মাশরাফি-ঝড়ে উড়ে গেছে চিটাগং ভাইকিংস। গতকাল দিনের শেষ ম্যাচে ভাইকিংসের বিপক্ষে মাত্র ১৭ বলে ৪২ রান করেছেন রংপুরের অধিনায়ক। তাঁর ব্যাটে ভর করেই স্বাগতিক দলের বিপক্ষে ৩ উইকেটের জয় পেয়েছে রাইডার্স। এমনিতে লোয়ার মিডল অর্ডারে ব্যাট করা মাশরাফি কাল নেমেছেন তিন নম্বরে। ৩ ছক্কা আর ৪ বাউন্ডারিতে ভাইকিংস বোলারদের নাকের জল চোখের জল এক করে ছেড়েছেন।
ব্যাট হাতে মাশরাফির এমন রুদ্রমূর্তি দেখে হয়তো চোখ কপালে তুলেছেন অনেকেই। নড়াইল এক্সপ্রেস কিন্তু বহুবারই ঝোড়ো ইনিংস খেলেছেন। এমন কিছু ইনিংসে চোখ বোলানো যাক।
১. ১০৪ (৫১) বনাম শেখ জামাল ধানমন্ডি, ২০১৬
২০১৬ সালে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে মাশরাফির কলাবাগান ক্রীড়াচক্রের মুখোমুখি হয়েছিল শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। প্রতিপক্ষকে রীতিমতো পেয়ে বসেছিলেন ম্যাশ। লিস্ট ‘এ’তে কোনো বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানের দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েছিলেন সে সময়ের ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক। ৩৬ থেকে ৪৯ ওভারের মাঝে ১৩২ রান তুলেছিল কলাবাগান, যার ১০৪ রানই ছিল ম্যাশের। ৫০ বলে সেঞ্চুরির এই রেকর্ড এখনো বাংলাদেশের ক্রিকেটে অক্ষত।
২. ৫৬* (৩২) বনাম চিটাগং ভাইকিংস, ২০১৫
বিপিএলে মাশরাফির প্রিয় প্রতিপক্ষ বোধ হয় চিটাগং। ২০১৫ সালে তৃতীয় বিপিএলে চিটাগং আর কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের মধ্যকার ম্যাচে ঝড় তুলেছিলেন মাশরাফি। ১৭৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ১০ রানেই ২ উইকেট হারিয়েছিল কুমিল্লা। ৫৪ রানে শুভাগত হোম আউট হওয়ার পর ক্রিজে আসেন অধিনায়ক। ৩ ছক্কা আর ৪ বাউন্ডারিতে ৩২ বলে ৫৬ রান করে অপরাজিত ছিলেন। মারলন স্যামুয়েলসের সঙ্গে তাঁর অবিচ্ছিন্ন ১২৩ রানের জুটিতে ম্যাচ জেতে কুমিল্লা। সেবার আন্ডারডগ কুমিল্লাকে চ্যাম্পিয়নও করেছিলেন মাশরাফি।
৩. ৪৪ (২৯) বনাম ইংল্যান্ড, ২০১৬
গত বছর ঘরের মাঠে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ইংল্যান্ডকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। সেই ম্যাচে জয়ের নায়ক মাশরাফি ব্যাট করতে নেমেছিলেন ৯ নম্বরে। টপ অর্ডারের ব্যর্থতায় বাংলাদেশ যখন দুই শ পার করার চিন্তায়, তখনই খড়্গ হাতে উপস্থিত অধিনায়ক। ২৯ বলে ৪৪ রান করার পথে ৩টি ছক্কা আর দুটি বাউন্ডারি মেরেছিলেন তিনি। এরপর বল হাতে ২৯ রানে ৪ উইকেট নিয়ে একাই যেন হারিয়ে দেন ইংল্যান্ডকে।
৪. ৪৪* (১৬) বনাম কেনিয়া, ২০০৬
ওয়ানডেতে প্রথমবার তিন শ পেরোনো দলীয় স্কোরের স্বাদ পেয়েছিল হাবিবুল বাশারের বাংলাদেশ। ২৪২ রানে ৫ উইকেট পড়ে গেলে ক্রিজে আসেন তরুণ মাশরাফি। ২৩ মিনিটে তুফান বইয়ে দেন কেনিয়ান বোলারদের ওপর। ৩ ছক্কা আর ৫ চারে ৪৪ রান করে দলের রান ৩০১-এ পৌঁছে দেন তিনি।
৫. ৫১* (২৭) বনাম স্কটল্যান্ড, ২০০৬
টস জিতে স্কটিশ অধিনায়কের ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্তের বড় ফায়দা তুলেছিলেন টাইগার ব্যাটসম্যানরা। ৪৩তম ওভারে ১৯৯ রানে ৬ষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন মুশফিক। এরপর দুই অনূর্ধ্ব-১৯ সতীর্থ মোহাম্মদ আশরাফুল আর মাশরাফির ৭৯ রানের জুটি। ২৭ বলে ৫১ রান করার পথে ম্যাশ ছক্কা মেরেছিলেন ৫টি। পরে বল হাতে ২ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছিলেন তিনি।