দ্বিতীয় মেয়াদে তথা আজীবনের জন্য চীনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন শি জিনপিং। এর আগে গতকাল দেশটির ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেস (এনপিসি)-এর ভোটাভুটিতে আগামী পাঁচ বছরের জন্য তাকে নির্বাচিত করা হয়। একইসঙ্গে শি জিনপিং-এর ঘনিষ্ঠ মিত্র ওয়াং কিশানকে ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করা হয়েছে। বেইজিংয়ের গ্রেট হল অব দ্য পিপলসে এ ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হয়।
মাও সে তুং-এর পর চীনের সবচেয়ে ক্ষমতাধর নেতা শি জিনপিং-এর জন্য এই ভোটাভুটি ছিল শুধু আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। কেননা তার ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতে বা আমৃত্যু ক্ষমতায় থাকার পথ প্রশস্ত করতে গত ১১ মার্চ সংবিধান সংশোধন করে সর্বোচ্চ দুই মেয়াদ প্রেসিডেন্ট থাকার বিধান তুলে দেয় ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেস। গতকাল শনিবার কংগ্রেসের তিন হাজার সদস্যের মধ্যে দুই হাজার ৯৭০ জন ভোটাভুটিতে অংশ নেন। এদের কেউই শি জিনপিং-এর বিরুদ্ধে ভোট দেননি। তবে একটি ভোট কম পেয়েছেন ওয়াং কিশান।
এর আগে ২০১৭ সালের অক্টোবরে চীনের ক্ষমতাসীন দল পিপলস পার্টি শি জিনপিংয়ের চিন্তাধারাকে দলীয় গঠনতন্ত্রে স্থান দেওয়ার মধ্য দিয়ে তাকে মাও সে তুংয়ের সমান মর্যাদায় আসীন করে।
২০১২ সালে প্রথম দফায় চীনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন শি জিনপিং। তিনি দেশটির কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর থেকেই শি দেশটির ইতিহাসে ধারাবাহিকভাবে আত্মপ্রত্যয়ী ও নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ববাদী একটি যুগের সূচনা করেন। পরাক্রমশালী দেশ হিসেবে বিশ্বের কাছে চীনের অবস্থান পাকাপোক্ত করতে তিনি সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে সফলতার পাশাপাশি ভিন্নমতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক ধরপাকড়ের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
পুতিনের অভিনন্দন
শি আবারো চীনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় শনিবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। পুতিন এক বার্তায় বলেন, এনপিসি’র এই নিয়োগের মাধ্যমে আরো একবার আপনার উচ্চ মর্যাদা প্রমাণিত হলো। এটা চীনের ক্রমবর্ধমান অর্থনীতি ও সামাজিক উন্নয়ন এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে চীনের জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষায় আপনার অবদানের স্বীকৃতি। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রাশিয়া-চীন সম্পর্ক অভূতপূর্ব উচ্চতায় পৌঁছার বিষয়ে ব্যক্তিগতভাবে অবদান রাখায় রুশ নেতা শি’কে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। পুতিন বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমরা দুটি বড় দেশের মধ্যে কিভাবে সাম্যতার ভিত্তিতে দ্বিপক্ষীয় স্বার্থের ব্যাপক উন্নয়ন ঘটানো যায় তার বাস্তব উদাহরণ তৈরি করেছি। পুতিন শি’র কাছে পাঠানো বার্তায় আরো বলেন, ‘আমি নিশ্চিত যে যৌথ প্রয়াসের মাধ্যমে আমরা রুশ-চীনের সমন্বিত কৌশলগত অংশীদারিত্বের সহযোগিতা আরো জোরদার করতে পারবো।’