৩৬ বা ৩৭ সপ্তাহ গর্ভকাল পার হওয়ার পর প্রসবের জন্য একধরনের মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে ফেলা ভালো। এই প্রস্তুতির সময় সবচেয়ে বড় উৎকণ্ঠা হলো, অন্তঃসত্ত্বা মা কীভাবে বুঝবেন যে তাঁর প্রসবের সময় হয়েছে? এ সময় তলপেটে একটু-আধটু ব্যথা, জরায়ুর সংকোচন হতেই পারে, কিন্তু প্রসবব্যথা বা প্রসবের লক্ষণগুলো মা সচেতন হলেই কেবল টের পাবেন। নয়তো হাসপাতালে যেতে দেরি হয়ে যেতে পারে। এর মধ্যে ঘটে যেতে পারে নানা বিপত্তি। স্বাভাবিক প্রসবের লক্ষণগুলো কী কী।
* তলপেটের ব্যথা ও জরায়ুর সংকোচন অনুভব করা
* রক্তমিশ্রিত স্রাব নিঃসরণ
* জরায়ুর মুখ খুলে যাওয়া
* পানিপূর্ণ থলে তৈরি হওয়া
গর্ভাবস্থার শেষ দিকে, বিশেষ করে ১-২ সপ্তাহ আগে থেকে ফলস লেবার পেইন হতে পারে। এটা আসল প্রসবব্যথা নয়। গর্ভধারণের ১৬ সপ্তাহ পর জরায়ুর সংকোচন হয়, যাকে বলে ব্রেক্সটন হিক্স কনট্রাকশন। তবে এর সঙ্গে ব্যথা থাকে না। সত্যিকারের প্রসবব্যথার কিছু উপসর্গ আছে। নিয়মিত বিরতিতে ব্যথা শুরু হবে, এর সঙ্গে জরায়ু সংকুচিত হয়, অর্থাৎ পেট শক্ত হয়ে আসবে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ব্যথার তীব্রতা ও স্থায়িত্ব দুটোই বাড়তে থাকবে। ব্যথা যাওয়া-আসা করবে। কিন্তু মধ্যের বিরতি ধীরে ধীরে কমে আসতে থাকবে। ব্যথাটা শুরু হয় পেছন দিক থেকে, তারপর ঊরু হয়ে সামনের দিকে ছড়িয়ে পড়ে। ব্যথানাশক বা ঘুমের ওষুধ—কোনো কিছুতেই ব্যথার উপশম হয় না।
ফলস লেবার পেইন বা মিথ্যা প্রসবে ব্যথার তীব্রতা কম, কেবল তলপেট ও কুঁচকিতেই সীমাবদ্ধ, জরায়ু সংকোচন বা পেট শক্ত হয় না এবং ওষুধে কমে।
গর্ভের শিশুকে বাইরের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য জরায়ুর মুখ মিউকাস বা শ্লেষ্মাজাতীয় পদার্থ দিয়ে বন্ধ থাকে। প্রসবের সময় এলে এই মুখ খুলে যায়, পানি ভেঙে যায় ও রক্তমিশ্রিত স্রাব নিঃসৃত হয়। এটি প্রসব শুরু হওয়ার গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ। যা-ই হোক, ওপরের লক্ষণগুলো মিলে গেলে দেরি না করে প্রসূতিকে হাসপাতালে স্থানান্তর করা উচিত। কেননা, প্রসবের প্রক্রিয়াটি শুরু হওয়ার পর যেকোনো মুহূর্তে শিশুর জন্ম হতে পারে।