শ্রীদেবীর ২১০ কোটি টাকা- ভারতীয় সিনেমা জগৎ ‘দেবী’-হারা! অকাল-প্রয়াণে স্তব্ধ গোটা দেশ। দুবাইয়ে এক অনুষ্ঠানে গিয়ে শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) আচমকা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় কিংবদন্তি অভিনেত্রীর।
বর্ণময় ক্যারিয়ারে করেছেন প্রায় তিনশরও উপর ছবি। নিজের সময়ে একসময় তিনিই ছিলেন ‘হায়েস্ট পেড’ অভিনেত্রী। পুরুষতান্ত্রিক বলিউডে মহিলাদের ‘অধিকার’ ছিনিয়ে নেওয়ার লড়াইয়েও ‘সামিল’ রূপসী অভিনেত্রী।
তাকে বলা হতো নায়িকাদের মধ্যে ‘অমিতাভ বচ্চন’। যাই হোক, তার ব্যক্তিগত সম্পত্তির পরিমাণ কিন্তু আকাশছোঁয়া!
রুপলি পর্দা থেকে ‘অবসর’ নিলেও প্রত্যাবর্তন ঘটিয়েছিলেন কয়েকবছর আগে ‘ইংলিশ ভিংলিশ’ ছবির মাধ্যমে। হিন্দি ছাড়াও শ্রীদেবীকে দেখা গেছে তামিল, তেলুগু, মালয়ালম, কানাড়া ছবিতে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে জানানো হয়েছে, স্বামী বনি কাপূর ও শ্রীদেবীর সম্পত্তির পরিমাণ ৩৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ২১০ কোটি টাকা।
শ্রীদেবী নিজে যেমন ডাকসাইটে অভিনেত্রী হিসেবে তিন দশক চুটিয়ে রাজত্ব করেছেন, তেমনই বনি কাপূর বলিউডের বিখ্যাত প্রযোজক। দু’জনের সম্পত্তি তাই এমন বিপুল হওয়া আশ্চর্যের কিছু নয়।
এত সম্পত্তি স্বাভাবিকভাবেই পাবেন মেয়েরা, কিন্তু তা কী কোনোদিন মায়ের অভাব পূরণ করতে পারবে?
আরও পড়ুনঃ
যে ছবিগুলোর মাঝে চিরকাল বেঁচে জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্রীদেবী
বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্রীদেবী। যিনি মাত্র ৪ বছর বয়স থেকে অভিনয় শুরু করেন। তামিল, তেলেগু, মালায়ালাম, কন্নড় এবং হিন্দি ভাষার সিনেমায় অভিনয় করেছেন এই অভিনেত্রী।
ভারতীয় অভিনেত্রীদের মধ্যে নায়ক ছাড়া বক্স অফিস হিট সিনেমা উপহার দিতে সক্ষম অভিনেত্রীদের একজন ছিলেন শ্রীদেবী।
১৯৭৮ সালে বলিউড সিনেমায় শ্রীদেবীর অভিষেক হয়। দীর্ঘ প্রায় পাঁচ দশকের ক্যারিয়ারে তিনশ সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। গ্যালারির পাতায় রইল শ্রীদেবী অভিনীত সেরা কয়েকটি ছবির খোঁজ। যে ছবিগুলোর মাঝে চিরকাল বেঁচে থাকবেন তিনি।
ইংলিশ ভিংলিশ (২০১২): বিয়ের পর অভিনেত্রীদের সেকেন্ড ইনিংস নাকি তেমন সফল হয় না। এই মিথকে ভেঙেছেন মিস ‘হাওয়া হাওয়াই’। ২০১২ সালে মুক্তিপাওয়া গৌরী শিন্ডের ‘ইংলিশ ভিংলিশ’ ছবিতে ‘শশী’ চরিত্রে শ্রীদেবীর অভিনয় মাতিয়ে দিয়েছিল সিনেপ্রেমীদের। বক্স অফিসে চূড়ান্ত সাফল্য পায় এই ছবি।
