পুলিশ কনস্টেবল যেভাবে হয়ে উঠলেন ‘ভোলে বাবা’

পুলিশ কনস্টেবল যেভাবে হয়ে উঠলেন ‘ভোলে বাবা’
১১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে ভারতের উত্তরপ্রদেশে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে। নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী। এছাড়া শিশুও রয়েছে। মঙ্গলবার (২ জুলাই) মর্মান্তিকভাবে প্রাণ হারানো এসব মানুষ গিয়েছিলেন ভোলে বাবা নামক এক কথিত ধর্মগুরুর অনুষ্ঠানে। এই ভোলে বাবা নারায়ণ সরকার হরি নামেও পরিচিত। বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে যে ওই ধর্মীয় জমায়েত, যেগুলিকে ‘সৎসঙ্গ’ বলা হয়ে থাকে, সেটির আয়োজকরা অনুমতি নিয়েছিলেন ৮০ হাজার মানুষের জমায়েতের। প্রকৃতপক্ষে এর কয়েক গুণ বেশি মানুষ মঙ্গলবার জড়ো হয়েছিলেন ‘ভোলে বাবা’ নামে পরিচিত ওই স্বঘোষিত ধর্ম প্রচারকের সভায়। আবার এই ‘ভোলে বাবা’ কীভাবে ইভটিজিংয়ের দায়ে পুলিশ কনস্টেবলের চাকরি থেকে বরখাস্ত হয়ে, জেল খেটে বেরিয়ে ধর্মগুরু হয়ে উঠলেন, সেটিও যেন এক সিনেমার গল্প। এখন ওই স্বঘোষিত ধর্ম প্রচারকের খোঁজে তার কয়েকটি আশ্রমে তল্লাশি চালাচ্ছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ।তবে বুধবার যে এফআইআর দায়ের হয়েছে, সেখানে ওই ধর্ম প্রচারকের নাম নেই বলে জানাচ্ছেন বিবিসির সংবাদদাতারা। উত্তর প্রদেশ পুলিশ জানিয়েছে ‘ভোলে বাবা’ নামে পরিচিত নারায়ণ সরকার হরির আসল নাম সুরজ পাল জাটভ। কাসগঞ্জ জেলার বাহাদুরপুর গ্রামের বাসিন্দা জাটভ উত্তর প্রদেশ পুলিশের কনস্টেবল ছিলেন। চাকরি জীবনের গোড়ার দিকে বেশ কয়েক বছর পুলিশের স্থানীয় গোয়েন্দা বিভাগে কর্মরত ছিলেন তিনি। প্রায় ১৮টি থানা এলাকায় কাজ করেছেন তিনি।প্রায় ২৮ বছর আগে ইভটিজিংয়ের অভিযোগ দায়ের হয় তার বিরুদ্ধে। প্রথমে সাসপেন্ড করা হয়েছিল জাটভকে, পরে বরখাস্ত হন তিনি। ইটাওয়া জেলার সিনিয়র পুলিশ সুপার সঞ্জয় কুমার বিবিসিকে জানিয়েছেন, ওই ইভটিজিংয়ের ঘটনায় বেশ লম্বা সময় জেলে ছিলেন সুরজ পাল জাটভ। কারাগার থেকে বেরিয়ে এসে ‘বাবা’র রূপ ধরেন তিনি। বরখাস্ত হওয়ার পরে সুরজপাল জাটভ আদালতে গিয়েছিলেন নিজের চাকরি ফিরে পেতে। আদালত চাকরি ফিরিয়েও দিয়েছিল। কিন্তু ২০০২ সালে আগ্রা জেলায় কর্মরত অবস্থায় স্বেচ্ছায় অবসর নেন জাটভ।কিছুদিন পরে তিনি দাবি করতে থাকেন যে সরাসরি ঈশ্বরের সঙ্গে কথা হয় তার। এই সময় থেকেই নিজেকে ‘ভোলে বাবা’ হিসেবে তুলে ধরতে থাকেন জাটভ।