মার্কিন মুলুকে বাতিল হয়ে গেল নেট নিউট্রালিটি। ১৪ ডিসেম্বর দেশের ফেডেরাল কমিউনেকশনস কমিশন অর্থাত এফসিসির ভোটে বাতিল হল নেট নিউট্রালিটি। প্রশ্ন হল, নেট নিউট্রালিটি কী? যদি কোনও গ্রাহক সার্ভিস প্রোভাইডারের কাছ থেকে ডেটা কেনেন, সেই ডেটা তিনি কীভাবে খরচা করবেন সেই সিদ্ধান্ত একান্তই তাঁর। তিনি নিজে ইচ্ছা মতো ওয়েবসাইট খুলতে পারেন। এ ক্ষেত্রে পরিষেবা প্রদানকারী ওই সার্ভিস প্রোভাইডারের কোনও রকম ইচ্ছা অনিচ্ছা গ্রাহকদের প্রভাবিত করতে পারবে না।
2015 সালে ওবামা মার্কিন প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন এই আইন পাস করেন। এই আইনের ইতিবাচক দিক হল, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার কোনও নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট ব্লক করতে পারবে না। এমন কি কোনও ওয়েবসাইট খোলার টাকাও দাবি করতে পারবে না। সব ওয়েবসাইটই একই গতিতে খুলবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় ওই বিলে। কিন্তু ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর এই আইন বাতিলের জন্য উঠে পড়ে লাগেন। আগে ছিল ফ্রি অ্যান্ড ওপেন ইন্টারনেট। আর সেই আইন এখন বাতিল হয়ে গেল। আমেরিকায় এই আইন বাতিল হওয়ার পরে সারা পৃথিবী জুড়ে সাইবার দুনিয়াতেই আতঙ্ক। ভারতে এর কতখানি প্রভাব পড়ে, সেটাই এখন দেখার। সাইবার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী দিন হয়তো মার্কিন কোনও ওয়েবসাইট খুলতে গেলে ভারতীয় গ্রাহককে হয়তো পয়সা দিতে হবে।
এদিকে নেট নিউট্রালিটি বাতিল নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করল মাইক্রোসফ্ট, ফেসবুক, অ্যামাজন, নেটফ্লিক্স-এর মতো কোম্পানিগুলি। ফেসবুকের চিফ অপারেটিং অফিসার শেরিল স্যান্ডবার্গ বলেন, ফ্রি অ্যান্ড ওপেন ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে খুবই অসন্তোষজনক ও আর্থিকভাবে ক্ষতিকারক অবস্থা তৈরি করল এফসিসি। মাইক্রোসফট-এর লিগ্যাল অফিসার ব্র্যাড স্মিথও একইরকম মত পোষণ করে জানান, গ্রাহক, ব্যবসায়ী ও সমস্ত অর্থনীতিকে বেড়ে উঠতে সাহায্য করে ওপেন ইন্টারনেট। আর সেই ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ নষ্ট করে দিল এফসিসির এই সিদ্ধান্ত। আর নেটফ্লিক্স তো চূড়ান্ত অসন্তুষ্টির সঙ্গে একটি লম্বা আইনি যুদ্ধের আভাসও দিয়ে দিয়েছে।