তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিশ্বের সবচেয়ে সম্মানজনক পুরস্কার ‘ওয়ার্ল্ড সামিট অন ইনফরমেশন সোসাইটি (ডব্লিউএসআইএস) পুরস্কার-২০১৮’ অর্জন করেছে বাংলাদেশ।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রোগ্রাম কর্তৃক বাস্তবায়িত ‘মুক্তপাঠ’নামক উদ্ভাবনী প্রকল্পটির জন্য এই পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে। ‘মুক্তপাঠ’ (www.muktopaath.gov.bd) হচ্ছে জাতীয় পর্যায় একটি ই-লার্নিং প্লাটফর্ম যার মাধ্যমে যুব সমাজ, নারী, পেশাদার ব্যক্তি, এবং প্রবাসী কর্মীগণ সহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের ব্যক্তিরা শিক্ষিত ও প্রশিক্ষিত হতে পারবেন। এছাড়াও, এটুআই প্রোগ্রামের সার্ভিস ইনোভেশন ফান্ডের সহায়তায় এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ এর বাস্তবায়নে তৈরি ‘অনলাইনে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ এর জন্যে বাংলাদেশ পুলিশ ও এটুআই প্রোগ্রাম যৌথভাবে ডব্লিউএসআইএসপুরস্কার অর্জন করেছে।
ডব্লিউএসআইএস পুরস্কারটি আইটিইউ'র সেক্রেটারি জেনারেল হাওলিন ঝাঁও এর কাছ থেকে গ্রহণ করেন এটুআই প্রোগ্রামের প্রকল্প পরিচালক এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন)।
এসময় আরো ছিলেন এটুআই এর পলিসি অ্যাডভাইজারআনির চৌধুরী, পলিসি স্পেশালিষ্ট (শিক্ষা ইনোভেশন) আফজাল হোসেন, ডঃ রমিজ উদ্দিন, পলিসি অ্যাসোসিয়েট শাহনুর সাব্বির। অনলাইন পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট উদ্যোগের জন্য ডব্লিউএসআইএস পুরস্কার গ্রহণকরেন বাংলাদেশ পুলিশ এর পক্ষ থেকে ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল জনাব হারুন অর রশিদও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (আইসিটি) জনাব মোঃ রুহুল আমিন।
‘জনগণের দোরগোড়ায় সেবা’শ্লোগানকে সামনে রেখে সেবা বঞ্চিতদের কাছে সেবা পৌঁছে দেবার মধ্য দিয়ে পরপর পাঁচ বার জেনেভাস্থ আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) এর ডব্লিউএসআইএস ফোরামে এটুআই প্রোগ্রাম এই বিরল সম্মাননা অর্জন করলো। ডব্লিউএসআইএস হচ্ছে আইসিটি প্রয়োগের মাধ্যমে উন্নয়ন বিষয়ে বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং বৃহত্তম প্লাটফর্ম যার মাধ্যমে আইসিটি প্রয়োগ করে সকলকে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে এবং নিশ্চিত করা হচ্ছে যেন কেউ পিছিয়ে না পরে।
এক দশক আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের ঐতিহাসিক আহ্বানের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশকে একটি জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি হিসেবে গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার এই কার্যক্রম ২০১৪ সালে আইটিইউ এর নজরে আসে এবং সেই বছর তারা দেশব্যাপী ইউনিয়ন পর্যায় ডিজিটাল সেন্টার বাস্তবায়ন প্রকল্পকে ডব্লিউএসআইএস পুরস্কার দেয়।
তখন থেকে এ পর্যন্ত এটুআই প্রোগ্রাম তার ১২টি উল্লেখযোগ্য প্রকল্পের জন্যে ডব্লিউএসআইএস পুরস্কার অর্জন করেছে। তার মধ্যে রয়েছে ‘জাতীয় তথ্য বাতায়ন’ যেখানে সরকারের ৪৩,০০০ অফিসকে এক ছাতার নিচে আনা হয়েছে; ‘ডিজিটাল টকিং বুক’ এর মাধ্যমে ১০০টির অধিক প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের মাঝে তাদের জন্যে অভিগম্য বই প্রদান করা হয়েছে (যা প্রতি বছর ৩১শে ডিসেম্বর জাতীয় পাঠ্যপুস্তক দিবসে প্রধানমন্ত্রীর হাত দিয়ে বিতরণ করা হয়); ‘ই-নথি’ সিস্টেম যার মাধ্যমে সরকারি অফিসের নথি ব্যবস্থাপনাকে ডিজিটাল করা হচ্ছে; ‘নাগরিক সেবায় উদ্ভাবন আনয়নে সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার’ বাড়িয়ে সরকারকে জনগণের আরও কাছে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। ২০১৪ থেকে ২০১৮ এর মধ্যে ডব্লিউএসআইএস পুরস্কার প্রাপ্ত অন্যান্য প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘গ্রামীণ পর্যায় টেলি মেডিসিন সেবা’, ‘সেবা প্রক্রিয়া সহজিকরন’, ‘অনলাইনে পরিবেশ ছাড়পত্র’, ‘শিক্ষক বাতায়ন’, এবং উদ্ভিদ সমস্যা শনাক্তকরণে ‘কৃষকের জানালা’।