হাঁটলে শরীরকে সহজেই সুস্থ রাখা যায়। ভালো থাকে মনও।
১. হাঁটা ভালো ডায়াবেটিসের রোগীদেরও। হাঁটলে হরমোন ইনসুলিন কাজে লাগে জোরে, রক্তের গ্লুকোজ দ্রুত ঢোকে দেহকোষে। শরীর পায় শক্তি। রক্তে কমে গ্লুকোজ। জটিলতা কমবে, স্নায়ুর ক্ষতি, কিডনির ক্ষতি ঠেকানো যাবে হেঁটে। যাঁদের ডায়াবেটিস আছে, তাঁরা প্রতিবার আহারের পর হাঁটুন ১০ মিনিট। আর ম্যাজিক দেখুন নিজেই।
২. আর্থ্রাইটিস থাকলেও হাঁটুন। হাঁটুব্যথা, কোমরব্যথা। গিঁট কনকন, ক্যাঁচ ক্যাঁচ, তবু হাঁটুন। হাড়ের গিঁটের তরল ঘুরবে চারপাশে। হাঁটলে কোমলাস্থিও পাবে পুষ্টি আর অক্সিজেন। ঘষাঘষি কম। পা, নিতম্ব, ধড়ের পেশি হবে সবল। পেশি মজবুত হলে পিঠব্যথা হবে কম। নিয়মিত হাঁটলে ওজন কমে। গিঁটে চাপ পড়ে কম। ব্যাক পেইন হলেও হাঁটুন।
৩. নিখরচা, যখন–তখন মন ভালো করে দেওয়া খেলার নাম হাঁটা। হেঁটে হেঁটে যত দূর পারেন সেটাই ভালো, অন্তত এই করোনাকালে। বিশেষ করে যাঁরা বয়স্ক, যাঁদের আছে ক্রনিক রোগ, তাঁদের জন্যও হাঁটা নিরাপদ ব্যায়াম। ধীরে হাঁটুন ঘণ্টায় অন্তত ২ মাইল। হাঁটলে আয়ু বাড়ে, এটা তো অনেকেই জানেন।
৪. দিনে অন্তত আধা ঘণ্টা হাঁটুন। স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে যাবে ৩০ শতাংশ। হাঁটলে শরীরে রক্ত চলাচলের বেগ বাড়ে। যেকোনো সময় হাঁটুন। এতেই লাভ। হৃৎস্পন্দনের হার বাড়বে। মজবুত হবে হার্ট। কমবে রক্তচাপ।
৫. দিনে ৫ মাইল হাঁটা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। অত দূর না হাঁটতে পারলেও যেটুকু হোক হাঁটলেই হবে। যাঁরা খুব ব্যস্ত বা বয়স্কসতাঁরা হাঁটুন অন্তত ৫০০ কদম।
৬. দৌড়াবেন হার্টের জন্য? দ্রুত হাঁটলে একই ফল। নিজেকে দাবড়ে চলা, হার্টকে দাবড়ায়। বাড়ে হৃদহার। রক্তচাপ। রক্তের কোলেস্টেরল আর সুগার কমে।
৭. ওজন কমাতে হলে ৪৫ মিনিট দিনে জোরে হাঁটুন। যুক্তিযোগ্য লক্ষ্য। তবে যাঁরা খুব ব্যস্ত, তাঁরা কঠোর ব্যায়াম কিছুক্ষণ করেন। যেমন ২০ সেকেন্ড দৌড়ে ১ মিনিট হাঁটা। রিকভারি হবে। দ্রুত হাঁটুন ৩০০ মিনিট সপ্তাহে।
৮. দ্রুত হাঁটাকে বলে কার্ডিও ব্যায়াম। প্রতি সপ্তাহে ১৫০ মিনিট হাঁটুন। দ্রুত হেঁটে হেঁটে বাড়বে হৃদ্হার। দরকার নেই বাড়তি যন্ত্রপাতির। শুধু চাই সুন্দর আরামের এক জোড়া জুতা। যত্রতত্র, যখন–তখন জোরে হাঁটা দিন। তাহলে হৃৎসুখ হৃৎকুশল।
৯. হাঁটুন মেজাজ চনমনে করতে। গাছ–পাতায় ঘেরা পথে ভালো। বারান্দায় টবের গাছের পাশ দিয়ে, নয়তো ঘরে নিজের আঙিনা থাকলে এর পাশ দিয়ে হাঁটুন। মনের বিষণ্নতা কমে যাবে। প্রকৃতির সান্নিধ্য আর হাঁটা—এই দুই বিষয় মনকে করে চনমনে।
১০. কমে স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি। কমে ইসট্রজেন মান। যাঁরা সক্রিয় নারী, তাঁদের স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি ৩০-৪০ শতাংশ কম। নারী বা পুরুষ যাঁরা দ্রুত হাঁটেন বা শরীরচর্চা করেন, তাঁদের স্তন আর কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি অনেক কমে যায়। প্রতিদিন আধা ঘণ্টা হাঁটলে কমে ক্যানসারের ঝুঁকি।