প্রধান শিক্ষকদের এক ধাপ নিচে বেতন নির্ধারণের দাবিতে অনড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। দাবি আদায়ে রাজধানীর জাতীয় শহীদ মিনারে তাদের আমরণ অনশন কর্মসূচি দ্বিতীয় দিনের (রোববার) মতো চলছে।
গতকাল শনিবার সকাল ১০টায় বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক মহাজোটের উদ্যাগে এ অনশন কর্মসূচি শুরু হয়। মহাজোটের অধীনে সহকারী শিক্ষকদের ১০টি সংগঠনের দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার শিক্ষকরা এক দফা দাবি আদায়ের এ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন। শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে পাটি, পত্রিকা বিছিয়ে পৌষের শীতের রাত পার করেছেন ‘মানুষ গড়ার কারিগর’ এসব শিক্ষকরা।
অনশনকারী শিক্ষকরা জানান, আগের বেতন স্কেলগুলোতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের এক ধাপ নিচে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকরা বেতন পেতেন। কিন্তু ২০১৫ সালের বেতন কাঠামোতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকদের সঙ্গে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের ব্যবধান তিন ধাপ। এখন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকরা ১৪তম গ্রেডে (মূল বেতন ১০ হাজার ২০০) বেতন পাচ্ছেন। আর প্রধান শিক্ষকরা পাচ্ছেন ১০তম গ্রেডে (মূল বেতন ১৬ হাজার টাকা)। সহকারী শিক্ষকরা এ বৈষম্য নিরসনে প্রধান শিক্ষকদের এক ধাপ নিচে ১১তম গ্রেডে (১২ হাজার ৫০০) বেতন চান।
অনশন কর্মসূচিতে সহকারী শিক্ষক সমাজ, সহকারী শিক্ষক সমিতি, সহকারী শিক্ষক ফাউন্ডেশন, সহকারী শিক্ষক সমাজ-২, সরকারি সহকারী শিক্ষক সমিতি, সহকারী শিক্ষক সমাজ-৩, সহকারী শিক্ষক সমিতি-২, সহকারী শিক্ষক ফোরাম, বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি, সহকারী শিক্ষক সমাজ, সহকারী শিক্ষক সমিতি, সহকারী শিক্ষক ফাউন্ডেশন, সহকারী শিক্ষক সমাজ-২, সরকারি সহকারী শিক্ষক সমিতি, সহকারী শিক্ষক সমাজ-৩, সহকারী শিক্ষক সমিতি-২, সহকারী শিক্ষক ফোরাম, বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির ব্যানারে শিক্ষকরা অংশ নিয়েছেন।
অনশনে অংশ নেয়া শিক্ষকরা আরও জানান, দাবি পূরণে এর আগে উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তা ও সংসদ সদস্যদের কাছে স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, জেলা প্রশাসক, বিভাগীয় পর্যায়ে উপ-পরিচালকদের (প্রাথমিক শিক্ষা) কাছে স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক, প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিবের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু দাবি পূরণে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের যোগাযোগ করা হয়েছে কী না জানতে চাইলে বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমাজের সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম সিদ্দিক রবিউল বলেন, শনিবার রাতে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তবে দাবি পূরণের কোনো আশ্বাস তারা দেননি। তাই আমাদের অনশন চলবে।
তবে সরকারের কোন পর্যায়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাতে রাজি হননি তিনি।