সাইবেরিয়ান বাঘদের ‘সেলফি’

সাইবেরিয়ান বাঘদের ‘সেলফি’

রাশিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিরল প্রজাতির সাইবেরিয়ান বাঘদের কিছু ছবি প্রকাশ করেছে ল্যান্ড অব দ্য লিওপার্ড ন্যাশনাল পার্ক।

বাঘের পরিবারদের একসঙ্গে খেলতে দেখা গেছে, এমনকি ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে ‘পোজ’ দিচ্ছে তাদের এমন ছবিও দেখা গেছে।

রাশিয়ার ওই পার্কটি প্রায় দুই লাখ ৬০ হাজার হেক্টর এলাকাজুড়ে অবস্থিত। সেখানে অন্তত ২২টি বয়স্ক সাইবেরিয়ান বাঘ রয়েছে এবং ৭টি বাঘ শাবক রয়েছে।

বিরল প্রজাতির এই বাঘ অবৈধ শিকারীদের হাতেও পড়েছে। বিপন্ন প্রায় এই প্রজাতির বাঘের সংখ্যা সম্পর্কে এখন জানার চেষ্টা করছে গবেষরা।

ল্যান্ড অব দ্য লিওপার্ড বলছে, গ্রাউন্ড লেভেলের অটোম্যাটিক ক্যামেরা ব্যবহারের মাধ্যমে তারা বাঘদের কর্মকান্ডের ছবি তুলেছে। প্রথমবারের মতো পশুদের পারিবারিক জীবনযাপন এমন বিস্তৃতভাবে ছবিতে রেকর্ড করা হয়েছে বলে দাবি করছেন কর্মকর্তারা।

দ্য সাইবেরিয়ান টাইমস নামে স্থানীয় একটি পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পার্কে থাকা বনরক্ষকদের মাধ্যমে ওই ক্যামেরাগুলো বসানো হয়েছিল। যার মাধ্যমে বাঘ এবং বিপন্নপ্রায় চিতাবাঘদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হতো।

সাইবেরিয়ান বাঘবিশেষজ্ঞরা বলছেন ছবিগুলোর মাধ্যমে সাইবেরিয়ান বাঘদের পারিবারিক জীবনযাপনের বিরল দৃশ্য উঠে এসেছে।

সাইবেরিয়ান বাঘবাঘ শাবকটির ক্যামেরার কাছে এসে মেমোরি কার্ডের দিকে থাবা দেয়ার কারণে ক্যামেরার অনেক ছবি নষ্ট হয়ে গেছে।

ভিডিও ও স্থির ছবিতে দেখা গেছে, বাঘ শাবকেরা জঙ্গলে খেলা করছে, ডিগবাজি খাচ্ছে এবং এক পর্যায়ে তার মা এসে তাদের মধ্যে শৃঙ্খলা আনে।

এই মা বাঘটিকে এর আগেও বিভিন্ন ছবিতে দেখা গেছে, যেসব বিজ্ঞানীরা সাইবেরিয়ান বাঘদের সংখ্যা নিরূপণে কাজ করছেন ও পর্যবেক্ষণ করছেন তাদের কাছে এই বাঘটি টি-সেভেন-এফ নামে পরিচিত।

২০১৪ সালে তার একটি ভিডিও ধারণ করা হয় যেখানে দেখা যায় বাঘটি তার তিন শিশুকে নিয়ে খেলছে, মনে করা হয় ওই তিন বাঘ শাবকের দুইটি বেড়ে উঠার পর সাইবেরিয়া থেকে প্রতিবেশী চীনে চলে গেছে।

নতুন ছবিগুলোর একটিতে দেখা যাচ্ছে, বাঘ শাবকগুলোর একটি ক্যামেরার দিকে রীতিমতো তাকিয়ে আছে এবং সেটির দিকে সে তেড়েও যাচ্ছে।- এ কারনে ক্যামেরার মেমোরি কার্ডেও প্রভাব পড়েছে, অনেক ছবিও নষ্ট ঞয়ে গেছে।

রাশিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ প্রিমোরস্কি ক্রাইয়ের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকয় অবস্থিত ল্যান্ড অব দ্য লিওপার্ড ন্যাশনাল পার্ক।

সাইবেরিয়ান বাঘশাবকগুলোর মা বিজ্ঞানীদের কাছে টিসেভেন-এফ নামে পরিচিত।

এটি আমুর বাঘ নামেও পরিচিত, রাশিয়ায় পাওয়া যায়। এমন জায়গায় তাদের বসবাস যেখানে দুর্বল অর্থনীতি এই প্রজাতিকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছে।

যদিও রাশিয়ায় এই বিরল প্রজাতির বাঘ শিকার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ, তবুও অবৈধ শিকারীদের হাত থেকে এদের রক্ষার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছে বনরক্ষীরা। তবে বনরক্ষীদের কাছে তেমন হাতিয়ারও নেই, এদের বেতনও অনেক কম।

১৯৩০ সালে এই প্রজাতির বাঘের সংখ্যা ২০ থেকে ৩০-এ নেমে এসেছিল।

কিন্তু বর্তমানে সাইবেরিয়ান বাঘের সংখ্যা ৬০০।