শান্তিতে নোবেল পুরস্কারজয়ী মালালা ইউসুফজাই তাঁর নিজ শহরে ফিরেছেন। ২০১২ সালে জঙ্গিগোষ্ঠী তালেবানের সদস্যরা তাঁকে গুলি করেছিল। ওই ঘটনার পর এই প্রথম নিজ শহরে গেলেন মালালা।
মালালা বতমানে যুক্তরাজ্যে থাকেন। নারীশিক্ষার পক্ষে প্রচার চালানোর জন্য তালেবানদের বিরাগ ভাজন হন তিনি। মালালার বাড়ি যে সোয়াত অঞ্চলে, তা একসময় জঙ্গিগোষ্ঠীর বড় ঘাঁটি ছিল। মাত্র ১৫ বছর বয়সে স্কুলবাসে মালালা জঙ্গি হামলার শিকার হন। নিরাপত্তাঝুঁকি থাকায় মালালা সেই ঘটনাস্থলে যাবেন কি না, তা নিশ্চিত না।
গত বৃহস্পতিবার মালালা পাকিস্তান পৌঁছান। এরপর তাঁকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে হেলিকপ্টারে নিজ গ্রাম মিংগোরায় নিয়ে যাওয়া হয়। এত দিন পর বাড়িতে ফিরে আপ্লুত মালালা বলেন, ‘আমি আমার আবেগ ধরে রাখতে পারিনি। কেঁদে ফেলেছিলাম। বাড়ি ফিরে আমি খুব খুশি হয়েছি। এ ভূমিতে আবার পা রাখতে পেরে সত্যিই আনন্দ লাগছে।’মালালা এ দফায় চার দিন পাকিস্তানে থাকবেন।
মালালা ১১ বছর বয়সে ছদ্মনামে বিবিসি উর্দুতে লিখতেন। তালেবানের শাসনে কেমন চলছে দিনযাপন, এই ছিল তাঁর লেখার বিষয়। মেয়েদের শিক্ষার অধিকার নিয়েও তিনি লিখতেন।শুধু লেখালেখি না, নারীশিক্ষার বিষয়টি নিয়ে তিনি প্রকাশ্যেই কথা বলতেন। এসব বিষয় তালেবানদের চোখে পড়ে। তাদের পক্ষ থেকে মালালার পরিবারকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়।
পাকিস্তানের টেলিভিশনের উপস্থাপক হামিদ মীর বিবিসিকে বলেন, ‘আমি ওর নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলাম।’২০১৫ সালের ৯ অক্টোবর মালালা অন্য দিনের মতোই স্কুল থেকে একটি ছোট বাসে করে বাড়ি ফিরছিলেন। কিছুক্ষণ পর দুই জঙ্গি বাসে উঠে পড়ে। তাদের একজন জিজ্ঞেস করে, ‘মালালা কে?’ তারা মালালার মাথায় গুলি করে। এ ঘটনায় মালালার দুই সহপাঠী আহত হয়।একটি শিশুও যে তালেবান হামলার লক্ষ্যবস্তু হবে, তা ছিল সবার কাছে অবিশ্বাস্য। এ ঘটনায় শুধু পাকিস্তান নয়, সারা বিশ্বে তোলপাড় শুরু হয়।মালালার ওপর হামলার কারণ হিসেবে তালেবানদের যুক্তি ছিল, ‘সে পশতুন এলাকায় পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রসার ঘটাচ্ছে।’
ওই ভয়াবহ হামলায় আহত মালালা সেরে ওঠার পর থেকেই সোচ্চার হন শিশুদের শিক্ষা নিয়ে।২০১৪ সালে সবচেয়ে কম বয়সী হিসেবে নোবেল শান্তি পুরস্কার পান।