হারের সঙ্গী হয়ে ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন ইমরুল

হারের সঙ্গী হয়ে ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন ইমরুল

টেস্ট ক্রিকেট থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশের সাবেক ওপেনার ইমরুল কায়েস। সোমবার (১৮ নভেম্বর) এই ঘোষণা দেন তিনি। টেস্ট ক্যারিয়ারের পাশাপাশি ১৭ বছরের পেশাদার ক্যারিয়ারের আবেগময় সমাপ্তি টানার ঘোষণা দিয়েছেন ইমরুল।

তবে কিছুদিন আগেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ঘোষণা দিয়েছিলেন ইমরুল। তিনি বলেন, ‘আমি আমার ক্যারিয়ার নিয়ে একটি কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছি। ১৬ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে টেস্ট ও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট ক্যারিয়ারের ইতি টানবো। এটা আমার জীবনের অন্যতম চ্যালেঞ্জিং ও আবেগঘন মুহূর্ত।’

ক্রিকেট ক্যারিয়ারে ৩৯ টেস্ট খেলে তিনটি সেঞ্চুরি ও চারটি ফিফটি করা ইমরুল তার কৃতজ্ঞতা ও গর্ব প্রকাশ করেন।

তিনি আরো বলেন, ‘২০০৬ সালে যখন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক হয়, কখনো ভাবিনি বাংলাদেশের হয়ে ৩৯টি টেস্ট ম্যাচ খেলব। একটা টেস্ট হোক বা ৫০টা, দেশের প্রতিনিধিত্ব করা অনেক বড় সম্মানের। আমি আমার সেরাটা দিয়ে দলের জন্য অবদান রাখার চেষ্টা করেছি, হয় ব্যাট হাতে নিয়ে কিংবা কিপার হিসেবে।’

ইমরুলের টেস্ট ক্যারিয়ারে বেশ কয়েকটি মাইলফলক রয়েছে, যার মধ্যে ২০১৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে খুলনা টেস্টে তামিম ইকবালের সাথে রেকর্ড ৩১২ রানের উদ্বোধনী জুটি রয়েছে।

তিনি বলেন, দেড় শ’র ওই ইনিংসটি আমার কাছে চিরকাল বিশেষ স্মৃতি হয়ে থাকবে।

নিজের অবদানে গর্ববোধ করলেও ইমরুল কিছু অপূর্ণ আকাঙ্ক্ষার কথা উল্লেখ করেছেন। বিশেষ করে ক্যারিয়ারে বড় কোনো ট্রফি জিততে না পারা।

তিনি বলেন, ‘সাকিব আল হাসান, তামিম, মাশরাফি, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ভাইয়ের মতো কিংবদন্তিদের সাথে দীর্ঘদিন খেললেও আমরা বাংলাদেশের জন্য উল্লেখযোগ্য কোনো ট্রফি জিততে পারিনি। এশিয়া কাপ বা নিদাহাস ট্রফির মতো কিছু জিততে পারলে আমার ক্যারিয়ার আরো পরিপূর্ণ হতো।’

ইমরুল আরো বলেন, ‘ওই জয়ের পর যে উদযাপন করা হয়েছিল, তা ছিল অবিস্মরণীয়। সেই রাতে ভক্তদের কাছ থেকে আমরা যে ভালবাসা এবং সমর্থন পেয়েছিলাম তা এখনো আমাকে শিহরিত করে। এটা প্রমাণ করে আমাদের দেশে ক্রিকেটকে কতটা গভীরভাবে ভালোবাসে।’

প্রথম শ্রেণির ঢাকা বিভাগ আর খুলনা বিভাগের ম্যাচ খেলে ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন তিনি। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আয়োজিত শেষ ম্যাচ এ তার দল ৯ উইকেটে ম্যাচ হেরেছে। এর আগে খুলনা বিভাগকে তাদের দ্বিতীয় ইনিংসে কাল মাত্র ৯১ রানে অলআউট করলে জয়ের জন্য চতুর্থ ইনিংসে ঢাকার লক্ষ্য দাঁড়ায় ১০৪ রান, যা আজ তৃতীয় দিন সকালের সেশনেই ১ উইকেট হারিয়ে সে রান টপকে যায় ঢাকা। রনি তালুকদার ৫৪ বলে অপরাজিত ৬২ রান করেন, আরিফুল ইসলাম ৪৫ বলে ৪২ রানে অপরাজিত ছিলেন। প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেটসহ ম্যাচে ৮ উইকেট নেওয়া ঢাকার পেসার সুমন খান ম্যাচসেরা হয়েছেন। এ ম্যাচ দিয়ে দীর্ঘ প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারের ইতি টানা ইমরুলকে ম্যাচ শেষে বিসিবির পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।