মম (২০১৭): কামব্যাকের পর শ্রীদেবী অভিনীত সেরা ছবিগুলির একটি রবি উদিয়া পরিচালিত ‘মম’। ছবিটি সন্তানের প্রতি অবিচারের বিরুদ্ধে একজন মায়ের লড়াইয়ের কাহিনী। মায়ের ভূমিকায় শ্রীদেবীর অভিনয় মুগ্ধ করে দর্শককে।
সদমা (১৯৮৩): ত্যাগরাজনের প্রযোজনায় এবং বালু মহেন্দ্র-র পরিচালনায় ১৯৮৩ সালে তৈরি হয় সদমা। শৈশবে স্মৃতিশক্তি হারিয়ে যাওয়া এক মেয়ের চরিত্রে দেখা যায় তাকে। শ্রীদেবী এবং কমল হাসন অভিনীত এই ছবিটি বলিউডে ক্লাসিক ছবির তকমা পায়।
নাগিনা (১৯৮৬): এক ইচ্ছাধারী নাগিনের চরিত্রে শ্রীদেবীর অসাধারণ অভিনয় মুগ্ধ করেছিল দর্শককে। অমরেশ পুরীর বীণের তালে তালে ‘ম্যায় তেরা দুশমন’ গান এখনও লোকের মুখে মুখে ফেরে।
মিস্টার ইন্ডিয়া (১৯৮৭): আটের দশকে বক্স অফিস কাঁপানো ছবি ‘মিস্টার ইন্ডিয়া’। সেই সময় দাঁড়িয়ে শেখর কাপুরের ছবিটির কনসেপ্ট দর্শকমহলে খুবই জনপ্রিয় হয়।
চাঁদনী (১৯৮৯): যশ চোপড়ার ‘চাঁদনী’ এক সময় বক্স অফিসে সব রেকর্ড ভেঙে দেয়। পর্দায় ঋষি কাপুর এবং শ্রীদেবীর রোমান্স মুগ্ধ করেছিল আট থেকে আশিকে।
চালবাজ (১৯৮৯): পঙ্কজ পরাশর পরিচালিত ‘চালবাজ’ ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৮৯ সালে। ছবিটিতে ‘অঞ্জু’ এবং ‘মঞ্জু’ নামে যমজ বোনের চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায় শ্রীদেবীকে। ছবিটিতে একই সঙ্গে দু’টি ভিন্ন চরিত্রের স্বাদ এনে দেন শ্রীদেবী।
খুদা গাওয়া (১৯৯২): অমিতাভ বচ্চন ও শ্রীদেবী অভিনীত ‘খুদা গাওয়া’ মুক্তি পেয়েছিল ১৯৯২ সালে। নাজির আহমদ এবং মনোজ দেশাইয়ের ‘খুদা গাওয়া’ বক্স অফিসে দারুণ সাড়া জাগিয়েছিল।
লমহে (১৯৯১): ‘লমহে’তে শ্রীদেবী ও অনিল কাপুরের অনস্ক্রিন রোমান্স পছন্দ করেছিলেন দর্শকরা। জানেন কী, সে ছবিতে শ্রীদেবীর বিপরীতে অভিনয় করার জন্য তার রিয়েল লাইফ পার্টনার বনি কাপুরকে অফার করেছিলেন যশ চোপড়া? ছবিটি দুর্দান্ত সাফল্য পায় বক্স অফিসে।
জুদাই (১৯৯৭): রাজ কানওয়ারের ‘জুদাই’ ছবিতে এক লোভী গৃহবধূর চরিত্রে শ্রীদেবীর অভিনয় ছিল দুর্দান্ত। ছবিটিতে নেগেটিভ চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায় শ্রীদেবীকে।
শাহরুখ খানের রেড চিলিজ প্রোডাকশনের ‘জিরো’ ছবিতে শেষ অভিনয় করতে দেখা যাবে শ্রীদেবীকে। আনন্দ এল রাইয়ের পরিচালনায় এই ছবিতে অভিনয় করেছেন শাহরুখ নিজে।