সোহম-শুভশ্রী 'হানিমুন', বক্স অফিস কালেকশন, রিভিউ

সোহম-শুভশ্রী 'হানিমুন', বক্স অফিস কালেকশন, রিভিউ

হানিমুন – পরিচালনা: প্রেমেন্দু বিকাশ চাকী

অভিনয়: রঞ্জিত মল্লিক, সোহম, শুভশ্রী, রুদ্রনীল, পার্থসারথি

৩/৫

 

বক্স অফিস- মোটামুটি ভাল।

 

গল্প ভাল হলেই শুনতে ইচ্ছা করবে এমন নয়। আসলে গল্পের থেকেও অনেক সময় গল্পকার বড় হয়ে যান। তবে কিছু কিছু গল্প থাকে, যেগুলো যেই বলুন দিনের শেষে শুনতে ভাল লাগে। পরিচালক প্রেমেন্দু বিকাশ চাকী পরিচালিত হানিমুন সিনেমাটা দ্বিতীয় ধরনের। গল্পটা তেমন ভালভাবে বলা হয়নি, কিন্তু দিনের শেষে ভালই লেগেছে।

 

সিনেমার গল্পটা কিছুটা এই রকম- কাজপাগল অফিস বস মি. ভট্টাচার্য (রঞ্জিত) ও তার কর্মচারী গীতিনের (সোহম) পরিবারকে কেন্দ্র করে এগোয় ছবির গল্প। গীতিন বিয়ের পর হনিমুনে যাওয়ার তোড়জোড় করলেও বসের দখলদারিতে সেই সুযোগ আর হয়ে ওঠে না। স্ত্রী জয়তীর (শুভশ্রী) ক্রমাগত চাপে পড়ে, অফিসে অসুস্থতার মিথ্যে গল্প ফেঁদে স্ত্রীকে নিয়ে বেরিয়ে পড়ে গীতিন। কিন্তু উত্তরবঙ্গে হনিমুন উপভোগ করতে গিয়ে ঘটনাক্রমে ফের বসের খপ্পরে পড়ে যায় গীতিন! তার পরেই শুরু হয় নানা রকম কর্মকাণ্ড!

 

এই গল্পটা বড় পর্দায় দেখাতে গিয়ে অনেক কিছু ঘেঁটে গিয়েছে। সিনেমার পরিচালক ভাল, চিত্রনাট্য বাল। কিন্তু সোহম, শুভশ্রী-র পারফরম্যান্স বেশ চড়া। অথচ কৌতুক ও ভাঁড়ামোর মধ্যে সূক্ষ্ম ফারাক বজায় রাখাটাই যে কোনো কমেডি ছবির আসল সাফল্য। সেটা শুভশ্রী-সোহমের জন্য কোথাও একটা ব্যাঘাত ঘটেছে। তবে এই ছবির সম্পদ নিঃসন্দেহে রঞ্জিত মল্লিক। বর্ষীয়ান অভিনেতা দীর্ঘদিন পর অভিনয়ের মূলস্রোতে ফিরে অক্ষুণ্ণ রেখেছেন নিজের ফর্ম। তাঁর বলিষ্ঠ অভিনয় নজর কাড়ে। অন্য দিকে রুদ্রনীলকেও বেশ লাগে। স্যাভির মিউজিক ভাল।

 

এটাই পরিচালকের প্রথম ছবি। আর প্রথম ছবিতে ভালই কাজ করলেন প্রেমেন্দু। অবশ্য কখনও কখনও চিত্রনাট্য যে এই সরু সুতো পেরোয়নি তা নয়, তবে অধিকাংশ সময়ই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পেরেছেন পরিচালক প্রেমেন্দু বিকাশ চাকী। সিনেমা হলে বেশ কয়েকবার হাসির রোল উঠল, হাততালি পড়ল। এটাই বা কম কিসের।

 

সমরেশ বসুর গল্প অবলম্বনে এই ছবির প্লট নির্মাণ করা হয়েছে। তবে গল্প যে কৌতুকের খোরাক জোগায়, সেটাই সিনেমার পরদায় তুলে ধরা বেশ কঠিন। এখানেই উতরে যায় ছবি। তবে অপর্ণা সেন, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, উৎপল দত্ত অভিনীত ‘ছুটির ফাঁদে’র সঙ্গে এই ছবির মিল অবশ্য অস্বীকার করা যায় না। বিয়ের পর বিপিন তার বউকে নিয়ে হানিমুন করতে যায়। সেখানে গিয়ে বিপাকে পড়ে তারা। কারণ সব হোটেলের রুম বুকড্। এরপরে সরকারি সার্কিট হাউসের কেয়ারটেকারকে ঘুষ দিয়ে তারা একটা ঘরের ব্যবস্থা করবেন। কিন্তু নিজের নাম লুকিয়ে ঘরটি বুক করেন প্রাণেশ নামে। এরপর তাদের সঙ্গে কী কী ঘটবে তাই নিয়েই এই ছবি। পরিচালক প্রেমেন্দু বিকাশ চাকি বলেন, ‘সিনেমার গল্পটা বেশ মজাদার। এক কথায় কমেডি ঘরানার। সমরেশ বসুর ‘ছুটির ফাঁদে’ গল্প অবলম্বনে তৈরি সিনেমার কাহিনি। এতে বিপিন ও জয়ন্তীর নতুন বিয়ে হয়। কিন্তু কাজের চাপে তারা হনিমুনে যাওয়ার সময় পায় না। আর এ নিয়ে তাদের রোজ ঝগড়া হয়। অবশেষে তারা হানিমুনে যায়। সেখানে গিয়ে একজনের সঙ্গে তাদের দেখা হয়। আর এ নিয়ে সিনেমার গল্প।’