শীতে ত্বকের যত্ন

শীতে ত্বকের যত্ন

শীত আসছে, এর প্রভাব পড়ছে ত্বকে। শীতের রক্ষতার প্রথম ছাপই পড়ে আমাদের ত্বকে। বাইরের বিবর্ণ প্রকৃতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে ত্বকও প্রাণহীন হতে শুরু করে। ঝরে পড়া শুকনা পাতার মতো মুখ, হাত-পা মলিন ও নির্জীব হবে শীতে। এসময় চামড়া ফেটে যেতে পারে, দেখা দিতে পারে র‌্যাশ, ব্রণের মতো সমস্যা। শীতে মুখের ত্বক অনেকটাই রুক্ষ হয়ে যায়। তাই এসময় প্রয়োজন পড়ে বাড়তি যত্নের। চলুন জেনে নেওয়া যাক ত্বক নরম, কোমল ও মসৃণ রাখার ঘরোয়া উপায় ।

শীতের দিন এলেই গোসলে গড়িমসি করবেন না। বরং শরীর সুস্থ রাখার জন্য নিয়মিত গোসলের অভ্যাস থাকতে হবে। গোসলের আগে পুরো শরীরে আমন্ড বা অলিভ অয়েল ব্যবহার করুন। বডি অয়েলের সঙ্গে গোলাপজল ভালো করে মিশিয়ে নিন। ময়েশ্চারাইজারটি পুরো শরীরে ভালো করে ম্যাসাজ করুন। আধাঘণ্টা পর গোসল করুন। তবে এই সময়ে গোসল করতে হবে হালকা গরম পানিতে। কারণ শীতের সময়ে ঠান্ডা পানিতে গোসল করলে তার আপনার ত্বক আরও রুক্ষ করে দেবে। তাই ঠান্ডা পানির বদলে গোসলের সময় ব্যবহার করুন হালকা গরম পানি। এতে ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখা সহজ হবে।

গোসলের পর ময়েশ্চারাইজার মেখে নিতে পারেন। শীতে ত্বক ভালো রাখার জন্য আপনাকে অবশ্যই প্রতিদিন ত্বকে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। সেজন্য আপনাকে দামী দামী প্রোডাক্ট কিনে আনতে হবে, এমন নয়। আপনি চাইলে ঘরে থাকা নারিকেল তেল ব্যবহার করতে পারেন। প্রতিদিন ত্বকে নারিকেল তেল ব্যবহার করলে ত্বকের রুক্ষতা দূর হয়, সেই সঙ্গে বাড়ে কোমলতাও। তবে সেই নারিকেল তেল যেন খাঁটি হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন।

এ সময় বাইরে বের হওয়ার আগে সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। রোদে ছাতা ব্যবহার করুন। আর্দ্র আবহাওয়া শরীর শুষ্ক করে দেয়। ত্বক লাবণ্য হারিয়ে নিষ্প্রাণ, খসখসে দেখায়। শীতের সময়েও বছরের অন্যান্য সময়ের মতোই পর্যাপ্ত পানি পানের অভ্যাস ধরে রাখতে হবে। শীত বলে একটু কম পানি খেয়ে দিন কাটিয়ে দেবেন না। এতে কিন্তু আপনিই বিপদে পড়বেন। পানি কম খেলে শরীরের ভেতরে ও বাইরে তার ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে। তাই এসময় পর্যাপ্ত পানি পানের দিকে নজর দিতে হবে। শরীরে পানির ঘাটতি হলে ত্বকও রুক্ষ হয়ে যায়। তাই শরীর ভেতর থেকে আর্দ্র রাখতে দিনে অন্তত তিন লিটার পানি পান করুন।

মুখের লাবণ্য বজায় রাখতে হলে রোজ সকালে উঠেই ত্বকের সঙ্গে মানানসই এবং কোমল ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। রাতে গোলাপজলের সঙ্গে কোনো একটি তেল মিশিয়ে মুখে ব্যবহার করতে পারেন।

বাইরে থেকে ফিরে রোজ কুসুম গরম পানিতে ভালোমতো পা ধুয়ে নিন। রাতে শোবার আগে উষ্ণ গরম পানিতে শ্যাম্পু, লেবুর রস ও এক চিমটি লবণ মিশিয়ে ২০ মিনিট পা ডুবিয়ে রাখুন। এতে পায়ের ক্লান্তি দূর হবে। আর্দ্রতা বজায় রাখতে ভেজা পায়ে বডি লোশন, ক্রিম বা তেল লাগিয়ে নিন।

নারকেল তেল শুষ্ক ত্বকের ওপর দারুণ কার্যকরী প্রভাব ফেলে। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ১ চামচ নারকেল তেল ভালো করে ত্বকের ওপর ম্যাসাজ করুন ৫ মিনিট। প্রতিদিন ব্যবহারে শীতেও ত্বক থাকবে নরম, তুলতুলে ও মোলায়েম।