অনেকেই শখে কবুতর পালেন। দেশী কবুতর গ্রামের অনেক পরিবারের পুষ্টির উৎস। তবে কেউ কেউ শুধুই ওড়া প্রতিযোগিতাসহ শোভাবর্ধনের জন্য কবুতর পোষেন।
পৃথিবীতে প্রায় ১২০ জাতের কবুতর পাওয়া যায়। বাংলাদেশে প্রায় ২০ প্রকার কবুতর রয়েছে। এদেশের জলবায়ু এবং বিস্তীর্ণ শষ্যক্ষেত্র কবুতর পালনের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। অনেক আগে কবুতর দিয়ে খবর পৌঁছানোর পাশাপাশি খেলার পাখি হিসাবে ব্যবহার করা হতো। বর্তমানে এটা পরিবারের পুষ্টি সরবরাহ, সমৃদ্ধি, শোভাবর্ধনকারী এবং বিকল্প আয়ের উৎস হিসাবে ব্যবহৃত হচেছ। এদের সুষ্ঠু পরিচর্যা, রক্ষণাবেক্ষণ এবং ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সঠিকভাবে প্রতিপালন করে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখা যায়।
বেকারত্ব ঘুচাতে অনেকেই বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কবুতরের খামার স্থাপন করে আজ স্বাবলম্বী। এরকমই একজন পাবনা শহরের রাধানগর এলাকার বাসিন্দা সাইদ। তার সংগ্রহে বিদেশী কবুতর দেখে আকৃষ্ট হন রানা। তিনি বাসার ছাদেই গড়ে তোলেন কবুতরের খামার। রানার প্রতিবেশী ব্যবসায়ী শামীম আহমেদ জানান-প্রথমদিকে জানতাম সে শখ করে দুটো কবুতর পুষছে। পরে দেখি তারা এ থেকে আয়ও করছে।
রাজধানীর অনেক কবুতর ব্যবসায়ী এদের কাছে এসে প্রতিমাসে হাজার হাজার টাকার কবুতর কিনে নিয়ে যায়। সাইদ ও রানার কাছ থেকে জানা যায়- ২০০৬ সালে নব্বই হাজার টাকা নিয়ে কবুতর লালন-পালন শুরু করেন তারা। প্রথম দিকে কবুতরের অধিকাংশই চিকিৎসা ও অভিজ্ঞার অভাবে মারা যায়। সবমিলিয়ে ১৫ হাজার টাকার মতো কবুতর ছিল। ওটাই শেষ পর্যন্ত পুঁজি হয়ে দাঁড়ায়। তারা আরও জানান, পাবনায় বর্তমানে দুইশর মত ব্যবসায়ী কবুতরের খামার করেছেন। রানা সাঈদের খামারসহ এসব খামারে রয়েছে বিরল প্রজাতির কবুতর এল-স্টার, বোখারা, নরেশ কোকার, স্টেচার, ফিলিগেচার ব্লু, ও হেনা পোর্টার।
রানা-সাঈদের কাছে প্রথম অবস্থায় বিদেশী কবুতর ছিল ৩০-৩৫টি। এখন তাদের সংগ্রহের তালিকায় রয়েছে পুরনো আমলের চিঠি আদান প্রদানের বিউটি হোমার থেকে শুরু করে ব্লু-ম্যাকপাই, ভিয়েল সর্টফেস টামলার, স্যালো, শিল্ড ফিল্ডব্যাক, হলুদ দোভাস, হাইফিলার টামলার, ম্যাকপাই পোটার, পেমোরিয়ান পোটার, র্যান্ড কিং, দোভাস হাইফিলার, কমন্ন্যার, নান, ফিলিগিচার, জার্মান পোর্টার, ফিলব্যাক, সার্টিং, মুক্ষী, ন্যাকেট নিক, ডাউন ফেস, হোমার, বাগদাদ হোমার, মডেনা, লক্ষ্যাসহ নানা প্রজাতির কবুতর। এসব কবুতর সর্বনিম্ন দুশ থেকে ৩৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এরমধ্যে ম্যাগপাই পোর্টার প্রতি জোড়া ৩৫ থেকে ৪৫ হাজার টাকা। দোভাস হাই হিলার ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা ও স্যালো ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়।