আলোচনা যখন যখন ত্বকের সৌন্দর্য নিয়ে, তখন একটা বিষয় মাথায় রাখা জরুরি যে ভিতর থেকে যদি ত্বককে সুন্দর করে তোলা না যায়, তাহলে যতই কসমেটিক্স ব্য়বহার করুন না কেন, ত্বক কিন্তু সুন্দর হয়ে উঠবে না! তাই দীর্ঘ মেয়াদি সৌন্দর্য পেতে ত্বককে ভিতর থেকে সুন্দর করে তুলতে হবে। আর এমনটা করবেন কীভাবে? এক্ষেত্রে কতগুলি নিয়ম প্রতিদিন মেনে চলতে হবে। এমনটা করতে পারলেই দেখবেন খাতায় কলমে বয়স বাড়লেও ত্বকের বয়স বাড়বেই না। সেই সঙ্গে সৌন্দর্যও বৃদ্ধি পাবে চোখে পরার মতো!
প্রসঙ্গত, যে যে নিয়মগুলি এক্ষেত্রে মেনে চলা জরুরি, সেগুলি হল…
১. ডায়েটের দিকে নজর দিতে হবে:
কথায় বলে “ইউ আর ওয়াট ইউ ইট”। সহজ কথায় আপনার শরীর কতটা ভাল থাকবে, তা পুরোটাই নির্ভর করবে কী ধরনের খাবার আমরা খাচ্ছি, তার উপর। তাই ত্বককে ভিতর থেকে সুন্দর করে তুললে বেশি করে ফল এবং সবুজ শাক-সবজি খেতে হবে। সেই সঙ্গে রোজের ডায়েটে রাখতে হবে মাছের মতো ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবারকে। এখানেই শেষ নয়, রোজের ডায়েটে রাখতে হবে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার, যেমন ডিম এবং চিকেনকে। কারণ এই উপাদানগুলি ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
২. পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খেতে হবে:
ত্বককে সুন্দর করে তুলতে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খাওয়া জরুরি। কারণ শরীরে জলের পরিমাণ বাড়তে থাকলে দেহের অন্দরে জমে থাকা টক্সিক উপাদানেরা বেরিয়ে যেতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই শরীর এবং ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে। প্রসঙ্গত, পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খেলে অসময়ে বলিরেখা প্রকাশ পাওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়। ফলে ত্বক বুড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা যায় কমে!
৩. ঘুমের কোটায় যেন ঘাটতি না হয়:
আপনার ত্বক কতটা সুন্দর দেখাবে, তা অনেকাংশেই নির্ভর করে কতটা সময় ঘুমাচ্ছেন তার উপর। কারণ পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমলে শরীর এবং ত্বক নিজেকে সারিয়ে তোলার সুযোগ পায়। সেই সঙ্গে মস্তিষ্কের অন্দরে স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেতে সময় লাগে না। এখন প্রশ্ন হল ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতে কত সময় ঘুমানোর প্রয়োজন রয়েছে? চিকিৎসকেদের মতে শরীর এবং ত্বককে চাঙ্গা রাখতে দৈনিক ৭-৮ ঘন্টার ঘুম জরুরি।
৪. কেমিকালের মাত্রা বেশি রয়েছে এমন কসমেটিক্স থেকে দূরে থাকুন:
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে মাত্রাতিরিক্ত কেমিকাল রয়েছে এমন কসমেটিক্স বেশি মাত্রায় ব্যবহার করা শুরু করলে সাময়িকভাবে ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেলেও আদতে কিন্তু স্কিনের মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যায়। ফলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ধীরে ধীরে ত্বকের স্বাস্থ্যের এত মাত্রায় ক্ষতি হয় যে সৌন্দর্য কমতে সময় লাগে না।
৫. শরীরচর্চা করা মাস্ট:
একথা প্রমাণিত হয়ে গেছে যে সপ্তাহে কম করে ৩-৪ ঘন্টা শরীরচর্চা করলে সারা শরীরে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের প্রবাহ বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে শরীর থেকে টক্সিক উপাদানেরা বেরিয়ে যেতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ত্বকের সৌন্দর্য বাড়তে সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, নিয়মিত শরীরচর্চা করলে এন্ডোর্ফিন নামক একটি হরমোনের ক্ষরণও বেড়ে যায়। এই কারণেও ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটতে সময় লাগে না।
৬. সানস্ক্রিন লাগাতে ভুলবেন না:
যখনই আমরা সান স্ক্রিন ছাড়া বাড়ির বাইরে বেরই, তখনই অতিবেগুনি রশ্মির খারাপ প্রভাব পরার আশঙ্কা বাড়ে। সেই সঙ্গে বাড়ে ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও। তাই ত্বককে যদি দীর্ঘদিন সুন্দর রাখতে চান, তাহলে ভুলেও বাড়ির বাইরে যাওয়ার আগে সানস্ক্রিন লাগাতে ভুলবেন না। প্রসঙ্গত, ডার্মাটোলজিস্টদের মতে ত্বককে সুন্দর রাখতে “এস পি এফ ৩০” সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। তাই এবার থেকে সানস্ক্রিন কেনার আগে এই বিষয়টি মাথায় রাখবেন কিন্তু!
৭. স্ট্রেস কমাতে হবে:
ত্বকের সৌন্দর্য কমে যাওয়ার পিছনে যে যে কারণগুলি দায়ি থাকে, তার মধ্যে অন্যতম হল স্ট্রেস। তাই ত্বককে যদি ভিতর থেকে সুন্দর করে তুলতে হয়, তাহলে স্ট্রসকে নিয়ন্ত্রণ রাখতে ভুলবেন না যেন! আর এই কাজটি করবেন কীভাবে? খুব সহজ! নিয়মিত ৩০ মিনিট প্রাণায়ম করার চেষ্টা করুন। দেখবেন উপকার মিলবেই মিলবে!