লকডাউনে জন্মনিরোধক সংকটে পড়ছে বিশ্ব

লকডাউনে জন্মনিরোধক সংকটে পড়ছে বিশ্ব

সারা বিশ্বে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে নতুন করোনাভাইরাস। আক্রান্তের তালিকায় কোন দেশ নেই, তা খুঁজতে এখন রীতিমতো গলদঘর্ম হতে হবে। মহামারি ঠেকাতে নানা উদ্যোগ চলছে। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রতিরোধে এখন বিশ্বের প্রায় অধিকাংশ দেশে নানা মাত্রায় লকডাউন জারি আছে। তাই বিশ্বে জন্মনিরোধকের (কনডম) চরম ঘাটতি দেখা দিতে পারে। কারণ লকডাউনে জন্মনিরোধক উৎপাদন বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম জন্মনিরোধক প্রস্তুতকারী সংস্থা ক্যারেক্স বিএইচডি।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের বৃহত্তম জন্মনিরোধক প্রস্তুতকারী সংস্থা ক্যারেক্স বিএইচডির তিনটি কারখানা মালয়েশিয়ায়। বিশ্বের প্রতি পাঁচটি জন্মনিরোধকের একটি উৎপাদন করে ক্যারেক্স বিএইচডি। তবে এখানেও করোনাভাইরাস প্রতিরোধে লকডাউন জারি করেছে সরকার। কারণে কারখানা বন্ধ থাকায় গত এক সপ্তাহে এই কোম্পানিতে একটি জন্মনিরোধকও উৎপাদন হয়নি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইতিমধ্যেই বিশ্বে ১০ কোটি জন্মনিরোধকের সংকট তৈরি হয়েছে। ক্যারেক্সের উৎপাদিত জন্মনিরোধক আন্তর্জাতিকভাবেডিউরেক্সনামে বাজারজাত করা হয়। ব্যবসা ছাড়াও যুক্তরাজ্যের জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা (এনএইচএস) জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিলসহ আরও নানা প্রকল্পে ক্যারেক্স জন্মনিরোধক সরবরাহ করে। উৎপাদন বন্ধ থাকায় এবার সেই সব কর্মসূচিও হুমকির মুখে পড়বে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সারা বিশ্বে জন্মনিরোধকের চরম সংকটের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে গত শুক্রবার ওই কোম্পানিকে আবারও জন্মনিরোধক উৎপাদনের অনুমতি দেওয়া হয়। তবে করোনাভাইরাসে সতর্কতা হিসেবে মাত্র ৫০ শতাংশ কর্মীকে কারখানায় কাজে লাগানো যাবে বলে জানিয়েছিল সরকার।

বিষয়ে ক্যারেক্স বিএইচডির প্রধান নির্বাহী গোহ মিয়াহ কিয়াত বলেন, ‘কারখানা আবার চালু করতে একটু সময় লাগবে। অর্ধেক লোকবল নিয়ে কাজ করতে আমাদের বেশ বেগ পেতে হবে।

গোহ মিয়াহ কিয়াত আরও বলেন, ‘সামনে পুরো বিশ্বের সবখানেই জন্মনিরোধকের চরম সংকট দেখতে যাচ্ছি। যা ভীতিকর একটি বিষয়। আমি খুব উদ্বিগ্ন যে, আফ্রিকার অসংখ্য মানবিক প্রকল্প এতে হুমকির পড়বে। জন্মনিরোধকের এই সংকট শুধু দুই সপ্তাহ বা এক মাসের নয়, সংকট কয়েক মাসব্যাপী স্থায়ী হবে।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে করোনাভাইরাসে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত মালয়েশিয়া। এখন পর্যন্ত হাজার ১৬১ জন এতে আক্রান্ত হয়েছেন। মৃতের সংখ্যা ২৬। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করেছে মালয়েশিয়ার সরকার।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের আরেকটি বৃহৎ জন্মনিরোধক উৎপাদনকারী দেশ চীন। মূলত সেখান থেকেই করোনাভাইরাস সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানে অনেক কারখানা এখনো বন্ধ রয়েছে।