করোনা সংক্রমণের কারণে এবার সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি পরীক্ষা কীভাবে হবে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আজ শনিবার বৈঠকে বসছে উপাচার্যদের সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদ। এই সভার সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে ইউজিসি। শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনলাইনে জুমের মাধ্যমে বৈঠকটি পরিচালিত হবে।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা ও অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে গত বৃহস্পতিবার সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সঙ্গে ইউজিসির এক ভার্চ্যুয়াল সভা হয়। সেখানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজগুলোর মতো অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও পরীক্ষা ছাড়াই কেবল এসএসসি, এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করার বিষয়টি বিবেচনা করা যায় কি না বা অনলাইনে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া যায় কি না-এ ধরনের বিভিন্ন প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয় ১৭ অক্টোবরের সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহর সভাপতিত্বে উপাচার্যদের নিয়ে ইউজিসির অন্যান্য কর্মকর্তাদের বৈঠকে ভর্তি পরীক্ষা যেন কোনোভাবেই প্রশ্নবিদ্ধ না হয় তা নিশ্চিত করার তাগিদ দেয়া হয়।
বর্তমানে দেশে ৪৬টি সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় থাকলেও ৩৯টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সরাসরি শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। এর আগে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতেই সিদ্ধান্ত হয়েছিল চারটি স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়) ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া বাকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে তিনটি গুচ্ছ করে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে। এর মধ্যে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিয়ে একটি, সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিয়ে আরেকটি এবং প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিয়ে আরেকটি গুচ্ছ করে এই ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে।
কিন্তু এবার করোনার কারণে সশরীরে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া যাবে কি না, সেই প্রশ্নটি সামনে এসেছে। এ ছাড়া এ বছর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা সরাসরি না নিয়ে জেএসসি, এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার গড় ফলের ভিত্তিতে মূল্যায়নের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ অবস্থায় এইচএসসির ফলের পয়েন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিতে যুক্ত হবে কি না, সেটি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
সেদিন উপচার্যদের সঙ্গে বৈঠকে ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেছিলেন, ‘সমগ্র জাতি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে একটি সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা চাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দরকার।’
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা বলেন, ‘করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি বিবেচনা করে এখনই বিশ্ববিদ্যালয় খোলা মোটেও সমীচীন হবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের হল খোলাও আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হবে। এছাড়াও বিশ্বের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার উদাহরণ তারা সভায় তুলে ধরেন উপাচার্যরা।