বাঘমামা ডাকছে আপনাকে, শুনছেন, সত্যিই ডাকছে, পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন যখন আপনার দেশে, আপনি কি না চিন্তা করছেন বিদেশ থেকে ঘুরে আসবেন। তবে এ বছর এমন চিন্তা পুরোপুরি বাদ দিন। হরিন, বানরের সঙ্গে মাতামাতি বাঘমামা দেখার শিহরন বিচের পানিতে সাতার কাটা, নাম না জানা কত পাখির সঙেÍ দেখা এমন প্যাকেজ নিয়ে আপনার জন্য অপেক্ষা করছে বাঘ মামার দেশ। সুন্দর বনে রয়েছে নদী আর খাল আরও রয়েছে সুন্দরী, গেওয়া, পশুর, গরান, কাকড়া, বাইন, হেতাল, টাইগার, ফার্ন, ছন, গোলপাতা সহ নানা প্রজাতির গাছপালা গুলো লতা অকিদ-শৈবাল। বন্য প্রাণির বৃহত্তম আবাস্থল সুন্দরবনে আছে বিভিন্ন প্রজাতির বন্য প্রাণি, আছে বিশ্বখ্যাত রয়েল ব্যঙ্গল টাইগার। চিতল ও মায়া হরিন, শুকর, লোনা পানির কুমির, অজগর, রোজগোখরা, কচ্ছপ, উডবিড়াল বিলুপ্তপ্রায় ইরাবতি, ডলপিন সহ নানা রকমের প্রাণি।
এগুলো দেখতে হলে আপনার পুরো ট্যুরটাকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে নিতে হবে। “হাড়বাড়িয়া ইকোট্যুরিজম কেন্দ্র ঃ সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের অধীন বন বিভাগের উদ্যোগে গড়ে তোলা বাড়বাড়িয়া ইকোট্যুরিজম কেন্দ্র। এক দিনের ভ্রমনে যারা সুন্দরবন দেখতে চান তাদের জন্য আদর্শ যায়গা হাড়বাড়িয়া, ছোট খালের উপর ঝুলন্ত সেতু। কাঠের এই সেতু দিয়ে আপনি বনের অনেকটা গভীর পর্যন্ত ঘুরে আসতে পারবেন।
কটকা বিচ কটকা বিচ ভ্রমন সুন্দরবন ভ্রমনের অন্যতম গুরুতপুর্ণ। এখানে ৪০ ফুট উচু ওয়াচ টাওয়ার থেকে বন দর্শনের অভিজ্ঞতা পাবেনআর বিচে সাতারের আগে গাইডের পরামর্শ নিবেন, কেননা তারাই বলতে পারবেন, কখন বিচে নামার আদর্শ সময়। এখানে কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটেছে তাই শতর্ক থাকাই ভালো। হিরন পয়েন্ট ঃ হিরন পয়েন্টে বনের মাঝে হাটতে হাটতে বানর, হরিন, গুই সাপ অথবা কুমিরের ঘুরে বেড়ানোর দৃশ্য দেখা যাবে। এখানে বাঘ দেখার একটাই সুযোগ আছে, তবে এ জন্য হয় আপনাকে খুব সৌভাগ্যবান অথবা দুর্ভাগ্যবান হতে হবে। যদি বাঘ দেখতে পারেন আপনার সৌভাগ্য কিন্তু যদি আপনাকে বাঘ দেখে ফেলে আপনার দুর্ভাগ্য। হিরন পয়েন্ট ছাড়াও টাইগার পয়েন্ট, বুড়ি গোয়ালিনি, হাড়বাড়িয়া প্রভিতি এলাকায় ভাগ্য সুসম্পন্ন হলে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের দেখা মিলে যেতে পারে। আরও বেশ কিছু পয়েন্ট আছে, এগুলোর মধ্যে দুবলর চর, মান্দার বাড়িয়া সৈকত অন্যতম। প্রতি বছর কার্ত্তিক মাসের শেষে বা অগ্রাহনের প্রথম দিকে রাজ পূর্ণিমার তিথিতে সুন্দর বনের দুব্লরচরে বসে ৩ দিন ব্যপি রাস মেলা।
হিন্দু ধর্মাবলম্বী লোকেরা পূর্ণিমার জোয়ারের নোনা পানির ¯œানে তাদের পাপ মোচন হয়ে মনস্কামনার পূর্ণ হবে এ বিশ্বাস নিয়েই এ রাস মেলায় যোগ দিলেও সময়ের ব্যবধানে এখন তা নানা ধর্ম ও বর্ণের লোকের মাঝে ছড়িয়ে পড়ছে। ল , টলার ও নৌকায় তার র্তীর্থযাত্রী ও দর্শনার্থীরা এসে সমাবেত হয়। দেশের প্রত্যান্ত বিভিন্ন এলাকা থেকে আসে অসংখ্যা বিদেশী পর্যাটকও। উৎসবের সময় কুটির শিল্পের মেলা সহ নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয় সেখানে। খরচপাতি ঃ সুরন্দরবনের প্যাকেচ গুলোতে জাহাজে ওঠার পর থেকে ৩ দিনের টুর শেষে আবার ঘাটে ফেরা পর্যন্ত ল ভাড়া ফুয়েল, খাবার, নাস্তা, প্রত্যেকের সরকারি পাস রেভিনিউ গাইড, গানম্যান বনে ঘোরার ছোট নৌকা সহ অন্যান্য সব খরচ ইনক্লুড থাকে। অবশ্যই পকেটে প্রচুর টাকা নিয়ে গেলেও সেখানে খরচ করার কোন যায়গা নেই। খাবারের মান ও জাহাজ ভেদে মাঝারি ধরনের একটি ট্যুরে সাধারনত খরচ পড়ে ৬ থেকে ১০ হাজার টাকা। ছাত্রছাত্রীদের জন্য সুখবর হল ৩৫ থেকে ৪০ জন হলে একটি লে ফ্লোরিং করে ৪/৫ হাজার টাকার মধ্যেও ৩ দিনেও সুন্দরবন ভ্রমন সম্ভব।