বছর ঘুরে আশ্বাসের পরিমাণ বাড়লেও দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় বাস্তবায়ন হচ্ছে না কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন। এখনও নিষেধাজ্ঞা বহাল আছে জমি বিক্রি ও ভবন নির্মাণ কাজে । বন্ধ রয়েছে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে সমুদ্র ভাঙন প্রতিরক্ষা ও সৌন্দর্যবর্ধনের কাজও। এতে আকর্ষণ হারাচ্ছে পর্যটন কেন্দ্রটি। জেলা প্রশাসন বলছে, চলছে উন্নয়ন পরিকল্পনার দাপ্তরিক কার্যক্রম।
সাগর কন্যা কুয়াকাটা,প্রতিদিন হাজারো পর্যটক ভিড় জমান এখানে। উত্তাল সমুদ্র,খোলা আকাশ আর মুক্ত বাতাসে দূর করতে চান কর্মব্যস্ততার ক্লান্তি, মনের ব্যথা আর জড়তা।
তবে পর্যটকদের আকর্ষণে এখানে বিগত বছরগুলোতে নির্মাণ হয়নি কোন কিছুই। উল্টো যা ছিল তাও পরিচর্যার অভাবে আবেদন হারাচ্ছে।
কুয়াকাটায় বেড়াতে আসা এক পর্যটক বলেন, 'শুধু সমুদ্র দেখতে আসবো সেটা তো না। এখানে পর্যটনের জন্য আরও কিছু করা উচিৎ। তীব্র ভাঙ্গন থেকে রক্ষায় “গ্রিন সি ওয়ার্লড"প্রকল্পের মাধ্যমে দেড়শো কোটি টাকার কাজ ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু কোন কাজ শুরু না হওয়ায় ভেঙ্গে গেছে সমুদ্র পাড়ের বিস্তীর্ণ এলাকা। নারিকেল বাগানের কোন চিহ্নই এখন নেই সমুদ্রপাড়ে।
পূর্ব পাশের দীর্ঘ ঝাউ বাগানও নিশ্চিহ্নের পথে। কুয়াকাটা জাতীয় উদ্যানেও সংস্কার হয়নি দীর্ঘদিন । গত ১০ বছরেও নির্মাণ হয়নি কোন নতুন সড়ক। মূল বেড়িবাঁধের ২ কিলোমিটার বাদে পুরোটাই গ্রামের মেঠো পথ। বর্ষায় কাদা আর শীতে ধুলোবালি রাস্তাগুলোতে। উন্নয়ন কাজ থমকে থাকায় পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরাও পড়েছেন ভোগান্তিতে । পর্যটন সংশ্লিষ্ট এক ব্যবসায়ী বলেন, 'ওয়াচ টাওয়ার, ইকোপার্ক, গল্ফকোর্ট, স্টেডিয়াম, এমন বিভিন্ন রকম মাস্টারপ্লান আছে। শুধু শুনেই যাচ্ছি কিন্তু বাস্তবায়ন তো দেখি না।
তবে জন প্রতিনিধি থেকে শুরু করে প্রশাসন সবাই যে যখনই কুয়াকাটা আসছেন দিচ্ছেন উন্নয়নের নানা আশ্বাস। সব শেষ নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানও শুনিয়ে গেলেন এমন আশার বাণী। তিনি বলেন, 'এখানে হবে বিশাল আকারের অ্যাকুরিয়াম যেখানে মাছ এবং সামুদ্রিক অনেক প্রাণী থাকবে । অবশ্য জেলা প্রশাসক ড.মোঃ মাছুমুর রহমান বলছেন, দাপ্তরিক জটিলতায় পিছিয়ে পড়ছে উন্নয়ন কাজ।
তিনি বলেন, 'আমাদের টেন্ডার করতে হয়, ওয়ার্ক অর্ডার করতে হয়। এইযে প্রক্রিয়াটা সেটা করতে সময় লাগছে। তবে এই কর্মকাণ্ডগুলো কিন্তু চলমান আছে। ২০১০ সালে কুয়াকাটাকে পৌরসভায় রূপান্তর করে পরিকল্পিত নগরায়নের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয় জমি বিক্রি ও ভবন নির্মাণ। এতে থেমে গেছে ব্যক্তি উদ্যোগেরনানা কার্যক্রমও।