বলিউডের অলিতে গলিতে ছড়ানো আছে মিঠুন-শ্রীদেবীর বিয়ের মুখরোচক গল্প। একটা সময় তাদের সম্পর্কে ভাঙন আসে। আলাদা হয়ে যান তারা। শ্রীদেবী অনেকটা জেদের বশেই বিয়ে করেন প্রযোজক বনি কাপুরকে। মিঠুনও অন্য জায়গায় সংসার পাতেন। তারপর দীর্ঘদিন আর মুখোমুখি হননি মিঠুন-শ্রীদেবী।
বলিউড তাদের আর কখনোই একসঙ্গে দেখার সুযোগও পাবে না। কারণ, জীবনের মায়া কাটিয়ে পরপারে চলে গেছেন শ্রীদেবী। তার আকস্মিক মৃত্যু শোকে স্তব্দ গোটা বলিউড পাড়া। সেই শোক এড়াতে পারেননি এককালের প্রেমিক মিঠুন চক্রবর্তীও। শ্রীদেবীর মৃত্যুর পর মুখ খুললেন মিঠুন চক্রবর্তী। হয়তো তার প্রিয় মানুষটির জন্যই।
শ্রীদেবী সম্পর্কে মিঠুন বলেন, ‘মেয়ে হিসেবে অত্যন্ত ভদ্র -সভ্য , মার্জিত, রুচিশীল। দক্ষিণী শিক্ষিত , রক্ষণশীল পরিবারের মেয়েরা যেমন হয়, ঠিক সে রকম। শুটিংয়ে দেখতাম চুপচাপই থাকত। কোনো ছ্যাবলামি, ইয়ার্কি নেই। ফালতু কথা বলা নেই। প্রফেশনাল। কাজটুকুই ছিল ওর ধ্যান। অন্যথায় মা-বোনের সঙ্গেই সময় কাটাত। ওর বোন লতার সঙ্গেও আমার খুব ভালো বন্ধুত্ব ছিলো। খুবই মজার মেয়ে। মাকে ছাড়া লতার সঙ্গে থাকলেই দেখতাম, শ্রীদেবীর ভিতরের একটা ছেলেমানুষি সত্তা যেন জাগ্রত হত। ‘স্টার নায়িকা’র খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসত।’
ভারতীয় গণমাধ্যমে শ্রীদেবীর সঙ্গে পরিচয়ের গল্প শোনাতে গিয়ে মিঠুন বলেন, ‘জাগ উঠা ইনসান’ ছবিটি করার সময় প্রযোজক জানালেন ছবির নায়িকা শ্রীদেবী। শুনে খুব খুশি হয়েছিলাম। কারণ শ্রীদেবী তখন ‘হটেস্ট’ নায়িকা। ওর অভিনয়, হাসি আর নাচে সম্মোহি হিন্দি ছবির দর্শক। ওর সবগুলো ছবি আমার দেখা হয়নি। তবে জানতাম, আমার সঙ্গে ছবি করার বহু আগে থাকতেই ওর লক্ষ ফ্যান। সেই মেয়েই শুটিং চলাকালীন জানাল, ও নিজেই নাকি আমার ফ্যান। ‘ডিস্কো ড্যান্সার’ ছবিটা দেখেছে অন্তত কুড়িবার। জানি না, তবে এটুকু জানি, মনের ভাললাগা ব্যক্ত করতে ওর বিন্দুমাত্র সঙ্কোচ ছিল না। পরিষ্কার মনের মেয়ে। কোনো কিছু ভালো লাগলে, পরিষ্কার জানাত। অহংকার ওর মধ্যে কখনো ছিলো না। কেউ বলতে পারবে না। ছিলো যেটা আত্মসম্মানবোধ।’
কেন ভেঙ্গে গেল সম্পর্কটা এমন প্রশ্নের জবাবে মিঠুন বললেন, ‘দায়বদ্ধতা। জানি না, সত্যি জানি না। তবে এটুকু জানি, সেই ‘দায়’ কখনও আমি মেটাতে পেরেছি, কখনও হয়তো পারিনি। আর এই পারা, না-পারার মাঝেই আমার আর শ্রী-র সম্পর্কে তৈরি হল একটা দূরত্ব। বাকিটুকু কেবলই মন খারাপের স্মৃতি। আমি ওকে চিরকাল মনে রাখবো। শ্রীও আমাকে মনে রেখেছে, সে আমি জানি।’