স্বামী অনীক মাহমুদের সঙ্গে ডিভোর্স চেয়ে নোটিশ পাঠিয়েছেন চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পী শাবনূর। গত বছরের শেষ দিকে ঢাকায় এসে এই সিদ্ধান্ত নেন বলে প্রথম আলোকে জানান শাবনূর। অস্ট্রেলিয়ার সিডনি থেকে শাবনূর বলেন, বনিবনা না হওয়ার কারণেই সংসারে বিচ্ছেদ চেয়েছেন তিনি।
সাত বছর আগে ২০১২ সালের ২৮ ডিসেম্বর ভালোবেসে দুই পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে করেন শাবনূর ও অনীক । বিয়ের পরের বছরই এ দম্পতির ঘর আলোকিত করে আসে এক পুত্রসন্তান। কিন্তু চলতি বছরের জানুয়ারিতে ভেঙে গেল সেই সংসার!
ডিভোর্স সম্পর্কে জানতে আজ বুধবার সকালে অনীক মাহমুদের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে বলেন, তিনি কোনো ধরনের নোটিশ হাতে পাননি। উল্টো জানতে চেয়েছেন কে বা কারা এই ধরনের খবর ছড়িয়েছে। অনীকের দাবি, আজ সকালেই শাবনূরের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। কিন্তু ডিভোর্সের ব্যাপারে তো কোনো কিছু বলেননি! শাবনূরের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে, তিনিই ডিভোর্সের কথা বলেছেন এ মন্তব্য পর অনীক মাহমুদ বললেন, ‘ও আচ্ছা।’ এরপর তিনি ফোন কলটি কেটে দেন।
শাবনূরের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬ জানুয়ারি স্বামী অনীককে তালাক দিয়েছেন শাবনূর। নিজের সই করা নোটিশটি আইনজীবীর মাধ্যমে অনীক মাহমুদের কাছে পাঠান তিনি।
সিডনি থেকে শাবনূর বলেন, ‘সন্তান জন্মের পর থেকেই আমাদের মধ্যে একটা দূরত্ব তৈরি হয়। অনেকগুলো বিষয়ে মতের অমিল হচ্ছিল। এরপর আমরা আলাদা থাকা শুরু করি। ভাবলাম, একটা সময় উপলব্ধিতে পরিবর্তন আসবে। কিন্তু তা আর হলো না।
কী এমন মতের অমিল হয়েছিল যে বিচ্ছেদের মতো সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে? এমন প্রশ্নে শাবনূর বলেন,
তালাক নোটিশে শাবনূর বলেছেন, ‘আমার স্বামী অনিক মাহমুদ হূদয় সন্তান এবং আমার যথাযথ যত্ন ও রক্ষণাবেক্ষণ করেন না। সে মাদকাসক্ত। অনেকবার মধ্যরাতে মদ্যপ অবস্থায় বাসায় এসে আমার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়েছে। আমাদের ছেলের জন্মের পর থেকে সে আমার কাছ থেকে দূরে সরে থাকছে এবং অন্য একটি মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে আলাদা বসবাস করছে। একজন মুসলিম স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর স্বামী যে ব্যবহার করেন অনিক সেটা করছেন না, উল্টো নানাভাবে আমাকে নির্যাতন করে। এসব কারণে আমার জীবনে অশান্তি নেমে এসেছে। চেষ্টা করেও এসব থেকে তাকে ফেরাতে পারিনি। বরং আমার সন্তান এবং আমার ওপর নির্যাতন আরো বাড়তে থাকে। উপরোক্ত কারণগুলোর জন্য মনে হয়ে তার সঙ্গে আমার আর বসবাস করা সম্ভব নয় এবং আমি কখনো সুখী হতে পারব না। তাই নিজের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ এবং সুন্দর জীবনের জন্য তার সঙ্গে সব সম্পর্ক ছেদ করতে চাই। মুসলিম আইন এবং শরিয়ত মোতাবেক আমি তাকে তালাক দিতে চাই। আজ থেকে সে আমার বৈধ স্বামী নয়, আমিও তার বৈধ স্ত্রী নই।’
শাবনূর আরও বলেন, ‘অভিনয়ে এসে অনেক চড়াই-উতরাইয়ের মধ্য দিয়ে নিজেকে সবার ভালোবাসার মানুষ হিসেবে তৈরি করেছি। সংসারজীবন শুরু করেছিলাম ভালো থাকার আশায়। চলচ্চিত্রে সবার ভালোবাসা পাওয়া আমার হয়তো সংসারজীবনের ভালোবাসা ভাগ্যে লেখা ছিল না। তাই সংসারজীবনে বিচ্ছেদ করতে হয়েছে। অনীকের পরিবার আছে, আমারও পরিবার আছে—দুজনেরই সমাজ আছে, সেখানে দুজন নিজেদের মতো করে থাকুক এটাই চেয়েছি।’
বছর তিনেক আগেও মিডিয়ায় শাবনূর-অনিকের ছাড়াছাড়ির গুঞ্জন ওঠে। সে সময় অনিক মিডিয়াকে বলেছিলেন এমন কিছু হয়নি। তাঁরা একসঙ্গেই আছেন, ভালো আছেন। কিন্তু অনিকের নতুন পাসপোর্টে এখন স্ত্রীর নামের জায়গায় আয়েশা আক্তারের নাম দেওয়া আছে।