বিমানে কোনো চালক নেই- এমন বিমানে উঠতে আপনি কতটা স্বস্তিবোধ করবেন?
ছুটিতে বা প্রয়োজনে এমন বিমানে চড়বেন কিনা এ প্রশ্নের উত্তর ভবিষ্যতে খুঁজতে চলেছেন বিশ্বের লক্ষ লক্ষ মানুষ।
চালকবিহীন গাড়ি এখন আপনি পাবেন আমেরিকার রাস্তায়। এধরনের গাড়ি পরীক্ষামূলকভাবে লন্ডনের রাস্তায়ও নামানো হয়েছে। এখন স্বয়ংচালিত পরিবহন ব্যবস্থার তালিকায় যোগ হতে চলেছে বিমান।
বিমান প্রস্তুতকারী সংস্থা বোয়িং আগামী বছর ২০১৮ সালে এধরনের বিমান পরীক্ষামূলকভাবে ওড়ানোর পরিকল্পনা করছে। কিন্তু ইউবিএস নামে আর্থিক এক সংস্থার জরিপে দেখা যাচ্ছে চালকবিহীন বিমান মোটেও জনপ্রিয় নয়।
এই জরিপে অংশ নেয়া ৮০০০ লোকের মধ্যে ৫৪ শতাংশ বলেছে চালক না থাকলে সে বিমানে তারা চড়বে না।
বিশেষ করে ৪৫এর ওপরে যাদের বয়স তাদের অর্ধেকের বেশি এই আইডিয়া নাকচ করে দিয়েছেন।
মাত্র ১৭ শতাংশ বলেছেন এধরনের বিমানে চড়তে তাদের আপত্তি নেই এবং ২৫ থেকে ৩৪এর মধ্যে যাদের বয়স তারা চালকবিহীন বিমানে চড়ার ব্যাপারে উৎসাহ দেখিয়েছেন।
উবারকে চালবিহীন গাড়ি চালানোর পরিকল্পনা বাতিল করতে হয় দুর্ঘটনার আশংকা আটকাতে না পারার কারণেউবারকে চালবিহীন গাড়ি চালানোর পরিকল্পনা বাতিল করতে হয় দুর্ঘটনার আশংকা আটকাতে না পারার কারণে
আলোচনার কেন্দ্রে ছিল মূলত নিরাপত্তার বিষয়টি।
ইউবিএস তাদের রিপোর্টে বলছে চালকবিহীন বিমান তুলনামূলকভাবে বেশি নিরাপদ। তাদের হিসাবে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ বিমান দুর্ঘটনা ঘটে মানুষের ভুলের কারণে। এর মধ্যে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ ঘটেছে পাইলটের অবসাদ ও ক্লান্তির কারণে।
তবে ব্রিটিশ এয়ারলাইন পাইলটদের অ্যাসোসিয়েশনের একজন বিমান নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ বলেছেন ভবিষ্যত উদ্ভাবনের উৎসাহের আতিশয্যে এটা ভুললে চলবে না যে বিমানের ককপিটে ইতিমধ্যেই অনেক স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা রয়েছে।
“স্বয়ংক্রিয় ককপিট নতুন কিছু নয়, কিন্তু স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থায় যেটা হওয়ার কথা সেটাতে বিভিন্ন কারণে প্রায় প্রতিদিনই পাইলটকে হস্তক্ষেপ করতে হয় – সেটা মনে রাখা দরকার।”
“কম্প্যুটার বিকল হতে পারে- হয়ও। সেই কম্প্যুটার আবার চালু করার জন্যও মানুষের দরকার,” বলেন বিশেষজ্ঞ স্টিভ ল্যান্ডেলস।
বিমানের ককপিটে অনেক স্বয়ংক্রিয় সরঞ্জাম আছেকোনো কোনো বিশেষজ্ঞ চালকবিহীন বিমান চালানোর ব্যাপারে সন্দিহান, তবে অনেকেই মনে করছেন এ সম্ভাবনা খুব শিগগিরি না হলেও খুব সূদুরপরাহত নয়
অনেকে এমন কথাও বলছেন যে বড় বড় ফ্লাইট যেখানে যাত্রীর সংখ্যা থাকে ২০০ থেকে ৩০০, সেখানে একেবারে প্রথম থেকেই চালকবিহীন নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু করা খুব বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। বরং যন্ত্রের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পাইলটের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে কমানোটা যুক্তিযুক্ত হবে।
ছোট বিমানে পরীক্ষামূলকভাবে এ ব্যবস্থা প্রথমে চালু করা উচিত বলে কেউ কেউ মত দিয়েছেন। তারা বলছেন যাত্রীদের আস্থা অর্জনের জন্যও এটা দরকার।
ইউবিএস বলছে বিমান সংস্থাগুলো এর ফলে দুহাজার ৬০০ কোটি ডলার খরচ বাঁচাতে পারবে।