টার্গেটটা ছিল মাত্র ৯৯। সেই রান তুলতে ৬২ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল চিটাগং ভাইকিংস। ফলে জমে উঠেছিল খেলা। উত্তেজনা থাকল শেষ পর্যন্ত। অবশেষে টানটান রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে জয়ীর হাসি হাসল বন্দরনগরীর দলটিই। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন রংপুর রাইডার্সকে ৩ উইকেটে হারিয়ে বিপিএল-২০১৯ এ শুভসূচনা করল মুশফিক বাহিনী।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে সূচনাতেই উইকেট খোয়ায় চিটাগং। ইনিংসের শুরুতে মাশরাফির বলির পাঁঠা হয়ে ফেরেন ক্যামেরন ডেলপোর্ট। পরে ক্রিজে আসেন মোহাম্মদ আশরাফুল। তবে ৬ বছর পর বিপিএলে প্রত্যাবর্তনটা সুখকর হয়নি তার। মাত্র ৩ রান করে শফিউল ইসলামের শিকার বনেন তিনি।
খানিক ব্যবধানে ডেলপোর্ট-আশরাফুল ফিরলেও মোহাম্মদ শাহজাদ ঝড় চলতেই থাকে। মাঝপথে সেই ঝড় থামে। বেনি হাওয়েলের এলবিডব্লিউর ফাদে পড়ে ব্যক্তিগত ২৭ রানে ফেরেন তিনি। সেই রেশ না কাটতেই মাশরাফি-মিথুনের যৌথপ্রচেষ্টায় রান আউটে কাটা পড়েন সিকান্দার রাজা। পরক্ষণেই মোসাদ্দেক হোসেন ফিরলে খেলায় ফেরে রংপুর। দলীয় ৭৭ রানে নাইম হাসানকে মাশরাফি ফেরালে খেলা জমে ওঠে। এর পর বাজে শটে মুশফিক ফিরলে উত্তেজনার রেণু ছড়ায় ম্যাচ। ফেরার আগে গুরুত্বপূণ ২৫ রান করেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল।
তবে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচে শেষ পর্যন্ত জয় ছিনিয়ে নেয় চিটাগং। বিজয়ীর বেশে মাঠ ছাড়েন রব্বি ফ্রাইলিঙ্ক ও সানজামুল ইসলাম। ফ্রাইলিঙ্ক ১২ ও সানজামুল ৭ রানে অপরাজিত থাকেন।
এর আগে সব শংকা উড়িয়ে শনিবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গড়ায় বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ষষ্ঠ আসর। উদ্বোধনী ম্যাচে টস ভাগ্যে জেতেন চিটাগং অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। রংপুর দলনায়ক মাশরাফিকে হারিয়ে আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
ফলে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নামে রংপুর। তবে শুরুটা শুভ হয়নি উত্তরবঙ্গের দলটির। বোলিং তোপে পড়ে তারা। সূচনালগ্নেই তাদের কাঁপিয়ে দেন চিটাগংয়ের দুই পেসার রব্বি ফ্রাইলিঙ্ক ও আবু জায়েদ রাহি। গতি আর সুইংয়ে বিভ্রান্ত করে অ্যালেক্স হেলস, মেহেদী মারুফ ও মোহাম্মদ মিথুনকে সাজঘরে ফেরান ফ্রাইলিঙ্ক। আর রাইলি রুশোকে শিকার বানান রাহি।সেই চাপের মধ্যে বেনি হাওয়েল ও ফরহাদ রেজাকে ড্রেসিংরুমের পথে ধরান নাইম হাসান। এতে ৩২ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে রংপুর। এ পরিস্থিতে খালেদ আহমেদকে উইকেট বিলিয়ে দেন মাশরাফি। ফলে বিপিএল ইতিহাসে সর্বনিম্ন রানে গুটিয়ে যাওয়ার শংকা দেখা দেয়।
কিন্তু সেই পথে বাধা হয়ে দাঁড়ান রবি বোপারা। অষ্টম উইকেটে সোহাগ গাজীকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন তিনি। ভালো খেলছিলেন তারা। তবে হঠাৎ খেই হারান গাজী। ফ্রাইলিঙ্কের চতুর্থ শিকার হয়ে ফেরেন তিনি। ফেরার আগে করেন ২১ রান। সবচেয়ে বড় কথা, বোপারার সঙ্গে তার ৪৯ রানের জুটিতে লজ্জার হাত থেকে বাঁচে রংপুর।
একের পর এক ব্যাটসম্যান যাওয়া-আসার মিছিলে যোগ দিলেও থেকে যান বোপারা। একপ্রান্ত আগলে একাই লড়াই চালিয়ে যান তিনি। শেষদিকে হার মানেন এ ইংলিশ ব্যাটারও। রাহীর শিকারে পরিণত হন বোপারা। ফেরার আগে ৪৭ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৪৪ রানের লড়াকু ইনিংস খেলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ৯৮ রানে গুটিয়ে যায় রংপুর।
চিটাগংয়ের হয়ে রব্বি ফ্রাইলিঙ্ক নেন ৪ উইকেট। ২টি করে ঝুলিতে ভরেন নাঈম হাসান ও আবু জায়েদ রাহি। ১ উইকেট বাগে টানেন খালেদ আহমেদ।