কাঠমান্ডুতে ইউএস-বাংলা ফ্লাইটের দুর্ঘটনার তদন্ত্ম শুরম্ন হয়েছে, কিন্তু বিমান দুর্ঘটনার তদন্ত্ম কীভাবে হয়? কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারদের সাথে দুর্ঘটনা-কবলিত ফ্লাইটের পাইলটের কথোপকথনের একটি রেকর্ড ইউটিউবে ছড়িয়ে পড়ার পর দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে নানা জল্পনা চলছে।
কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সোমবারের এই দুর্ঘটনার তদন্ত্মে এই কথোপকথন ছাড়াও নানা দিক খুঁটিয়ে দেখা হবে।
ভারতের এক্সিউটিভ পাইলট ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট এবং বিমান চলাচল বিশেষজ্ঞ ভি কে ভালস্নাহ বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, দুর্ঘটনার পর প্রধানত দুটো দিক দেখা হয় - যন্ত্র বিকল হয়েছিল, নাকি মানুষের ভুল হয়েছিল। 'সাধারণত যন্ত্রের কারণেই অধিকাংশ বিমান দুর্ঘটনা হয়'। তদন্ত্ম শুরম্ন করা হয় বিমান টেক-অফ করারও অনেক আগের ঘটনাপ্রবাহ থেকে।
তিনি বলেন, 'ফ্লাইটের আগে পাইলটকে কী ব্রিফ করা হয়েছিল, আগের দিনগুলোতে ওই বিমানে কোনো ত্রুটি কখনো ধরা পড়েছিল কিনা। ধরা পড়লে সেটা শোধরানো হয়েছিল কিনা। বিমান ওভারলোড ছিল কিনা...ইত্যাদি বহু কিছু। সংশিস্নষ্ট বহু মানুষের সাথে কথা বলা হয়।'
কিন্তু তদন্ত্মের প্রধান দুটো সূত্র- বস্ন্যাক বক্স এবং ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার (এফডিআর)। ইউএস-বাংলা বিধ্বস্ত্ম ফ্লাইটের ধ্বংসাবশেষ থেকে এই দুটো গুরম্নত্বপূর্ণ যন্ত্রই উদ্ধার করা হয়েছে।
বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান এয়ার কমোডর ইকবাল হোসেন বিবিসিকে বলেন, দুর্ঘটনার আগের সমস্ত্ম কথোপকথন বা যান্ত্রিক গোলমালের সমস্ত্ম তথ্য জমা থাকে এই দুটিতে।
'আগুনে পুড়লেও এগুলো নষ্ট হয় না, এবং প্রধানত এই দুটো যন্ত্র থেকে পাওয়া তথ্য থেকে বিমান দুর্ঘটনার কারণ নির্ণয় করা হয়।'
ইকবাল হোসেন জানান, বস্ন্যাক বক্স থেকে তথ্য বের করার সক্ষমতা অধিকাংশ দেশের এখনো নেই। সেক্ষেত্রে সংশিস্নষ্ট দেশগুলো আন্ত্মর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থার (আইকাউ)সহায়তা নিয়ে থাকে।
তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় বিমান চলাচল সংস্থা এফএএ এসব ব্যাপারে সাহায্য করে থাকে।
কমোডর ইকবাল বলেন, যেহেতু বাংলাদেশ এবং নেপালের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের এ ধরনের সক্ষমতা নেই, সুতরাং তারা হয়তো বস্ন্যাক বক্স আইকাও বা এফএএর কাছে নিয়ে যাবে।
তদন্ত্মের দায়িত্ব কার?
কমোডর ইকবাল বলেন, দুর্ঘটনার কারণ নির্ণয়ের প্রধান দায়িত্ব যে দেশে দুর্ঘটনা ঘটে এবং যে দেশের বিমান সেই দুই দেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের। সংশিস্নষ্ট সবার সাথে কথা বলার এবং বস্নাক বক্স বা এফডিআরের তথ্য জানার অধিকার প্রধানত তাদেরই থাকে।
তিনি জানান, প্রতিটি দেশের বেসামরিক চলাচল কর্তৃপক্ষেরই বিশেষ একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি থাকে যাদের প্রধান দায়িত্ব দুর্ঘটনা হলে তার তদন্ত্ম করা।
পাশাপাশি, সংশিস্নষ্ট বিমান পরিবহন সংস্থা, বিমান নির্মাণ প্রতিষ্ঠান বা বীমা কোম্পানিগুলো নিজেরাও দুর্ঘটনার কারণ তদন্ত্ম করে।
কিন্তু দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানের প্রধান দায়িত্ব স্ব স্ব দেশের বিমান পরিবহন নিয়ন্ত্রক সংস্থার।