জরায়ুর ক্যান্সার সাধারণত জরায়ুর নিচের দিকে (মুখে), অর্থাৎ যে অংশ যৌনাঙ্গের সাথে সংযুক্ত হয়, সেখানে এই ক্যান্সারটি হয়ে থাকে।
জরায়ু ক্যান্সারের লক্ষণ সমূহ:
১: আ্যবনরমাল ভ্যাজাইনাল ব্লিডিং
মেনস্ট্রুয়াল সার্কেলের মধ্যবর্তী সময়ে, সেক্সুয়াল ইন্টারকোর্স চলাকালীন অথবা পরে, বা মেনোপজের পর ব্লিডিং হলে অতি সত্বর ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
২: আ্যবনরমাল ভ্যাজাইনাল ডিসচার্জ
সাদা স্রাব নির্গত হওয়া একটা সাধারণ ব্যাপার। তবে কালচে খয়েরি (রক্তসহ)ঘন অথবা পানির মতো পাতলা ফ্যাকাশে, দুর্গন্ধযুক্ত পদার্থ নির্গত হওয়া একটি লক্ষণ।
৩: ইন্টারকোর্সের সময় ব্যথা
ইন্টারকোর্সের সময় ব্যথা অনুভূত হওয়া জরায়ূ ক্যান্সারের একটি অন্যতম লক্ষণ। এর মানে হচ্ছে ক্যান্সার ভেতরে ছড়িয়ে পরেছে। ক্যান্সার যদি না ও হয়, এই উপসর্গটি কখনই ভালো নয়। হতে পারে এইটা কোন ইনফেকশন বা সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড ডিসিজ (STD)এর লক্ষণ।
৪: তলপেট ব্যথা
মাসিক চলাকালীন সময়ে তলপেট ব্যথা স্বাভাবিক। তবে মাঝেমাঝেই যদি হঠাৎ করে তীব্র ব্যথা শুরু হয়ে যায়, তবে সেটা ভালো লক্ষণ নয়।
৫: প্রস্রাব করতে অস্বস্তি
এটি জরায়ু ক্যান্সারের একটি অন্যতম লক্ষণ। প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া, সূঁচের মতো বেঁধা, অথবা প্রস্রাব করার সময় প্রচন্ড চাপ অনুভব করা হতে পারে ক্যান্সারের লক্ষণ। ক্যান্সার না হলেও, হতে পারে এইটা ইউরিন ইনফেকশন, ঈস্ট ইনফেকশন অথবা STD।
৬: দীর্ঘমেয়াদী ঋতুস্রাব
বহুদিন ধরে ঋতুস্রাব হওয়া, প্রচুর পরিমাণে রক্ত যাওয়া (প্রতি দুই ঘন্টায় প্যাড বা ট্যাম্পন চেঞ্জ করতে হয়), এমন যদি হয়ে থাকে তবে হতে পারে এটি জরায়ু ক্যান্সারের জন্য হচ্ছে। কিন্তু এই দীর্ঘমেয়াদী ঋতুস্রাব হতে পারে হরমোনাল ইমব্যালান্স, ফাইব্রয়েডস, পলিপস, লিভার অথবা কিডনির অসুখ। তাই ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত।
৭: ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ
প্রেগন্যান্সিতে এটি খুবই সাধারণ ব্যাপার। কিন্তু প্রেগন্যান্সি ছাড়া যদি এমন হয় তাহলে এ ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ হচ্ছে তাহলে সেটা ভালো লক্ষণ নয়। যদি ব্লাডারের উপর বেশি কন্ট্রোল না থাকে অর্থাৎ খুব অল্প সময়ের জন্য হলেও প্রস্রাব না ধরে রাখতে পারেন, তাহলে আপনার উচিত দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া।
৮: দ্রুত ওজন কমে যাওয়া
দ্রুত কোন কারণ ছাড়া হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া অন্যান্য ক্যান্সারের মতো জরায়ূ ক্যান্সারের একটি অন্যতম লক্ষণ। তাই হঠাৎ করে যদি আপনার ওজন কমে যায়, এই উপসর্গটিকে অবহেলা করবেন না যেন।
৯: ক্লান্ত বোধ করা
সারাদিন কাজ শেষে ক্লান্তি বোধ করাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কোন কাজ না করেই অথবা অল্প কাজ করেই যদি আপনি প্রচন্ড ক্লান্ত বোধ করেন, এনার্জি না পান, তাহলে এইটি একটি চিন্তার বিষয়। ক্যান্সার হলে আপনার সুস্থ সবল লোহিত রক্তকণিকাগুলোকে শ্বেত রক্তকণিকারা রিপ্লেস করে ফেলে ক্যান্সারের সাথে লড়াই করবার জন্য। যার কারণে এনিমিয়া হয়, শরীরে অল্প পরিশ্রমে ক্লান্তি এসে যায়, ক্ষুধামন্দা হয়। এবং শরীরে অক্সিজেন সাপ্লাই ও কমে যায়। এনিমিয়া হওয়া যে কোন ক্যান্সারের একটি অন্যতম লক্ষণ। এর মানে হচ্ছে ক্যান্সার দ্রুত ছড়িয়ে পরছে।
১০: পা ব্যথা ও ফুলে যাওয়া
জরায়ু ক্যান্সারের রোগিদের অনেক সময় পা ফুলে যায়, পায়ে তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়। এবং এই। পা ব্যথা একসময় কোমর অব্ধি ছড়িয়ে পরে।
উপরে উল্লেখিত বেশ কয়েকটি উপসর্গ যদি আপনার থেকে থাকে, দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন।