১৯ বছরেও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দুঃখ মেটেনি। তাদের একের পর এক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে চলতে হচ্ছে, তবে নানা সমস্যার সমাধান মেলেনি। বিশেষত, আবাসন সংকট, ক্লাসরুমের অভাব, খেলার মাঠের সমস্যা এবং হাঁটাচলার জন্য পর্যাপ্ত জায়গার অভাব তাদের দৈনন্দিন জীবনে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০০৫ সালে জগন্নাথ কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হওয়া এই প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে ১৮ হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে, কিন্তু বাস্তবিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুবিধা থেকে তারা এখনও বঞ্চিত।
কেরানীগঞ্জে নতুন ক্যাম্পাস নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার, যেখানে ২০০ একর জমি অধিগ্রহণের কথা ছিল, তবে গত সাড়ে ৫ বছরে ওই জমির শতভাগ অধিগ্রহণ হয়নি। সেই সঙ্গে অন্যান্য উন্নয়ন কাজও চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। সম্প্রতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এখনো ১১ দশমিক ৪০ একর জমি অধিগ্রহণ বাকি রয়েছে, ফলে পুরো ক্যাম্পাসের সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি এবং নানা কাজের অগ্রগতি খুবই ধীর।
স্থানীয় প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করে দেখা গেছে, সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের কাজ অসম্পূর্ণ, এবং নির্মাণাধীন সুইমিংপুলের কাজ প্রায় শেষ হলেও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা যেমন একাডেমিক ভবন, আবাসন ব্যবস্থা এবং খেলার মাঠের কাজ শুরু হয়নি। প্রকল্পের মোট ব্যয় ছিল ১ হাজার ৯২০ কোটি ৯৪ লাখ টাকা, এবং এটি ২০২০ সালের মধ্যে সম্পূর্ণ হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু নানা কারণে প্রকল্পের মেয়াদ বারবার বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে, প্রকল্পের খরচের ৫৪ শতাংশ ব্যয় হয়েছে, কিন্তু প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি মাত্র ৬০ শতাংশে পৌঁছেছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে যথাযথ মনিটরিংয়ের অভাব, ঠিকাদারের দায়িত্বহীনতা এবং ডিজাইনে ত্রুটি ছিল। এসব কারণে শিক্ষার্থীরা সেনাবাহিনীর মাধ্যমে প্রকল্পটি শেষ করার দাবি জানিয়েছে। পরিকল্পনা কমিশনের প্রতিনিধি জানান, সেনাবাহিনীর মাধ্যমে কাজ বাস্তবায়ন করলে তা নির্ধারিত সময়ে এবং গুণগত মান বজায় রেখে শেষ করা সম্ভব হবে। সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রতিনিধিও এই প্রকল্পে অংশ নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন, তবে কাজের বিস্তারিত বাস্তবায়ন কিভাবে হবে তা নির্ধারণ করবে তারা।