। এমনকি খিলজির হাঁটাচলা, কথা বলা, যুদ্ধ করার ভঙ্গিও তিনি প্রতিনিয়ত অনুশীলন করতেন আর এভাবেই একদিন তিনি মনে মনে প্রকৃত খিলজি হয়ে উঠেছিলেন, যার প্রতিফলন আমরা দেখতে পাই পর্দায়।
তিনি আরও বলেছেন “আমার খিলজি হয়ে ওঠার রাস্তাটা খুজ সহজ ছিল না ঠিকই, কিন্ত আজ যখন সকলে আমার কাজ নিয়ে প্রশংসা করছে তখন আমার আর ওই পরিশ্রমটাকে সার্থক বলে মনে হচ্ছে। এখন আমি সত্যি খুব আনন্দিত। সঞ্জয় স্যারকে ওরকম একটা চরিত্র দেওয়ার জন্য আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।