ঢালিউডের সফল জুটি তারা। একসঙ্গে অভিনয় করেছেন প্রায় সত্তরটিরও বেশি চলচ্চিত্রে। তবে বাস্তব জীবনের রোমান্সে মজবুত জুটি হতে পারছেন না। খুব শিগগিরই হয়তো চিরদিনের মতো আলাদাও হয়ে যাবেন তারা। ভেঙে যাবে বহুল আলোচিত শাকিব-অপু দম্পতির সংসার। গেল বছরের শেষদিকে অপু বিশ্বাসকে ডিভোর্স নোটিশ পাঠিয়েছেন শাকিব খান।
সেই নোটিশের প্রথম শুনানী ১৫ জানুয়ারি। আর বাকি রয়েছে মাত্র এক সপ্তাহ সময়। বিষয়টি নিয়ে শোবিজ অঙ্গনে চলছে জোড় আলোচনা-সমালোচনা। কোনদিকে যাচ্ছে এ তারকাদ্বয়ের দাম্পত্য জীবন? অপুর প্রেমে ও বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত বদলে ফিরে আসার আহ্বানে গলবে কী শাকিবের মন? নাকি চিরতরেই বিচ্ছেদের পথে হাঁটবেন তারা? সময় দেবে এর সঠিক জবাব। তবে আপাতত সংসার টিকিয়ে রাখার পক্ষেই অপু বিশ্বাস। এখনো তিনি আশাবাদী সিদ্ধান্ত বদলাবেন শাকিব খান। তার প্রেম ও একমাত্র পুত্র আব্রাম খান জয়ের টানে সংসারে ফিরে আসবেন তিনি। আবারও সুখে-ভালোবাসায় ভরে উঠবে তাদের দাম্পত্য জীবন। অপু বিশ্বাসের ভাষ্যে, ‘আমি ডিভোর্সের পক্ষে নই ।
এ কথা আগেও বলেছি এখনও বলছি। আমার একটি সন্তান রয়েছে। তার ভবিষ্যৎ চিন্তা করে আমি কোনো ভাঙনের কথা ভাবতেও চাই না। শাকিব তার সিদ্ধান্ত পাল্টাবে এ বিশ্বাস করছি এখনো। এ বিষয়ে নতুন কোনো প্রশ্ন শুনলে আমি বিব্রত হই।’
কিন্তু বিচ্ছেদের সিদ্ধান্তেই বহাল রয়েছেন শাকিব খান। ডিভোর্স নোটিশ পাঠানোর পর এখন পর্যন্ত এ নিয়ে প্রকাশ্যে আসেননি এ অভিনেতা। বলেননি কোনো কথাও। ডিভোর্স নোটিশ তার শেষ বক্তব্য ছিল, ‘উকিলের সঙ্গে পরামর্শ করেই সব সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যা বলার আমার উকিল বলবেন।’
এদিকে শাকিবের বিচ্ছেদের তদারকী করা উকিল শেখ সিরাজুল ইসলামও নতুন কোনো খবর দিতে পারেননি। শাকিব খান বর্তমানে ‘আমি নেতা হবো’ সিনেমার শুটিংয়ে রয়েছেন ব্যাংককে। সিনেমাটি পরিচালনা করছেন উত্তম আকাশ। গানের শুটিং নিয়ে ব্যস্ত থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। আর ঢাকায় শাকিবের ঘনিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এখন পর্যন্ত বিচ্ছেদের সিদ্ধান্তেই অটল শাকিব। মত বদলানোর কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। এ বিষয়ে আগামী ১৫ জানুয়ারি শুনানি শেষ না হওয়া পর্যন্ত নতুন কিছু বলা যাচ্ছে না। তাই আপাতত অপেক্ষা…..!
২০১৮ সালে অপু বিশ্বাসের সঙ্গে প্রেম করে বিয়ে করেন শাকিব খান। দীর্ঘদিন সেই খবর আড়ালে রেখেছিলেন তারা। কিন্তু বছরের শুরুর দিকে চিত্রনায়িকা বুবলীর সঙ্গে শাকিবের প্রেম-বিয়ে সম্পর্কিত গুজব-গুঞ্জনের জের ধরে ১০ এপ্রিল (সোমবার) বিকেল ৪টায় সন্তানসহ প্রকাশ্যে আসেন অপু। দেশবাসীর কাছে ফাঁস হয় স্ত্রীকে গৃহবন্ধী করে রাখতে শাকিবের চিরাচরিত পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা । সমালোচনার মুখে পড়েন ঢালিউডের জনপ্রিয় এ নায়কঅ। এরপর থেকেই শুরু হয় অপুর সঙ্গে তার সম্পর্কের টানাপোড়েন । সেই জের ধরেই গত বছরের ২২ নভেম্বর সন্ধ্যায় শাকিব খান তার আইনজীবী শেখ সিরাজুল ইসলামের কার্যালয়ে যান ।
তিনি অপুকে তালাক দেওয়ার ব্যাপারে এ আইনজীবীর কাছে আইনগত সহায়তা চান। এরপর শাকিব খানের পক্ষে আইনজীবী শেখ সিরাজুল ইসলামের অফিস থেকে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন মেয়র কার্যালয়, অপু বিশ্বাসের ঢাকার নিকেতনের বাসা এবং বগুড়ার ঠিকানায় তালাক নোটিশ পাঠানো হয় । নিয়ম অনুযায়ী ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিনএসিসি) পারিবারিক আদালত থেকে শাকিব খানের পাঠানো তালাক নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে ১৫ জানুয়ারি সকাল ১০টায় ডিএনসিসি অঞ্চল-৩ মহাখালী কার্যালয়ে তাদের দুজনকেই থাকতে বলা হয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ডিএনসিসি অঞ্চল-৩-এর নির্বাহী কর্মকর্তা হেমায়েত হোসেন। ডিএনসিসি অঞ্চল-৩-এর নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, নিয়মানুযায়ী তারা উভয় পক্ষকে তিনবার ডাকবেন। তারা যদি সমঝোতা করে সংসার শুরু করতে চান, চেষ্টা করবেন সমস্যা সমাধান করে দেওয়ার। কিন্তু যদি তাদের কেউ পূর্বের সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন, সে ক্ষেত্রে তাদের আর কিছুই করার থাকবে না।
ডিএনসিসির ওই কর্মকর্তা আরও জানান, তাদের কেউ আগের সিদ্ধান্তে অনড় থাকতে চাইলে বৈঠকে আসেন না। এটা আসলে তিনি কিংবা তাদের একান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার। এ ক্ষেত্রে তারা কোনো জোর খাটাতে পারেন না বলেও জানান তিনি। এ কথা জানিয়ে তাদের আরও দুবার নোটিশ দিয়ে শুনানি করা হবে । এরপরও যদি তারা নিজেরা সমঝোতায় না আসেন তবে তিনবার শুনানির পর নিয়মানুযায়ী তালাক কার্যকর হয়ে যাবে । এখন তাই চলচ্চিত্রপাড়ায় চলছে গুঞ্জন-আলোচনা, ১৫ জানুয়ারি বিচ্ছেদের প্রথম শুনানিতে হাজির হবেন তো শাকিব খান?