মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত বর্তমানে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য। ১৯৯৫ সালে ১০ ডিসেম্বর ময়মনসিংহে জন্মগ্রহণ করেন এই উদীয়মান ক্রিকেটার। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলে জিনি জায়গা করে নিয়েছেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান ও ডানহাতে অফ ব্রেক বোলিংয়েও পারদর্শী হিসাবে। ঘরোয়া ক্রিকেটে ২০১৩ সালে তিনি প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটার হিসাবে জায়গা করে নেন।
মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ২০১৪-১৫ মৌসুমে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে উপর্যুপরি ২৫০ ও ২৮২ রান করেন। এছাড়াও প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে ঘরোয়া ক্রিকেটে তিনটি ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন। মাত্র ১৮টি ম্যাচ খেলে ৭০.৮৯ গড়ে ৬ সেঞ্চুরি ও ৭ হাফ সেঞ্চুরিতে ১ হাজার ৯৮৫ রান করেছেন মোসাদ্দেক।
অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেটে ২০১২ সালে অস্ট্রেলিয়া ও ২০১৩-১৪ মৌসুমে আবুধাবিতে অনুষ্ঠিত আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে ২ বার বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। এছাড়াও ২০১৩ সালের এপ্রিল মাসে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চারদিনের ওয়ানডে সিরিজে অধিনায়ক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। প্রথম খেলায় তিনি ১০৭রান করেন ও দ্বিতীয় খেলায় করেন ৭৪ রান। এর মধ্যে তৃতীয় খেলায় ৯৮রান করে বাংলাদেশকে এক উইকেটের নাটকীয় বিজয় এনে দেন তিনি। ঐ বছরে ইংল্যান্ডেও তিনি অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলী অব্যাহত রাখেন। ইংল্যান্ড অনূর্ধ্ব-১৯ দলের বিরুদ্ধে ১১৩ বলে অপরাজিত ১১০* এবং ১০ ওভারে ৩/৩৮ লাভ করে ৩৮ রানের বিজয় এনে দেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। অক্টোবর-নভেম্বর, ২০১৫ সালে বাংলাদেশ এ দলের সদস্যরূপে দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়ে সফরে যান। জিম্বাবুয়ে এ দলের বিপক্ষে দুইখেলার সিরিজে শীর্ষস্থানীয় রান সংগ্রহকারী ছিলেন তিনি। ৬৪.৬৬ গড়ে ১৯৪ রান সংগ্রহ করেন মোসাদ্দেক।
২০ জানুয়ারি, ২০১৬ সালে টি-টুয়েন্টি আন্তর্জাতিকে অভিষেক ঘটে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের সফরকারী জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ৩য় টি২০আইয়ে তার সাথে আবু হায়দার, মুক্তার আলী ও মোহাম্মাদ শহীদেরও অভিষেক হয়েছিল। কিন্তু এ অভিষেক পর্বটি তেমন সুখকর হয়নি। খেলায় তার দল ৩১ রানে পরাজিত হয়।
সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর, ২০১৬ সালে বাংলাদেশ সফরে আসা আফগানিস্তান ক্রিকেট দলের বিপক্ষে তিনটি একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশ নেয়ার জন্য ১৩-সদস্যের তালিকা ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ তারিখে প্রকাশ করা হয়।
এতে ক্যাপবিহীন অবস্থায় তাকেও অন্যতম সদস্য মনোনীত করা হয়। এবং ২০১৬ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তান ক্রিকেট দলের বিপক্ষে ২য় ওয়ানডেতে তিনি খেলার সুযোগ লাভ করেন। এ ম্যাচে ১৪১ রান করে সাত উইকেট হারালো বাংলাদেশ টাইগাররা, তখন মোসাদ্দেক দলটাকে টেনে তুলার চেষ্টা চালালেন অবশ্য ব্যর্থও হলেননা তিনি। বাংলাদেশকে একটা সম্মানজনক স্কোর এনে দেন তিনি। বিপর্যয়ে দাঁড়িয়েও ৪টি চার ও ২টি ছ’য়ের মারে লড়াকু ইনিংসটি সাজিয়েছেন ৪৫ বলে। তার মান বাঁচানোর এই ইনিংসে শেষ পর্যন্ত টাইগারদের স্কোর বোর্ডে জমা পড়ে ২০৮ রান। শুরুতে ধরে খেলে ছিলেন তিনি পরে গিয়ে হাত খুলে। রান তোলার তাড়ায় সঙ্গীকে না হারালে হয়তো অভিষেকে ফিফটিটাও পেয়ে যেতেন মোসাদ্দেক হোসেন। এখানেই শেষ নয়। পরে বল হাতে নিয়ে প্রথম বলেই উইকেটও পেয়েছেন। তবে তার আগেই ব্যাট হাতে সবাইকে মুগ্ধ করে গেছেন মোসাদ্দেক। তাঁর এই প্রচেষ্টা জেন বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমে অব্যাহত থাকে এই কামনায় এখন সকল ক্রিকেট প্রেমীদের।