লস অ্যাঞ্জেলেসের সৈকত শহর মালিবুর এক–তৃতীয়াংশ দাবানলে পুড়ে গেছে। শনিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় নিজেদের মধ্যে এক বৈঠকে মালিবুর মেয়র ডগ স্টুয়ার্ট এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, তিন মাসের মধ্যে মালিবু তিনটি দাবানলের মুখোমুখি হয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ প্যালেসেইডস দাবানল।আগুন নিয়ন্ত্রণে বৃষ্টির অভাব আর ঝড়ো বাতাসই মূল বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।
কয়েক ঘণ্টা আগে লস অ্যাঞ্জেলেসের মেডিকেল এক্সামিনার কার্যালয় জানিয়েছে দাবানলে নিহত ব্যক্তির সংখ্যা বেড়ে ১৬–তে দাঁড়িয়েছে । তার মধ্যে পাসাডেনার কাছে ইটন দাবানলে ১১ জন এবং প্যালেসেইডস দাবানলে ৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন। প্রাণহানির সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কর্মকর্তারা।
গত সপ্তাহ থেকে ভয়াবহ দাবানলে জ্বলছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেস।ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১২ হাজারের বেশি ঘরবাড়ি ও স্থাপনা।এদিকে, লস অ্যাঞ্জেলেসের ৪টি এলাকায় এখনো আগুন জ্বলছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।লস অ্যাঞ্জেলেসের ইতিহাসে এ ধরনের ভয়াবহ দাবানল আগে আর ঘটেনি।
বর্তমানে নগরের চারপাশে প্রধান চারটি দাবানল নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন লস অ্যাঞ্জেলেস কর্তৃপক্ষ। সবচেয়ে বড় দাবানল প্যালেসেইডস। ক্যাল ফায়ার থেকে বলা হয়েছে, প্যালেসেইডস দাবানলটি ২৩ হাজার ৬৫৪ একর এলাকাজুড়ে জ্বলছে। এ দাবানলের ১১ শতাংশের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে।
দ্বিতীয় বড় আগুন জ্বলছে ইটনে। কেনেথ দাবানল জ্বলছে ১ হাজার ৫২ একরজুড়ে। ১৪ হাজার ১১৮ একরজুড়ে জ্বলতে থাকা দাবানলের ১৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে আনা গেছে। এটির ৯০ শতাংশই এখন নিয়ন্ত্রণে। আর হার্স্ট দাবানল জ্বলেছে ৭৯৯ একরজুড়ে। এটির ৭৬ শতাংশ এখন নিয়ন্ত্রণে।
লস অ্যাঞ্জেলেসে দাবানল এত ভয়াবহ রূপ নেওয়ার জন্য সান্তা অ্যানাস নামের ঝোড়ো বাতাসকে দায়ী করা হচ্ছে। গত শুক্রবার রাত থেকে এই বাতাসের গতি কিছুটা কমে আসায় দাবানল পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছিল। কিন্তু মরু অঞ্চল থেকে আসা এই বাতাসের গতি আবার বাড়তে শুরু করেছে এবং আগামী কয়েক দিনে এটি আরও শক্তিশালী হবে বলে জানিয়েছিলেন কর্মকর্তারা।
লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টির অগ্নিনির্বাপণ বাহিনীর প্রধান অ্যান্টনি ম্যারোন বলেন, ওই বাতাস বুধবার পর্যন্ত থাকবে এবং দাবানল ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়ার মতো উদ্বেগজনক আবহাওয়ার সৃষ্টি করবে।
দাবানলে মালিবুর জনবসতিপূর্ণ এলাকার ধ্বংসচিত্র তুলে ধরতে গিয়ে মেয়র স্টুয়ার্ট বলেন, ‘প্যাসিফিক কোস্ট হাইওয়ের পাশ ধরে সুন্দর সুন্দর বাড়িগুলো শেষ হয়ে গেছে। বিগ রকের জনবসতিরও একই অবস্থা।