সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মাদ্রাসার শিক্ষক-কর্মচারীদের এক সমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার মাদ্রাসা শিক্ষাকে জাতীয়করণের দাবিতে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে যোগ দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানরাই এখন জঙ্গি তৎপরতায় জড়িয়ে পড়ছে। মাদ্রাসায় যারা পড়ে তারা কখনও জঙ্গিবাদের দীক্ষা নিতে পারে না।
সবাবেশে সকালে যোগ দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালও বলেন, মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা কখনও জঙ্গিবাদে জড়াতে পারে না।
শিক্ষামন্ত্রীও একই বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘আমি একটি কথা বলতে চাই, মাদ্রাসায় যারা পড়েন তারা কখনই জঙ্গিবাদে দীক্ষা লাভ করতে পারেন না। জঙ্গিবাদে তারাই উদ্বুদ্ধ হয় যারা বড়লোকের ছেলে মেয়ে। তারাই জঙ্গিবাদের আসল কারখানা।’
বাংলাদেশে ১৯৯০ দশকে জঙ্গি তৎপরতা শুরুর থেকেই কওমি মাদ্রাসা পড়ুয়ারাই এর নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন বলে প্রমাণ আছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে নতুন ধরনের জঙ্গি তৎপরতায় আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত উচ্চবিত্ত শ্রেণির ছেলেমেয়েদেরও জঙ্গি তৎপরতায় জড়ানোর প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘ইসলাম শান্তির ধর্ম, মানবতার ধর্ম। যারা মুসলমানের প্রকৃত ইসলামিক শিক্ষায় দীক্ষিত হতে পারে না তারাই জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ে।’
মাদ্রাসা শিক্ষকদের দাবি দাওয়ার বিষয়ে অবশ্য কোনো সুনির্দিষ্ট ঘোষণা দেননি শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমার কাজ হলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট গিয়ে আপনাদের ব্যাপারে আপনাদের পক্ষে হয়ে কথা বলা। এই দাবির ব্যাপারে আমার এখানে কিছু বলে ফেলা তা আপনাদের কাছে সঠিক হবে না। আমার ক্ষমতা নাই সেই সাথে দেয়াও হয় নাই। আমি বাহবা বলার জন্য কোনো কিছু বাড়ায় বলি না।’
‘আমি হলাম আপনাদের কর্মী। আপনারা আমার সাথে কথা বলবেন, দাবি দাওয়ার ব্যাপারে বলবেন। আর আমি এই তথ্য প্রধানমন্ত্রীর নিকট পৌঁছে দিব। তিনি আমাদের সকল সমস্যা বিবেচনা করে আমাকে এর ফলাফল জানিয়ে দেবেন।’
বর্তমান সরকার মাদ্রাসা শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘মাদ্রাসা শিক্ষা, কওমি শিক্ষাকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনেক বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি এও বলেছেন নৈতিক শিক্ষার ভিত্তি হবে ধর্মীয় শিক্ষা।’
সরকার মাদ্রাসার শিক্ষকদের জন্য আলাদা অধিদপ্তর করা, ৩৫টি মাদ্রাসাকে নিয়ে মডেল মাদ্রাসা করা, মাদ্রাসায় অনার্স কোর্স চালুর কথাও জানান মন্ত্রী।
আরবি বিশ্ববিদ্যালয় করার জন্য ৩০ একর জমি বরাদ্দের কথাও জানান শিক্ষামন্ত্রী। বলেন, ‘আমাদের মাদ্রাসার শিক্ষার্থী যেন মেডিকেল কিংবা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ভর্তি হতে পারেন সেই ব্যবস্থাও আমরা করে দিয়েছি।’